Ajker Patrika

করোনাকালের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশায় ব্যবসায়ীরা

আরিফ আহম্মেদ, গৌরীপুর
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২১, ২২: ২৫
করোনাকালের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশায় ব্যবসায়ীরা

শীতের আগমনে ব্যস্ততা বেড়েছে মৌসুমি লেপ-তোশক ব্যবসায়ীদের। এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় প্রচণ্ড শীতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। এ জন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগরেরা। দোকানে ভিড় করতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষও। এর মাধ্যমে করোনার কারণে আগের দুই মৌসুমের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে বিভিন্ন দোকানে যায়, লেপ-তোশক তৈরির কাজ করছেন কারিগরেরা। অনেক দোকানে ক্রেতাদের ভিড়ও দেখা যায়। অনেকেই ঠিক করিয়ে নিতে এসেছেন পুরোনো লেপ-তোশক।

গৌরীপুর পাট বাজার মোড়ের সিরাজ বেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী রিয়াজ উদ্দিন জানান, ইতিমধ্যে কার্যাদেশ আসা শুরু করেছে। করোনার কারণে দেওয়া লকডাউনের সময় যে মন্দার শিকার হয়েছিলেন এবার তা পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন বলে আশাবাদী তিনি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, একটি ভালোমানের লেপ তৈরিতে গড়ে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। আর মাঝারি মানের জন্য খরচ হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া দেড় থেকে থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মানের একটি তোশক বানানো যায়। তবে তুলার মান অনুযায়ী দাম কম-বেশি হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কারিগরেরা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর চাহিদা কম ছিল। এবার শুরুটা ভালো। তা ছাড়া এই অঞ্চলে এখনো ধান কাটা পুরোপুরি শুরু হয়নি। সে জন্য গ্রামাঞ্চলের মানুষ এখনো আসা শুরু করেননি। তবে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রচলিত ঋতু অনুযায়ী পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল। তবে এবার অগ্রহায়ণ মাসের শুরু থেকেই জাঁকিয়ে বসতে শুরু করেছে শীত। তাই শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কোনো কোনো ব্যবসায়ীরা গ্রাহকের অর্ডার নেওয়ার পাশাপাশি লেপ-তোশক তৈরি করে দোকানে মজুত করছেন।

গৌরীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়কের সোহেল ম্যাট্রেসের স্বত্বাধিকারী সোহেল মিয়া বলেন, একটি লেপ তৈরি করতে তুলা ও কাপড়ের মান অনুযায়ী ৮০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে। তোশক বানালে খরচ পড়ছে ১ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। লেপ ও তোশক তৈরিতে একজন কারিগর প্রতিটিতে ১৫০ টাকা মজুরি পান।

সোহেল মিয়া জানান, একটি লেপ তৈরিতে কারিগরের সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। একজন দিনে ৮-১০টি লেপ তৈরি করতে পারেন। তোশক তৈরিতেও একই সময় ব্যয় হয়। আর জাজিম তৈরিতে মজুরি মেলে ৪০০ টাকা। শীত মৌসুমের তিন মাস কারিগরেরা যে হারে লেপ-তোশক তৈরির কাজ পান, বছরের বাকি সময় তা থাকে না। তখন তাঁরা অন্য পেশায় নিয়োজিত হন। আর ব্যবসায়ীরা তোশক, বালিশ, কোলবালিশ ও জাজিম বিক্রি করে ব্যবসা টিকিয়ে রাখেন।

ব্যবসায়ী ও কারিগরেরা জানিয়েছেন, এ বছর কাজের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি কারিগরদের উপার্জন বেড়েছে। এ অবস্থা চললে কারিগর ও ব্যবসায়ীরা করোনার কারণে হওয়া ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত