Ajker Patrika

পৌর সড়ক বেহাল, ভোগান্তি

শরীফ হাসান, দোহার (ঢাকা)
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৯: ৫০
পৌর সড়ক বেহাল, ভোগান্তি

দোহার পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও এর সড়ক দেখলে মনে হয় না এটি প্রথম শ্রেণির। পৌরসভার মূল সড়ক ঠিক থাকলেও অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো হয়ে পড়েছে যান চলাচলের অনুপযোগী। বেহাল এ সড়কগুলো মেরামতের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, দোহার পৌরসভার পাশের দেয়াল ঘেঁষে পৌরসভার পেছন দিয়ে বাদুড়কান্দা পর্যন্ত রাস্তাটি এখনো ইটের সলিং রয়েছে। বর্ষার সময় এই রাস্তা মাঝের কিছু অংশে পানি জমে থাকে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ওই এলাকার বাসিন্দাদের।

পৌরসভা থেকে ৫০ মিটার দূরে খারাকান্দা সড়ক ও ড্রেন নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে সড়কটির কাজ ছয় মাসেও শেষ হয়নি। এতে করে ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। ড্রেনের কারণে ভাঙা সড়কে চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পৌরসভাকে দায়ী করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

খারাকান্দার স্থানীয় বাসিন্দা আফছানা আক্তার বলেন, ‘আমরা অনেক দিন এই সমস্যার মধ্যে রয়েছি। দীর্ঘদিন রাস্তাটির কাজ বন্ধ রয়েছে। ড্রেনের জন্য খুঁড়ে রাখা রাস্তায় আমার বাসার এক অংশ ভেঙে পড়ে গেছে। এখন আমার ঘর যদি পুরোটাই পড়ে যায়, তাহলে এর দায়ভার কে নেবে? আমার বাসা তখন কে ঠিক করে দেবে?’

সড়কটি দিয়ে সেতু পার হলেই আবেদ আলী মেম্বার বাড়ি থেকে কুটির বাড়ি পর্যন্ত বেহাল দশা। এ সড়কের কিছু অংশ নির্মাণ করে ঢাকা জেলা পরিষদ। তাই সড়কের এ অংশ সংস্কার করছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌরসভার ভেতরে হওয়ায় জেলা পরিষদও সংস্কার করছে না।

দোহার পৌরসভা প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, ‘এটি জেলা পরিষদ করেছে। তারা আমাদের না জানিয়ে সড়কটি করেছে। এটার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’

জয়পাড়া রতন চত্বর থেকে প্রেসক্লাব ভবন হয়ে সড়কটি আরসিসি ঢালাই হয়ে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকে। আর সেই বন্ধ থাকা সড়কে জয়পাড়া বাজারের হোটেল ও রেস্তোরাঁর ময়লা ফেলে তৈরি করছে ভাগাড়। ময়লার দুর্গন্ধে এই রাস্তায় চলাচল হয়ে পড়েছে প্রায় অসম্ভব।

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি আমার নিজ অর্থায়নে সড়কটি সংস্কার করছি। এতে আমার প্রায় ৩০-৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সড়কটি সংস্কার করা হচ্ছে আমার হাসপাতালের চাপ কমানোর জন্য। এই সড়কটি বন্ধ থাকার কারণে জনগণ হাসপাতালে ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতেন।’

এই চিকিৎসক বলেন, ‘সড়কটির পাশে থাকা আমাদের হাসপাতালে দেয়ালে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। যাতে রাতেও জনগণ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারে।’

জয়পাড়া লটাখোলা বাজারে ভেতরের সড়কও বেহাল। একটু বৃষ্টি নামলেই কাদা জমে যায় সড়কটিতে। করম আলীর মোড় থেকে লটাখোলা সেতু পর্যন্ত সড়কটিরও একই দশা।

আল আমিন হোসেন নামে এক যুবক বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে চার-পাঁচ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। অল্প বৃষ্টি হলেই সড়কে হাঁটুপানি জমে থাকে। আর এতে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া সড়কজুড়েই রয়েছে ভাঙা। এখান দিয়ে রিকশা বা অটোরিকশা নিয়ে যেতে দুর্ভোগ হয় আমাদের।’

অন্যদিকে, পৌরসভার সাবেক ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোনা এলাকার রাস্তাটি গত কয়েক বছর আগে ভেঙে গেলেও তা এখনো ঠিক করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। পৌরসভার ভেতরে থেকেও তাঁরা কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। ভাঙা রাস্তার কারণে তাঁদের অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হয়।

দোহার পৌরসভার মেয়র আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণের কারণে যে সড়কগুলো পড়ে আছে, সেগুলোর ড্রেন তৈরি হওয়ার পর কাজ শুরু করব আমরা।’

পৌরসভার পাশের সড়কটির ব্যাপারে মেয়র বলেন, ‘এই সড়কটি করতে দেরি হবে। আর আমরা মূল সড়কই ঠিক করতে পারতেছি না, বাইপাস সড়ক কীভাবে ঠিক করব? আমি চাইলেই তো সব সড়কের কাজ একসঙ্গে করতে পারব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত