Ajker Patrika

খুদে বিজ্ঞানী ঝুটনের ‘বিমান’ উড়ছে আকাশে

বিশ্বম্ভরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ৩০
খুদে বিজ্ঞানী ঝুটনের ‘বিমান’ উড়ছে আকাশে

বিজ্ঞানের ছাত্র নয়। কোনো দিন বিজ্ঞান গবেষণাগারেও যাওয়া হয়নি তার। শুধু গুগল ও ইউটিউব দেখে মেধা খাটিয়ে বানিয়ে ফেলেছে মিনি বিমান। এই মিনি বিমান তৈরি করেছে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের প্যারিনগর গ্রামের গোপেন্দ্র চন্দ্র দাসের ছেলে ঝুটন সম্রাট যিশু। সে সরকারি দিগেন্দ্র বমন কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।

চার ফুট লম্বা ডানাবিশিষ্ট এই মিনি ‘বিমান’ তৈরিতে কর্কশিট দিয়ে বডি তৈরি করেছে। সঙ্গে ব্যবহার করেছে ট্রান্সমিটার, রিসিভার, ব্যাটারি এবং এটি কন্ট্রোল করার জন্য চারটি সারভো মোটর। একটি রিমোট দিয়ে আকাশে উড়ানো হচ্ছে বিমানটি। মিনি এই বিমানটি প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে আধা ঘণ্টা আকাশে উড়তে পারে।

১৮ বছরের এই তরুণ বিজ্ঞানী মিনি বিমান দিয়ে কৃষিজমিতে সার-বীজ-কীটনাশক প্রয়োগ করার স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যতে হাওরের কৃষিকাজের জন্য ও আকাশে চড়া যায় এমন ছোট যাত্রীবাহী বিমান তৈরির। ঝুটনের নিজের হাতে তৈরি বিমান আকাশে উড়ছে। তার এই সফলতার গল্প ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন এ বিমান দেখতে ঝুটনের বাড়িতে আসছে মানুষ।

ঝুটন সম্রাট যিশু বলে, ‘প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য পেলে আমি দেশেই তৈরি করতে পারব বিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও স্পিডবোট। আমার আশা সরকারি সহযোগিতা পেলে বড় গবেষণাগার গড়ে তোলার। সেখানে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের গবেষণা করার।’

বিজ্ঞানের ছাত্র না হয়ে কীভাবে ঝুটন মিনি বিমান তৈরি করেছে—এমন প্রশ্নে সে বলে, ‘আমার ইচ্ছাশক্তি ছিল, তাই মনের মাঝে একটা আত্মবিশ্বাস ছিল আমি পারব। শেষ পর্যন্ত আমি পেরেছি।’

ঝুটনের বাবা গোপেন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার তিন সন্তানের মধ্যে ঝুটন মেজ। প্রথম দিকে তার কর্মকাণ্ড দেখে আমরা বিরক্ত হতাম। এখন আনন্দ পাই। তবে এ কাজে আরও সাফল্য পেতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। তার তৈরি বিমান আকাশে উড়ছে। আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগে।’

সরকারি দিগেন্দ্র বমন কলেজের প্রভাষক লেখক মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘ঝুটনের উদ্ভাবনী শক্তি প্রশংসার দাবিদার। ঝুটনের পড়াশোনার বাইরে তার সৃজনশীল একটা মন ও মেধা রয়েছে, সেটা তরুণ সমাজের জন্য একটা বিশেষ বার্তা। কারণ বর্তমানে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় নষ্ট করে, কিন্তু সে সৃষ্টিশীল কাজে মনযোগ দিচ্ছে। তার এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনী কাজে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী ঝুটন সম্রাট যিশুর প্রযুক্তি উদ্ভাবনে উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত