Ajker Patrika

‘শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে ঠিকই ফিরলেন, তবে লাশ হয়ে’

বরগুনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ১৩
‘শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে ঠিকই ফিরলেন, তবে লাশ হয়ে’

অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া স্কুলশিক্ষক মনিকা রানী হালদারের মরদেহ বরগুনায় নিয়ে আসা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মরদেহ প্রথমেই নেওয়া হয় বরগুনা পৌর শহরের গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। ওই স্কুলেই শিক্ষকতা করতেন মনিকা রানী। প্রিয় শিক্ষকের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী।

সেখানে গীতা পাঠ এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। পরে তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়ি ফুলঝুরিতে নেওয়া হয়।

মনিকা রানী হালদারের স্বামী বঙ্কিম চন্দ্র মজুমদার বরগুনা সদরের ফুলঝুরি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনিও একই লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মনিকা রানীর ছেলে বিকাশ জানান, অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাঁর মাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে ২৫ দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর তাঁর মৃত্যু হয়।

গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মেডিকেল চেকআপের জন্য সহকারী শিক্ষক মনিকা রানী হালদার গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ছুটি নিয়ে ঢাকায় যান। সেখানে চিকিৎসা শেষে তারা স্বামী-স্ত্রী অভিযান-১০ লঞ্চে ফিরছিলেন। ২৪ ডিসেম্বর তাঁর বিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার কথা ছিল। বিদ্যালয়ে তিনি ঠিকই ফিরলেন, তবে লাশ হয়ে। তাঁর মৃত্যুতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই শোকাহত।’

গগন মেমোরিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থী তপু, তানভীর ও জয় বলে, ‘ম্যাডাম আমাদের মায়ের মতো স্নেহ করতেন। আমরা তাঁর কাছ থেকে মায়ের আচরণের মধ্য দিয়ে জ্ঞানার্জন করেছি। তাঁর মৃত্যুতে মর্মাহত ও ব্যথিত আমরা।’

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন জানান, মনিকা রানীর শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। প্রথম থেকেই তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের মরদেহ এসেছে বরগুনায়। এর মধ্যে ২৪ জনের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাদের গণকবরে দাফন করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করে তাঁদের স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। এখন পর্যন্ত নিহতদের পরিবারকে দাফন-কাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে সহায়তা করা হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী অতিক্রমকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের মরদেহ এসেছে বরগুনায়।

এ ঘটনায় বরগুনা, ঝালকাঠি ও ঢাকায় তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় লঞ্চের মালিকসহ পাঁচজন কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত