Ajker Patrika

বিল নিয়ে ভুতুড়ে কাণ্ড শোধের পরও বকেয়া

তানজিল হাসান, মুন্সিগঞ্জ
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ০৮: ৪৯
Thumbnail image

মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভুতুড়ে বিলের ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহক। পরিশোধিত বিলকে বকেয়া ধরে আবার পরিশোধের জন্য বিল বানিয়ে গ্রাহকদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন হয়রানি হলেও মিলছে না কোনো সমাধান।

জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলের বিষয়টি নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহক। সচেতন গ্রাহকেরা ভুতুড়ে বিলের কপি নিয়ে নিজেদের কাজকর্ম বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ বিলের অফিসে দৌড়াচ্ছেন। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে নিজের কর্মঘণ্টা নষ্ট করে বিল ঠিক করে নিতে হচ্ছে।

খালইস্টের বাসিন্দা ব্যবসায়ী নাজমুল হাসান বলেন, ‘মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অনেককেই ভুতুড়ে বিল দেয়। আমাদেরও একবার পরিশোধিত বিল পুনরায় বকেয়া ধরে বিল দিয়েছিল। ২০২১ সালে সেপ্টেম্বর মাসের বিলের সঙ্গে পরিশোধিত আগস্টের বিল যোগ করে জরিমানাসহ করে দিয়েছিল। প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত চার্জ করেছিল। আমরা বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে অভিযোগ করে বিল ঠিক করে নিয়ে আসি। সেই বিলের কপি এখনো আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।’

এই ভুতুড়ে বিলের সমস্যার সমাধান তো হয়নি। বরং দিন দিন এটা আরও বাড়ছে। গ্রাহকদের ভোগান্তি দেখার কেউ নেই। শত শত গ্রাহককে প্রতিদিন বিদ্যুৎ অফিসে লাইন ধরে বিল ঠিক করে নিতে হচ্ছে।

মানিকপুরের গ্রাহক আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার বাড়িসহ মানিকপুরের ছয়টি বাড়িতে পরিশোধিত বিলকে বকেয়া ধরে বিল করা হয়েছি। গত এপ্রিল মাসের বিলের সঙ্গে মার্চের পরিশোধিত বিলও ধরে দেওয়া হয়েছিল। পরে গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বিল ঠিক করে নিয়ে আসে। এটা এমন এক অবস্থা, যা দেখে মনে হচ্ছে ডিজিটালের বিড়ম্বনা।’

মুক্তারপুরের বাসিন্দা সাংবাদিক সুমন ইসলাম বলেন, ‘আমার বিদ্যুৎ বিলে দুই ধরনের ভুল করেছে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। আমাকে গত মাসের পরিশোধিত বিলকে বকেয়া ধরে নতুন করে বিল দিয়েছে। পাশাপাশি গত কয়েক মাসের ব্যবহৃত ইউনিটের তুলনায় এবার অনেক গুণ বেশি ইউনিট ধরে দিয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। এতে করে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।’

মানিকপুরের বাসিন্দা অনিক বলেন, ‘আমাদের এখানে ১৩টি আবাসিক গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলে গত মাসের পরিশোধিত বিল বকেয়া হিসেবে ধরে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এতে করে সবার বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুণ হয়ে গেছে। গতকাল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বিলগুলো ঠিক করে এনেছি। গত সোমবার আমার মতো প্রায় ৫০ জন ভুক্তভোগী একই কারণে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেছে বিল ঠিক করার জন্য।’

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মোবারকউল্ল্যাহ বলেন, সফটওয়্যারে সমস্যার কারণে এটা হয়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের লোকজনদের ত্রুটিও আছে। দেখা গেছে, গ্রাহক ব্যাংকে গিয়ে বিল পরিশোধ করেছে। কিন্তু আমাদের স্টাফ ব্যাংক থেকে সে বিল আনতে বিলম্ব করেছে। কিছু লোকজন ২-১ মাসের বকেয়া রাখে। দেখা যায়, বিলম্ব করে বিল পরিশোধ করলে তখন সফটওয়্যারে সেটি পরিশোধ হয় না। এটাকে আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। তা ছাড়া জনবলের সংকট আছে। এর জন্য আমরা বিব্রত ও লজ্জিত। চেষ্টা করি বিল পরিশোধ করার পর সঙ্গে সঙ্গে সফটওয়্যারেও পরিশোধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত