Ajker Patrika

একই সঙ্গে সত্য এবং মিথ্যা

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

১৯৫৮ সালে আমি লিখেছিলাম—বাস্তব এবং অবাস্তবতার মধ্যে, সত্য এবং মিথ্যার মধ্যে চোখে পড়ার মতো বিরাট কোনো ফারাক নেই। কোনো বিষয়কেই হয় সত্যি, নয় মিথ্যা হতেই হবে—এমনটাও নয়। এমনও হতে পারে, বিষয়টি একই সঙ্গে সত্য এবং মিথ্যা।

আমার মতে, এই তত্ত্ব এখনো অর্থবহ এবং শিল্পের মাধ্যমে সত্যকে খনন করার ক্ষেত্রে একে কাজে লাগানো যায়। আর তাই একজন লেখক হিসেবে আমি এই মতামতের সপক্ষে, কিন্তু একজন নাগরিক হিসেবে অবশ্যই নয়। একজন নাগরিক হিসেবে আমাকে প্রশ্ন করতেই হবে, কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা।

নাটকের সত্য সর্বদাই ধরাছোঁয়ার অতীত। আপনি তাকে কখনোই খুঁজে পাবেন না, কিন্তু তার খোঁজ জারি রাখতেই হবে। এ অন্বেষণটিই কঠিন প্রয়াসের বিষয়। আপনার কাজ এই অন্বেষণ। এ রকমটা মাঝেমধ্যেই হতে পারে। অন্ধকারে হয়তো সত্যের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়লেন, ধাক্কা খেলেন অথবা সত্যের একঝলক দেখেও ফেললেন; নিজে সেটা বুঝতেও পারলেন না।

কিন্তু এটাই আসল সত্য যে নাট্যশিল্পে একক সত্য বলে কিছু হয় না। তা অসংখ্য। এক একটি সত্য অন্য সত্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়, অবজ্ঞা করে, প্রতিফলন ঘটায়, কামড়াকামড়ি করে এবং অনেক ক্ষেত্রে একে অন্যকে দেখতেও পায় না। কখনো আপনার মনে হবে একটি মুহূর্তের সত্য আপনার হাতের মুঠোয়, কিন্তু পরক্ষণেই দেখবেন তা আপনার আঙুলের ফাঁক দিয়ে গলে হারিয়ে গেছে।

আমাকে বহুবার প্রশ্ন করা হয়েছে, কীভাবে আমার নাটকগুলো তৈরি হয়? উত্তর দিতে পারিনি। এমনকি আমার লেখাগুলো এক জোট করতেও পারিনি। শুধু এটাই বলেছি যে, এগুলো স্রেফ লেখা হয়ে গেছে। চরিত্ররা নিজেরাই যেটুকু যা জানে বা বলে!

আমার বেশির ভাগ নাটকই তৈরি হয়েছে একটি মাত্র লাইন বা শব্দ বা দৃশ্য থেকে। একটি শব্দ হয়তো তারপর একটি দৃশ্য। দুটি লাইন, যা হঠাৎ মাথায় আসে এবং তারপর তৈরি হয় ছবি। আমি তারপর তাকে অনুসরণ করি।

ব্রিটিশ নাট্যকার হ্যারল্ড পিন্টার ২০০৫ সালে নোবেল পুরস্কার পান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত