তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর)
সীমানাপ্রাচীর নেই। বাড়ির সামনে উন্মুক্ত খোলা মাঠ। দেয়াল থেকে খসে পড়ছে ইট-সুরকি। ২০০ বছরের বেশি পুরোনো বাড়ির ভঙ্গুর দেয়ালজুড়ে বেড়ে উঠছে লতাপাতা। এই ধ্বংসাবশেষ দেখতেই মানুষ আসছে। ইতিহাসের সাক্ষী ইটাকুমারী জমিদারবাড়িটি এখন শুধু ধ্বংসের শেষ পরিণতি দেখার অপেক্ষায়। বছরের পর বছর সংস্কার হয়নি বাড়িটি। অথচ এই জমিদারবাড়ি থেকেই সূচনা হয়েছিল ঐতিহাসিক প্রজা বিদ্রোহের।
১৭৮৩ সালের ঐতিহাসিক প্রজা বিদ্রোহ রংপুরের পীরগাছার ইটাকুমারী রাজা শিবচন্দ্র রায়ের এই বাড়ি থেকেই শুরু হয়েছিল। শিবচন্দ্র ও দেবী চৌধুরাণী ব্রিটিশবিরোধী প্রজা বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কৃষক প্রজাদের রক্ষা করতে গিয়ে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে তাঁরা প্রাণ হারান।
জমিদারবাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শিবচন্দ্র রায়ের পিতা জমিদার রঘুনাথ চন্দ্র। বাড়িটি ছিল তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার দ্বিতীয় নবদ্বীপ। শিক্ষা-সংস্কৃতির বাতিঘর হিসেবে ইটাকুমারীর খ্যাতি গোটা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। স্মৃতিরক্ষার্থে শিবচন্দ্র রায়ের নামে জমিদারবাড়ির পাশেই ইটাকুমারী শিবচন্দ্র রায় মহাবিদ্যালয় ও শিবচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে আসেনি বলে জানান স্থানীয় লোকজন।
তবে বিভিন্ন লেখকের সাহিত্যে বাড়িটির ইতিহাস কিছুটা হলেও জানা যায়, ব্রিটিশ ইজারাদার অত্যাচারী দেবী সিং অন্যায়ভাবে প্রজাদের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করেন। তখন রাজা শিবচন্দ্র রায় দেবী সিংয়ের কাছে অতিরিক্ত কর তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু দেবী সিং পাল্টা শিবচন্দ্র রায়কে রংপুরের লালকুঠিতে বন্দী করে রাখেন। পরে জমিদার রানি মুক্তিপণের বিনিময়ে শিবচন্দ্র রায়কে মুক্ত করে আনেন। রাজা শিবচন্দ্র রায় ফিরে এসে সব জমিদারকে রাজ্যসভায় আমন্ত্রণ করেন। ফতেহপুর পরগনার (ইটাকুমারী) জমিদারবাড়িতে কাকিনা, মধুপুর, ভাইয়ের হাট, মন্থনাসহ বেশ কিছু রাজ্যের জমিদারেরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
রাজা শিবচন্দ্র রায় এবং পীরগাছার মন্থনার জমিদার দেবী চৌধুরাণী (বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসের দেবী চৌধুরাণী) সম্মিলিতভাবে পীরগাছার চণ্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইংরেজদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হন। যুদ্ধে পীরগাছার ফকিরটারীর ফকির সন্ন্যাসীরাও শিবচন্দ্র রায়ের পক্ষে যোগ দেন। যুদ্ধে শিবচন্দ্র রায় এবং দেবী চৌধুরাণী প্রাণ হারান। রাজা শিবচন্দ্র রায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে দিনাজপুরের কৃষক নেতা নূরলদীন (সৈয়দ শামসুল হকের কবিতার নূরলদীন) প্রজা বিদ্রোহে ঝাঁপিয়ে পড়েন। লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনিও শহীদ হন।
ইটাকুমারীর বাসিন্দা সৈয়দ আলী বলেন, ‘ইতিহাস জানতে প্রাচীন এই জমিদারবাড়ি দেখতে প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে এখানে পর্যটকেরা ভিড় করেন। কিন্তু আগামী প্রজন্মের কাছে ইটাকুমারীর ইতিহাস তুলে ধরতে সরকারি কোনো উদ্যোগ নেই। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জমিদারবাড়িটি এমনি এমনিই হয়তো ধুলোর সঙ্গে মিশে যাবে একদিন। আমরা চাই এটি সংস্কার করা হোক।’
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, ‘প্রাচীন ওই জমিদারবাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে ইতিমধ্যেই আমরা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। এখন তারা ব্যবস্থা নিলে আমরাও এগিয়ে আসব।’
সীমানাপ্রাচীর নেই। বাড়ির সামনে উন্মুক্ত খোলা মাঠ। দেয়াল থেকে খসে পড়ছে ইট-সুরকি। ২০০ বছরের বেশি পুরোনো বাড়ির ভঙ্গুর দেয়ালজুড়ে বেড়ে উঠছে লতাপাতা। এই ধ্বংসাবশেষ দেখতেই মানুষ আসছে। ইতিহাসের সাক্ষী ইটাকুমারী জমিদারবাড়িটি এখন শুধু ধ্বংসের শেষ পরিণতি দেখার অপেক্ষায়। বছরের পর বছর সংস্কার হয়নি বাড়িটি। অথচ এই জমিদারবাড়ি থেকেই সূচনা হয়েছিল ঐতিহাসিক প্রজা বিদ্রোহের।
১৭৮৩ সালের ঐতিহাসিক প্রজা বিদ্রোহ রংপুরের পীরগাছার ইটাকুমারী রাজা শিবচন্দ্র রায়ের এই বাড়ি থেকেই শুরু হয়েছিল। শিবচন্দ্র ও দেবী চৌধুরাণী ব্রিটিশবিরোধী প্রজা বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কৃষক প্রজাদের রক্ষা করতে গিয়ে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে তাঁরা প্রাণ হারান।
জমিদারবাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শিবচন্দ্র রায়ের পিতা জমিদার রঘুনাথ চন্দ্র। বাড়িটি ছিল তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার দ্বিতীয় নবদ্বীপ। শিক্ষা-সংস্কৃতির বাতিঘর হিসেবে ইটাকুমারীর খ্যাতি গোটা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। স্মৃতিরক্ষার্থে শিবচন্দ্র রায়ের নামে জমিদারবাড়ির পাশেই ইটাকুমারী শিবচন্দ্র রায় মহাবিদ্যালয় ও শিবচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে আসেনি বলে জানান স্থানীয় লোকজন।
তবে বিভিন্ন লেখকের সাহিত্যে বাড়িটির ইতিহাস কিছুটা হলেও জানা যায়, ব্রিটিশ ইজারাদার অত্যাচারী দেবী সিং অন্যায়ভাবে প্রজাদের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করেন। তখন রাজা শিবচন্দ্র রায় দেবী সিংয়ের কাছে অতিরিক্ত কর তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু দেবী সিং পাল্টা শিবচন্দ্র রায়কে রংপুরের লালকুঠিতে বন্দী করে রাখেন। পরে জমিদার রানি মুক্তিপণের বিনিময়ে শিবচন্দ্র রায়কে মুক্ত করে আনেন। রাজা শিবচন্দ্র রায় ফিরে এসে সব জমিদারকে রাজ্যসভায় আমন্ত্রণ করেন। ফতেহপুর পরগনার (ইটাকুমারী) জমিদারবাড়িতে কাকিনা, মধুপুর, ভাইয়ের হাট, মন্থনাসহ বেশ কিছু রাজ্যের জমিদারেরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
রাজা শিবচন্দ্র রায় এবং পীরগাছার মন্থনার জমিদার দেবী চৌধুরাণী (বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসের দেবী চৌধুরাণী) সম্মিলিতভাবে পীরগাছার চণ্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইংরেজদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হন। যুদ্ধে পীরগাছার ফকিরটারীর ফকির সন্ন্যাসীরাও শিবচন্দ্র রায়ের পক্ষে যোগ দেন। যুদ্ধে শিবচন্দ্র রায় এবং দেবী চৌধুরাণী প্রাণ হারান। রাজা শিবচন্দ্র রায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে দিনাজপুরের কৃষক নেতা নূরলদীন (সৈয়দ শামসুল হকের কবিতার নূরলদীন) প্রজা বিদ্রোহে ঝাঁপিয়ে পড়েন। লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনিও শহীদ হন।
ইটাকুমারীর বাসিন্দা সৈয়দ আলী বলেন, ‘ইতিহাস জানতে প্রাচীন এই জমিদারবাড়ি দেখতে প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে এখানে পর্যটকেরা ভিড় করেন। কিন্তু আগামী প্রজন্মের কাছে ইটাকুমারীর ইতিহাস তুলে ধরতে সরকারি কোনো উদ্যোগ নেই। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জমিদারবাড়িটি এমনি এমনিই হয়তো ধুলোর সঙ্গে মিশে যাবে একদিন। আমরা চাই এটি সংস্কার করা হোক।’
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, ‘প্রাচীন ওই জমিদারবাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে ইতিমধ্যেই আমরা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। এখন তারা ব্যবস্থা নিলে আমরাও এগিয়ে আসব।’
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৮ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৮ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৮ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫