Ajker Patrika

বাঁধ হলেও দুর্ভোগে মানুষ

কামাল হোসেন, কয়রা
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ২৬
Thumbnail image

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সাত মাসে এসে কয়রার দশহালিয়ার ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধে গত শুক্রবার প্রাথমিকভাবে পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে। এর ফলে এলাকাটি প্রতিদিন দুইবার জোয়ারে ডুবা এবং ভাটায় জেগে উঠার খেলা বন্ধ হয়েছে। জোয়ারের পানি প্রবেশ বন্ধ হলেও ঘরবাড়ি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। বাড়ির ভেতরে জলাবদ্ধ ও আঙিনায় কাঁদা থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছে ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি পরিবার।

এতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ মানুষেরা। দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত জোয়ারের পানি ওঠা নামায় ভাঙন স্থান দিয়ে গভীর খালের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে এক হাজার বিঘার মৎস্য ঘের।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রবল জোয়ারে কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে লবণ পানিতে তলিয়ে যায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রাম। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার অতিমাত্রায় জোয়ারের পানিতে উপজেলার শাকবাড়ীয়া ও কপোতাক্ষ নদীর প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে লবণ পানি প্রবেশ করে। ভেঙে যায় বেড়িবাঁধের ১২টি পয়েন্ট। বিধ্বস্ত হয়েছে এক হাজার ২৫০টি ঘর। তলিয়ে যায় আড়াই হাজার চিংড়ি ঘের। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি টাকা। স্থানীয় মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমে ভেঙে যাওয়া ১০টি পয়েন্ট বাঁধা সম্ভব হলেও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের গাতীরঘেরী ও মহারাজপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দশহালিয়ার পয়েন্ট বাঁধা যায়নি।

গত বুধবার সরজমিনে দেখা যায়, ভাঙনের পয়েন্ট থেকে নিয়মিত জোয়ারের পানি উঠানামা করায় মৎস্য ঘেরগুলোর মধ্য দিয়ে গভীর খালের সৃষ্টি হয়েছে। নোনা পানির ভেতরে ভাসছে কয়েকটি পরিবার। ঘরের ভেতর পানি ওঠায় পাটাতন তৈরি করে থাকতে হচ্ছে তাদের। সুপেয় পানির নেই কোন ব্যবস্থা।

দশহালিয়ার গ্রামের মেহেরুন্নেছা বলেন, স্বামী সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে আছি। ছয় মাস ধরে পানিবন্দী হয়ে রয়েছি। আমাদের আর কোন জায়গা নেই। তাই এই অবস্থায় আছি। আম্পানে ডুবে ছিলাম এখনো ডুবে আছি। জানি না কবে নাগাদ এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাব।

একই গ্রামের চিংড়ি চাষি আলমগীর হোসেন, মতি সরদার, মান্নান শেখসহ আরও অনেকে জানান, বাঁধটি ভাঙার পর এর পরিধি ছিল অল্প। সে সময় উদ্যোগ নিলে সহজেই মেরামত হয়ে যেত। কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্বেষীর অসহযোগিতার কারণে সম্ভব হয়নি। এখন সেখানে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয়ের আয়োজন চলছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ডিভিশন-২) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মশিউল আবেদীন বলেন, দশহালিয়ার পয়েন্ট জরুরি মেরামতের আওতায় কাজ চলমান আছে। গত শুক্রবার বাঁধ বাধা সম্ভব হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে কয়রা উপজেলায় ১০টি জায়গা ভেঙে গিয়েছিল। দশহালিয়ার পয়েন্ট ছাড়া সবগুলো বাঁধা সম্ভব হয়েছে। তবে দশহালিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় অবশেষে পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত