Ajker Patrika

ভর্তিতে ঘুরতে হয় ৮ দপ্তর, লাগে ১২ জনের স্বাক্ষর

আরাফাত রহমান অভি, শেকৃবি
ভর্তিতে ঘুরতে হয় ৮ দপ্তর,  লাগে ১২ জনের স্বাক্ষর

তীব্র রোদে কাগজপত্র হাতে বিভিন্ন দপ্তরে ছোটাছুটি করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী আক্তার হোসেন। গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে তিনি ভর্তি হতে এলেও কার্যক্রম শেষ হতে বিকেল ৫টা বেজে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরে ভর্তি ফরম পূরণের জন্য তাঁকে বিভিন্ন ভবনের ৮টি দপ্তরে ঘুরতে হয়েছে। নিতে হয়েছে ১২ জনের স্বাক্ষর।

শুধু আক্তার নন, স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে সব শিক্ষার্থীকেই এভাবে আটটি দপ্তরে ছোটাছুটি করতে হচ্ছে। এতে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সময়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভর্তি হওয়ার জন্য শুরুতে নির্দিষ্ট বিভাগে গিয়ে একটি ফরম সংগ্রহ করতে হয়। সেখানে বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিয়ে যেতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে। সেখান থেকে স্বাক্ষর নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের স্বাক্ষর নিতে হয়। প্রক্টরের অফিসে আবাসিক হল নির্ধারণ করা হয়। এরপর ওই হলের ফি পরিশোধ করে প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিয়ে ফরম ডিন অফিসে জমা দিতে হয়।

এরপর পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। কোন শিক্ষার্থী কোন বিভাগে সেটি শনাক্ত করে দীর্ঘ সময় ধরে আগের নেওয়া স্বাক্ষর ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। তাঁদের যাচাই-বাছাই শেষে একে একে ডেপুটি রেজিস্ট্রার, রেজিস্ট্রার ও ডিন কার্যালয়ের স্বাক্ষর নিতে হয়।

এরপর কোষাধ্যক্ষ ভবন থেকে তিন কপির এক রসিদে শিক্ষার্থীর বৃত্তান্ত লিখে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে ভর্তি ফি জমা দিতে হয়। সেই রসিদ নিয়ে আবার ডিনের স্বাক্ষরের জন্য তাঁর কার্যালয়ে যেতে হয়। ডিনের স্বাক্ষর নিয়ে আবার ফরম সংশ্লিষ্ট বিভাগে আনতে হয়। সেখানে চার কপির একটি বিষয়ভিত্তিক ফরম পূরণের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়।

এ ছাড়া নির্দিষ্ট দপ্তরে নিয়োজিত কর্মকর্তারা যদি উপস্থিত না থাকেন বা ব্যস্ত থাকেন তাহলে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হয়। এর মধ্যে কোনো দপ্তরে কেউ অনুপস্থিত থাকলে ভোগান্তির মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়।

আক্তার হোসেন বলেন, ‘বিকেল ৫টার পর ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যারা একটু দেরিতে ভর্তি হতে এসেছেন তারা একদিনে পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেননি। ফলে পরের দিনও তাদের ভোগান্তি পোহাতে হবে।’

এসব ভোগান্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী ফয়সাল হাবিব বলেন, ‘স্নাতকের ভর্তির মতো একটি বড় সভা কক্ষে সব দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে স্বাক্ষর প্রদান ও ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করলে শিক্ষার্থীদের এত ভোগান্তি পোহাতে হতো না।’

জানতে চাইলে স্নাতকোত্তরের ডিন অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বাজেট কমানো হয়েছে। খরচ বিবেচনায় আগের বছরগুলোর মতো ভর্তি সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের কর্মকর্তাদের একত্র করে ভর্তি নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ বিবেচনায় আগামী বছর আমরা পুনরায় একত্রে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করব।’

মঙ্গলবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের জানুয়ারি-জুন ২২ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ৩৫টি বিভাগে মোট ৫৫৭ জন শিক্ষার্থী এবার ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই ভর্তি কার্যক্রম চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত