Ajker Patrika

ধর্ষণ মামলায় সাবেক মেয়রপুত্রের যাবজ্জীবন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১০: ৪৭
Thumbnail image

শরীয়তপুরের জাজিরায় কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় সাবেক মেয়রের ছেলে মাসুদ ব্যাপারীকে (৩১) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুস সালাম খান এ রায় দেন। মামলার অন্য আসামি শরীফ সরদারকে (২১) বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাসুদ ব্যাপারীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার সাবেক মেয়র ইউনুছ ব্যাপারীর ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের ২৯ জুন রাতে মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হন। ওই দিন বিকেলে মাসুদ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে কলেজছাত্রীকে বাড়িতে আসতে বলেন। পরে এই কলেজছাত্রী বাড়িতে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। তখন মাসুদ এই ছাত্রীকে আটকে ধর্ষণ করেন। পরে শ্বাসরোধে হত্যা করার চেষ্টা করেন। ধর্ষণের সময় মাসুদের সহযোগী শরীফ সরদার বাড়ির বাইরে পাহারা দেন বলে অভিযোগ করেন ওই কলেজছাত্রী। পরে মাসুদের বাড়ি থেকে বের হয়ে চিৎকার করলে এই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন কয়েকজন নারী। পরের দিন জাজিরা থানায় মাসুদ ব্যাপারী বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে শরীফ সরদারের বিরুদ্ধে নিজে বাদী হয়ে মামলা করেন এই ছাত্রী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, পুলিশ আটক করে মাসুদকে আদালতে হাজির করলে ৮ জুলাই জামিনে বেরিয়ে আসে। চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার আসামি আট দিনের মাথায় জামিনে বেরিয়ে আসায় সমালোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে। প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। জামিনের তিন দিনের মাথায় মাসুদের জামিন বাতিল করে ওই বছরের ১১ জুলাই পুনরায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় জেলা জজ আদালত। ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ১৭ জন সাক্ষী ও ৯ জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিচারক মাসুদ ব্যাপারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন এবং একই সঙ্গে শরীফ সরদারকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ‘আমরা আদালতের রায়ে আংশিক সন্তুষ্ট। তবে শরীফ আমার মেয়ের জীবনটা শেষ করে দিছে। ওর জন্যই আমার মেয়ের এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী শহীদুল ইসলাম সজীব বলেন, ‘আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে অভিযুক্ত শরীফ সরদারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের জন্য পরিস্থিতি তৈরি ও ধর্ষণে সহায়তা করার গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ায় আমরা হতাশ। দ্রুত সময়ের মধ্যেই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।’

আসামি পক্ষের আইনজীবী কারমুজ্জামান উজ্জল বলেন, ‘মাসুদ ব্যাপারীকে আইনবহির্ভূতভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। ন্যায়বিচার থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। আজকের এই রায়ে আমরা সম্পূর্ণ সংক্ষুব্ধ, সাক্ষ্য-প্রমাণেই ফুটে উঠেছে ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ডিএনএ টেস্টেও এই ধরনের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত