Ajker Patrika

ঘরে ঘরে চোখ ওঠা রোগী সুযোগে বাড়ল ড্রপের দাম

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ 
ঘরে ঘরে চোখ ওঠা রোগী সুযোগে বাড়ল ড্রপের দাম

কিশোরগঞ্জে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা। এরই মধ্যে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে কনজাংটিভাইটিস (চোখের প্রদাহ) রোগী। সব বয়সের মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে  শতাধিক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।

এই সুযোগে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি চোখের ওষুধের (ড্রপ) কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। এই সংকট কাজে লাগিয়ে ফার্মেসি মালিকেরা রোগীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করছেন। আবার বাড়তি টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলেও ফার্মেসি মালিকেরা অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ও রোগীর স্বজনদের।

 রোগীরা বলছেন, ওষুধ কোম্পানিগুলো সুযোগ বুঝে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে এবং ফার্মেসি মালিকেরা রোগীদের পকেট কাটছেন।

জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয় বলছে, কোনো কোম্পানি বা ফার্মেসি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাড়তি দামে আই ড্রপ বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে কেউ এমআরপির চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলে সেটা অপরাধ। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, জেলার ১৩টি উপজেলায় চোখ ওঠা রোগী ব্যাপক হারে বাড়ছে। শিশু থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সংক্রমিতদের অধিকাংশই বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে, চোখ ওঠা রোগ নিয়ে রোগীদের মাঝে কিছুটা আতঙ্কও সৃষ্টি করছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা।

জেলা শহরের বাসিন্দা ইমন, ভুবন, মুরাদ, আনোয়ার, আফতাব, হান্নান, মানিকসহ অন্তত ২৫ ব্যক্তি জানান, আগের চেয়ে দ্বিগুণ দামে ড্রপ কিনতে হয়েছে তাঁদের। 
সূত্র জানায়, জেলা শহরে কোম্পানিভেদে চোখের ড্রপের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়তি দিয়ে কিনতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। এ ছাড়া উপজেলার অলিগলিতে থাকা ফার্মেসিতে দাম রাখা হচ্ছে আরও বেশি।

নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সজীব ঘোষ বলেন, হঠাৎ করেই কনজাংটিভাইটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণ ভাইরাসের সংক্রমণ। এটি অত্যন্ত সংক্রামক।

জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের ওষুধ পরিদর্শক তাহমিদ জামিল বলেন, ‘বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি ও ফার্মেসি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাড়তি দামে চোখের ড্রপ বিক্রি করলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্যবস্থা নেবে। এ ক্ষেত্রে আমরা কিছুই করতে পারি না।’

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন বণিক বলেন, ‘এমআরপির বেশি কোনোভাবেই রাখা যাবে না। যদি কেউ বেশি দামে বিক্রি করে তবে সেটা অপরাধ। আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখব এবং আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সংগঠন ‘ফারিয়া’-এর কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি সৈয়দ ইমন ভূইয়া বলেন, চোখ ওঠা রোগ কমে যাওয়ায় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি ড্রপ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছিল। কোম্পানি কৃত্রিম সংকট তৈরি করেনি। এটা প্রাকৃতিক সংকট। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত