Ajker Patrika

গোমতী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

মো. জহিরুল হক বাবু, বুড়িচং
আপডেট : ১২ মে ২০২২, ১৩: ৪৮
গোমতী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোমতী নদী তীরের শত বছরের পুরোনো বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় একাধিক বুলডোজার নিয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনব্যাপী উচ্ছেদ অভিযানে ৫৮টি অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

উচ্ছেদ অভিযানের শুরুতে ব্যবসায়ীরা বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও প্রশাসন ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালায়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে মুসলিমা। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়ালিউজ্জামান, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজালাল সেলিম, ইমরান হোসেন, সহকারী পরিচালক আরিপুর রহমান, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন এবং শাখা কর্মকর্তা আল মামুনুর রশীদ ভূঁইয়াসহ জেলা ও উপজেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে মুসলিমা বলেন, গতকাল কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর বাজারে গোমতী নদীর তীরের ৫৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। তিনি আরও বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে মাইকিং ও ব্যবসায়ীদের নোটিশ দেওয়াও হয়েছে।

এদিকে, উচ্ছেদের খবর শুনে ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে নিজ উদ্যোগে মালামাল সরিয়ে নিতে থাকেন।

বাজারের মুদিমালের ব্যবসায়ী অদুদ মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এই বাজারে ব্যবসা করে আসছি। আমার বাবাও এই বাজারে ব্যবসা করতেন। হঠাৎ করে দোকান ভেঙে ফেলায় আমরা হতবাক হয়েছি।’

ফার্মেসির মালিক আলেক মিয়া বলেন, ‘কোনো প্রকার পুনর্বাসন ছাড়া শত বছরের এই বাজারটি উচ্ছেদ করা উচিত হয়নি।’

হোটেল ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েক লক্ষটাকা ব্যয় করে আমরা দোকানঘর নির্মাণ করেছি। হঠাৎ করে বুলডোজার দিয়ে আমাদের দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমরা বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।’

সেলুন মালিক চন্দ্র শীল বলেন, ‘এই বাজারে আমার কয়েকজন পূর্ব পুরুষের সেলুন ছিল। আমিও এক যুগের বেশি সময় ধরে এই বাজারে চুল, দাঁড়ি কাটছি। আমার সেলুন ভেঙে দিয়েছে। এখন পরিবার নিয়ে চলতে আমার কষ্ট হবে।’

মোবাইলের দোকানের মালিক আওলাদ হোসেন বলেন, ‘পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলাম আমি। এই দোকানের আয় দিয়ে আমার সংসার চলতো, এখন আমি পথে বসে গেলাম।’

স্থানীয় সমাজসেবক মনির হোসেন জয় বলেন, গোমতীর চরে আবাদকৃত শতাধিক কৃষক তাঁদের উৎপাদিত শাক-সবজি এই বাজারে বিক্রি করতেন। বাজারটি ভেঙে ফেলায় শাক-সবজি নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে স্থানীয় কৃষকদের।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হালিমা খাতুন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। তাই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থেকে স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত