Ajker Patrika

গরিবের ঘর ধনীর বাড়িতে

মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ২১: ৪৪
গরিবের ঘর ধনীর বাড়িতে

জালিয়াতি করে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দ সরকারি একটি ঘর হাতিয়ে নিয়েছেন এক ধনী ব্যক্তি। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ঘরের নকশা বদল করেছেন তিনি।

ওই ব্যক্তির নাম মো. সোহেল মিয়া। বাড়ি উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের নওয়াগাঁও গ্রামে। গ্রামবাসীর ভাষ্যমতে, সোহেলের চার একরের বেশি জমি রয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় (পিআইও) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর/কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে মোট ৩৬ জনকে সরকারি এই ঘর দেওয়া হয়। এর মধ্যে নওয়াগাঁও গ্রামের সোহেল মিয়া কারসাজি করে নিজের নামে একটি ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোহেল মিয়ার বাড়িতে আগে থেকেই একটি ভবন ছিল। তিনি প্রতারণা করে গৃহহীনের কোটায় নতুন ঘর বরাদ্দ নেন। পরে ওই ঘরের জন্য বরাদ্দ ইট, টিনসহ যাবতীয় মালামাল নিয়ে পুরোনো ঘরটির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলেন। অনিয়ম আড়াল করতে নতুন ঘরের নকশা পরিবর্তন করেছেন।

নাম প্রকাশ না করে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সোহেল মিয়া এর আগে দুটি টিউবওয়েল ও একটি হাজার ফুটের সাব-মার্সিবল মোটর নিয়েছেন। এর মধ্যে একটি ৯০ ফুটের ডাবল টিউবওয়েল, হাজার ফুটের আরেকটি টিউবওয়েল ও একটি হাজার ফুটের সাব-মার্সিবল পানির মোটর ব্যবস্থা নিয়েছেন।

কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ওই প্রকল্পের ঘর বরাদ্দের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। ৩৬ জন উপকারভোগীর তালিকায় সোহেল মিয়ার নাম রয়েছে ১১ নম্বরে। আর নওয়াগাঁও গ্রামে একমাত্র উপকারভোগী হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে।

নওয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ মিয়া বলেন, ‘চার একরের বেশি জমি রয়েছে সোহেলের। অনিয়ম করে গৃহহীনদের ঘর নিজের নামে নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রভাব কাটিয়ে সোহেল নিজের নামে জনস্বাস্থ্যের দেওয়া দুটি টিউবওয়েল ও একটি পানির মোটর নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোহলে মিয়া বলেন, ‘আমি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি আরও ৪-৫ বছর আগে। ওই ঘরের বরাদ্দ ছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এটা অনেক পুরোনো বিষয়। এই বিষয়ে সকলেই অবগত আছেন।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাকিবুল হাসান বলেন, ‘আমি এখানে আসার আগেই এই তালিকা চূড়ান্ত হয়। ফলে আমার কিছু করার ছিল না। আর তাঁর সম্পদ কী আছে তাও আমার জানা নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত