Ajker Patrika

সার্কাসের শিল্পীদের মতোই জীবন যাপন করেছি

খায়রুল বাসার নির্ঝর
সার্কাসের শিল্পীদের মতোই জীবন যাপন করেছি

মাহমুদ দিদারের সঙ্গে নাটকে কাজ করেছেন। কিন্তু সিনেমায় তিনি একেবারেই নতুন। কাজটি করার আগে কি আপনার কোনো দ্বিধা ছিল?

মোটেই না। নতুন নির্মাতা বা শিল্পীদের কাজে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, আগ্রহী থাকি। দিদারের প্রথম টিভি ফিকশন কিংবা দ্বিতীয়, তৃতীয়, সব ফিকশনের সঙ্গেই আমি ছিলাম। যখন ফিকশন নিয়ে প্রথম আমার কাছে এসেছিল, তখনই খেয়াল করেছি, তার আইডিয়াগুলো অসাধারণ। আমি কৃতজ্ঞ যে দিদার যখন সিনেমা তৈরির কথা ভাবল, আমার কথা ভেবেছে। ও মনে করেছে, আমাকে তার টিম মেম্বার হিসেবে প্রয়োজন। ‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমায় সে অসাধারণ একটা চরিত্র আমার জন্য রেখেছিল।

বিউটিকে সিনেমা হল পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় পাঁচ বছর লেগে গেল…
জানেন তো, বাংলাদেশে সিনেমা তৈরি করা (কতটা চ্যালেঞ্জের), তা-ও সেটা এখনকার সিনারিও না। বেশ খানিকটা আগের সময়। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে, নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে আমরা সিনেমাটি করেছি।

সিনেমার ট্রেলারে, গানে নানাভাবে আমরা বিউটিকে দেখলাম। এ চরিত্রের কোন বিষয়টি আপনার সবচেয়ে ভালো লেগেছিল?

বিউটির যে গ্ল্যামার বা অন্যান্য দিক, এসব কিন্তু আমাকে আকর্ষণ করেনি। আমাকে আকর্ষণ করেছে গোটা চরিত্রটি, বিউটির ভেতরের দিকটা। আমার ভেতরের শিল্পীমন বারবার প্ররোচিত করেছে কাজটি করতে।

সার্কাসের বিষয়টি তুলে আনতে তো অনেক ঝুঁকি নিতে হয়েছে আপনাকে?

সিনেমার আর্টিস্ট বলুন আর সার্কাসের আর্টিস্ট বলুন, নিরাপত্তার বিষয়গুলো খুব একটা থাকে না আমাদের। ‘বিউটি সার্কাস’-এর শুটিংয়ে কোনো বডি ডাবল ইউজ করিনি। শুটিংয়ে সার্কাসের ট্রুপ ছিল। তারা অসম্ভব সাপোর্ট করেছে। তাদের কাছ থেকে ইনস্ট্যান্ট শিখে শিখে করেছি। আর দিদারের একটা বিষয় আছে, দিদার ভেতরের আগুনটা জ্বালিয়ে দেয়। শিল্পীর ভেতর তো শিল্পের খিদেটা থাকেই। ফলে আমরা ভালোভাবে উতরে গেছি। শুধু আমি যে কষ্ট করেছি, তা নয়। ফেরদৌস ভাই, সুমন, রাকায়েত ভাই, তৌকীর ভাই—আমরা সবাই একটা ভালো কাজকে সমর্থন করার জন্য প্রাণপণে লড়েছি।

প্রস্তুতি কেমন ছিল?

প্রস্তুতি বলতে মানসিক প্রস্তুতিটাই। ডিরেক্টর বলে দিয়েছে মানে করতে হবে। শুধু আমি নই, এখানে যেকোনো আর্টিস্ট থাকলেই সেটা করত। এই কাজগুলো করার সুযোগ তো আমি সচরাচর পাব না। হয়তো আমার কাছে এ রকম স্ক্রিপ্ট আর কখনো আসবে না। দড়ির ওপর দিয়ে হাঁটা, রোলার স্কেটিং, চোখ বন্ধ করে নাইফ থ্রোয়িং—এসব আমি করেছি। অবশ্যই রিস্ক ছিল। দিদার একবার আমাকে সিক্সটি ফিট ওপরে তুলে দিয়েছিল। সত্যিকারের সার্কাসের তাঁবু ফেলা হয়েছিল। সব মিলিয়ে বিউটি সার্কাসের শুটিং একটা যুদ্ধের মতোই ছিল।

বাস্তবে কখনো সার্কাস দেখার সুযোগ হয়েছে আপনার?

আমি একটা রাশিয়ান সার্কাস দেখেছিলাম বাবার সঙ্গে। কলাবাগান মাঠে হয়েছিল। খুবই ছোটবেলায়। তেমন কিছুই বুঝিনি তখন। বাঘটাঘও ছিল বোধ হয়। এই সিনেমা করতে গিয়ে আমরা কিন্তু সার্কাসের শিল্পীদের মতোই জীবন যাপন করেছি। ওদের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। ওদের কাছে খেলা শিখেছি। ওরাই আমার কাছের বন্ধু হয়ে উঠেছিল।

এ সিনেমায় অনেক বন্য প্রাণীর ব্যবহার হয়েছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন নিয়ে তো একধরনের আলোচনা চলছে। শুটিংয়ের সময় এ বিষয়গুলো কি মাথায় ছিল?

যেহেতু এটা একটা সার্কাস দলের গল্প, গল্প অথেনটিক করার জন্যই আমাদের পশুপাখি ব্যবহার করতে হয়েছে। সব নিয়মকানুন মেনে, নিরাপত্তার ব্যাপারটি মাথায় রেখেই কাজ করা হয়েছে। আমি নিজে একজন অ্যানিমেল লাভার, শুটিংয়ে আমার বাড়তি একটা কাজ ছিল পশুপাখিদের দেখভাল ও 
তদারকি করা। আমি নিজে রাত জেগে সেগুলো দেখতাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত