Ajker Patrika

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২১, ২২: ৩৪
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর সহড়াবাড়ি ঘাট এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। চার দিন ধরে সেখান থেকে বালু উত্তোলনসহ যমুনার চর কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকা।

এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হযরত আলীর বিরুদ্ধে। তবে তাঁর দাবি, তিনি স্থানের ইজারা নিয়ে বালু তুলছেন।

গতকাল শনিবার দুপুরে দেখা গেছে, যমুনা নদীর সহড়াবাড়ি ঘাট এলাকায় খননযন্ত্র বাসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। যমুনা নদীর সহড়াবাড়ি তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকায় বালু জমা করা হচ্ছে।

এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর যমুনা নদীর বৈশাখী ও রাধানগর চরে পৃথক অভিযান চালানো হয়। সে সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরকতউল্লাহ। বালু তোলার অভিযোগে সেখান থেকে ১৪ জন শ্রমিককে আটক করা হয়। পরে তাঁদের এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত চারটি বাল্কহেড জব্দ করা হয়। কিন্তু তারপরও থামছে না বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সহড়াবাড়ি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, হযরত আলীসহ এই এলাকায় ১০ থেকে ১২ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। এর আগে ২০১৯ সালে হযরত আলীর প্রায় কোটি টাকার বালু জব্দ করে প্রশাসন। এরপর কিছুদিন বালু তোলা বন্ধ ছিল। তবে সম্প্রতি বালু ব্যবসায়ীরা আবার সক্রিয় হয়। রাতের আঁধারে চর কেটে বালু-বাণিজ্য করতেন তাঁরা। কিন্তু চার দিন ধরে প্রকাশ্যে সহড়াবাড়ি ঘাট থেকেই বালু তোলা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী। বারবার ভাঙনের ফলে ওই ইউনিয়নের প্রায় ১২টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই গ্রামের লোকজন যমুনা নদীর বাঁধসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।

যমুনা নদীতে ১২ বছর আগে বৈশাখী চর ও রাধানগর চর জেগে ওঠে। সে সময় ওই চরের উঁচু স্থানে বসতঘর নির্মাণ করে প্রায় ২০০টি পরিবার। শুষ্ক মৌসুমে চরগুলোতে প্রায় সব ধরনের চাষাবাদ করা যায়। চরে চাষাবাদ করেই সেখানকার মানুষের জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রশাসনের অগোচরে খননযন্ত্র দিয়ে চর কেটে বালু-বাণিজ্য করে আসছেন। প্রশাসনের তৎপরতায় বালু-বাণিজ্য কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়। কিন্তু কিছুদিন পর আবারও বালু-বাণিজ্য শুরু হয়।

বৈশাখী চরের বাসিন্দা রহমত আলী বলেন, যমুনার বুকে চর জেগে ওঠার পর থেকে সেখানে বসতি গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু বালুখোরেরা চর কেটে বাণিজ্য করছেন। এ জন্য তাঁর বসতবাড়ি যমুনায় বিলীন হয়েছে। তাই বর্তমানে তিনি উদ্বাস্তু জীবনযাপন করছেন।

হযরত আলীর ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সাবেক সদস্য। বালু উত্তোলনের বিষয়ে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলা পরিষদ থেকে সহড়াবাড়ি নৌঘাট ইজারা বন্দোবস্ত নিয়েছেন তিনি। যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় নৌকা চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এ জন্য বালু তুলে নৌকা চলাচলের পথ পরিষ্কার করা হচ্ছে।

ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, এক সপ্তাহ আগেও ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে কারাদণ্ড ও ৪টি খননযন্ত্র জব্দ করা হয়। আবারও বালু তোলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। খোঁজ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত