Ajker Patrika

পায়রার ভাঙনে আতঙ্ক

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মে ২০২২, ১৯: ১৮
Thumbnail image

বরগুনার তালতলীতে তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় পায়রা নদীর বেড়িবাঁধে হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। বেড়িবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে সামান্য কিছু অংশ বাকি আছে। বেড়িবাঁধ সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকার মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুটি স্থানে ২০০ মিটার ধসে গেছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাঁধে ধস নামলেও এখন পর্যন্ত ওই অংশ মেরামতের কাজ শুরু হয়নি। ফলে গ্রামবাসী বড় ধরনের ভাঙনের আশঙ্কা করছেন। পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে বাঁধটির চার ভাগের তিন ভাগই ভেঙে গেছে। এরপর নদীর উত্তাল ঢেউয়ে বাকি অংশটুকু একটু একটু করে ভাঙছে। তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের বাঁধের দুটি অংশ ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে। ভাঙা স্থান দিয়ে গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। বাঁধটির পুরো অংশ ভাঙলে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা, অংকুজানপাড়া, সোবাহানপাড়াসহ কয়েকটি গ্রাম পায়রা নদীর পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। নষ্ট হতে পারে ফসলি জমি, প্রাণহানি ঘটতে পারে মানুষসহ সম্পদের। এ ছাড়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মাছের ঘের তলিয়ে যাবে। এমনকি পুরো ইউনিয়নও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। এতে শত শত পরিবার বিপাকে পড়বে।

গত বুধবার দুপুরে পায়রা নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, তেঁতুলবাড়িয়া এলাকা থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরত্বে বাঁধের ভাঙনস্থান। বিশাল বাঁধটির দুটি স্থানে প্রায় ২০০ মিটার ভেঙে জিও ব্যাগ পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ভাঙন বাঁধের দক্ষিণ দিকে ঢুকছে। জিও ব্যাগসহ ভেঙে গেছে বাঁধটি। পানির স্রোতে বাঁধ থেকে ধীরে ধীরে মাটি সরে যাচ্ছে। ভাঙনের স্থানগুলো বিশাল আকার ধারণ করছে। এলাকাবাসী বলছেন, পায়রা নদীর ঢেউ এসে নড়বড়ে ভাঙা বাঁধটিকে আঘাত হানছে।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, দুই বছর আগে এই এলাকার কয়েকটি স্থান ধসে যায়। পাউবো থেকে শুধু বালুর বস্তা ও অস্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। তবে ভাঙনের স্থানে স্থায়ী কোনো কাজ করা হয়নি। তাই দ্রুত বেড়িবাঁধটি ভেঙে গেছে। তাঁরা দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।

এলাকাবাসী ফকু মিয়া বলেন, ‘আমার ছয়টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমান বাড়িটি একেবারেই বাঁধের কোল ঘেঁষে। পরিবার নিয়ে কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। পানি এলে সবকিছু তছনছ হয়ে যাবে। এই বয়সে আর টানাটানি ভালো লাগে না।’

সাফিয়া বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘আমার ঘরে রান্না হয় নাই নদীর ভাঙনের জন্য। না খেয়ে রাস্তায় রাস্তায় হাঁটতেছি। চিন্তায় ঘুম আসে না। কোন সময়ে জানি নদীতে সবকিছু ভেসে যায়। বাচ্চাদের নিয়ে খুবই বিপদে আছি।’

এমাদুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘প্রায় তিন বিঘা জমি ছিল। ছিল বড় বাড়ি। ছয়বারের ভাঙনে সব নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে সব বিলীন হওয়ায় এখন ১ শতাংশ ফসলের জমিও নেই। কোনোমতে একটা ঘর বানিয়ে বসবাস করছি, ভয় পাচ্ছি এই ভাঙনে আবারও ঘরটি হারাই কি না।’

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই স্থানে আমাদের লোক পাঠানো হবে। দ্রুত বাঁধ সংস্কার করে দেওয়া হবে। স্থায়ীভাবে পাকা ব্লক দেওয়ার জন্য প্রজেক্ট দেওয়া আছে কি না, দেখে জানাতে পারব। যদি থাকে, তাহলে বাজেট পাওয়া গেলেই কাজ শুরু করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত