Ajker Patrika

রড ছাড়াই ইউড্রেন নির্মাণ!

সাইফুল আরিফ জুয়েল, নেত্রকোনা
রড ছাড়াই ইউড্রেন নির্মাণ!

নেত্রকোনার বারহাট্টায় ইউড্রেন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার আমতলা-সমাজ সড়কের জিথন মধ্যপাড়া  থেকে বিষনাই নদ পর্যন্ত সড়কে নির্মাণ করা ছয়টি ইউড্রেন নির্মাণে এই অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। উপজেলা প্রকৌশলী অমিত চন্দ্র দে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বারহাট্টা উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ‘পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে’র আওতায় আমতলা-সমাজ সড়কের জিথন মধ্যপাড়া থেকে বিষনাই নদ পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের কাজ চলছে। এই সড়কে আছে ছয়টি ইউড্রেন। এ কাজের জন্য বরাদ্দ ৯০ লাখ ৯৬ হাজার ৭৫৩ টাকা।

 এর মধ্যে ছয়টি ইউড্রেন নির্মাণে বরাদ্দ ধরা হয় ৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এ কাজের টেন্ডার পায় এসবি ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক বারহাট্টার মনোরঞ্জন সরকার। কিছুদিন আগে এই সড়কের ইউড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে শুরু হবে রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ের কাজ।

শুরুতেই ইউড্রেন নির্মাণে রড না দেওয়া, নিম্নমানের ইট ও বালু ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। পরে তৈরি করা এসব ইউড্রেন ভেঙে নিয়ম মেনে আবারও নির্মাণ করার জন্য ঠিকাদারকে গত রোববার চিঠি দেন এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী অমিত চন্দ্র দে।

পাশাপাশি কাজের স্থানে রাখা নিম্নমানের ইট ও বালু সরিয়ে নিতেও বলা হয় ওই চিঠিতে। অন্যথায় বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে বলেও তিনি জানান।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইউড্রেন নির্মাণে রড ছাড়া ঢালাই দেওয়াসহ ব্যবহার অনুপযোগী নিম্নমানের ইট বালু ব্যবহারের সত্যতা পাওয়া যায়। জিথন গ্রামের আব্দুল মালেক, আজিজুল ও অন্তর বলেন, রড ছাড়াই এসব ইউড্রেনের ঢালাই দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে অনুপযোগী ইট ও খোয়া। মিস্ত্রিদের চাহিদার অর্ধেক সিমেন্ট দিয়েছেন ঠিকাদার। এত নিম্নমানের কাজ তাঁরা কখনো দেখেননি বলে জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার মনোরঞ্জন সরকার বলেন, ‘আমার মিস্ত্রি কাজের ড্রয়িং বুঝতে ভুল করেছে। সে কারণে রড দেয়নি। বাজারে ভালো মানের ইট না পাওয়ায় এসব ইট কিনতে হয়েছে। তবে এলজিইডির চাহিদামতো ইউড্রেনগুলো ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।’

বারহাট্টা সরকারি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,  রড  ছাড়া ইউড্রেন বানালে তো ভেঙে পড়বে যেকোন সময়। এটা খুবই দুঃখজনক।

উপজেলা প্রকৌশলী অমিত চন্দ্র দে বলেন, এলজিইডির কাউকে অবগত না করে গত শুক্রবার ঠিকাদার রড ছাড়াই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ইউড্রেন নির্মাণের কাজ করেছেন। অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ইউড্রেন ভেঙে নতুন করে নির্মাণের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিম্নমানের সামগ্রী দ্রুত অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত