Ajker Patrika

বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা

চট্টগ্রাম নগরের কাট্টলী সিটি করপোরেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নতুন বছরের পাঠ্যবই এসেছে সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশের মতো। বাকি বইগুলো দুয়েকদিনের মধ্যেই চলে আসার কথা জানালেও নতুন বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান এম এ কাশেম।

কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে কোনো বই এখনো সরবরাহ করা হয়নি। নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, এ বিষয়ে বলতে নিষেধ আছে।

প্রতিবছর জানুয়ারির ১ তারিখ সারা দেশে বই উৎসব হয়। এই উৎসবের মাধ্যমে একযোগে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়।তবে এবার করোনা সংক্রমণ ও আর্থিক সংকটের কারণে যথাসময়ে বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং ইবতেদায়ির শিক্ষার্থীদের।

নতুন বছর শুরু হতে আর মাত্র চার দিন বাকি আছে। এর মধ্যে প্রাথমিকে ২২ শতাংশ, মাধ্যমিক এবং ইবতেদায়ির ৫০ শতাংশের কম পাঠ্যপুস্তক এসেছে। তারপরও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা ১ জানুয়ারি বই বিতরণ নিয়ে আশাবাদী। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বই যেতে আরও এক সপ্তাহ  লাগতে পারে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪ হাজার ২৬৫টি। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ১০ লাখ ১৮ হাজার। অন্যদিকে জেলায় মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০টি, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৪৩ হাজারের মতো।

চট্টগ্রামে নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এ বছর ৪৭ লাখ ৫২ হাজার পাঠ্যবইয়ের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে বই এসেছে ২২ শতাংশ। এসব বইয়ের আবার অধিকাংশই এখনো সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়নি। তবে উপজেলা পর্যায়ে বইগুলো চলে গেছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা। মাধ্যমিক ও ইবতেদায়িতে চাহিদা রয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ বই, যার মধ্যে গত রোববার পর্যন্ত এসেছে ৭০ লাখ।

নগরীর কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, বই এখনো আসেনি। তবে ১০০ ভাগ বই বিদ্যালয়ে চলে আসার তথ্য জানানোর জন্য তাঁদের বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রাথমিকের বই ছাপাচ্ছে সাগরিকা প্রিন্টার্স ও অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেসসহ কিছু প্রতিষ্ঠান। সাগরিকা প্রিন্টার্সের মালিক গিয়াস উদ্দিন বলেন, বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ডলার-সংকটের কারণে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে পারছে না। এ কারণে ভার্জিন পাল্প (কাগজের মণ্ড) আমদানি বন্ধ রয়েছে। তাই সবাইকে পাঠ্যবই ছাপাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনই বই আসছে। আসার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলাগুলোতে পাঠানো হচ্ছে।৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি। তাই ১ জানুয়ারি সবার হাতে বই পৌঁছানোর বিষয়ে আশাবাদী মো. শহীদুল ইসলাম।

জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক সাব্বির আহমেদ বলেন, মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ির ৭০ লাখ বই এসেছে। বাকিগুলো কয়েক দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও সব বই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা বই পাবে। জানুয়ারির মধ্যেই শিক্ষার্থীরা সব বই পেয়ে যাবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত