Ajker Patrika

নির্মাণকাজ বন্ধ দুই বছর ভাঙা রাস্তায় কষ্টের যাত্রা

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
নির্মাণকাজ বন্ধ দুই বছর ভাঙা রাস্তায় কষ্টের যাত্রা

চার বছরেও শেষ হয়নি জামালপুর-শেরপুর-বনগাঁও আঞ্চলিক মহাসড়কের পুনর্নির্মাণকাজ। এতে দীর্ঘ সময় ধরে ভোগান্তিতে রয়েছেন পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এই অবস্থায় কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।

সওজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জামালপুর-শেরপুর-বনগাঁও সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে সড়কটি পুনর্নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ১৩০ কোটি টাকায় যৌথভাবে কাজটি পায় মেসার্স এসইপিএল প্রাইভেট লিমিটেড, ওটিবিএল ও মেসার্স তুর্ণা এন্টারপ্রাইজ নামের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সড়কটির পুনর্নির্মাণকাজ শুরু হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ ওঠে। এ কারণে ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে যায় এর উন্নয়নকাজ। তবে সওজের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কাজ শেষ না করেই ৯০ কোটি টাকা বিল তুলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা পালিয়ে যান বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে অনিয়মের অভিযোগে বদলি করা হয় সে সময়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদকে। বাতিল করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর, বারোমারি মিশনসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র এবং দুই উপজেলার সংযোগ সড়ক এটি। দীর্ঘদিনেও কাজ শেষ না হওয়ায় এখন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ ও পণ্যবাহী গাড়ি।

ঝিনাইগাতী উপজেলার তিনানী এলাকার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, রাস্তা ভাঙাচোরার কারণে গাড়ি নষ্ট হয় তাড়াতাড়ি। যাতায়াতেও সময় বেশি লাগে। মাঝেমধ্যে গাড়ি উল্টে যায়।

রিকশাচালক মো. জয়নাল মিয়া বলেন, কোয়ারিরোড থেকে টেংরাখালি পর্যন্ত অনেক বেশি ভাঙাচোরা। বর্ষার সময় রিকশা চালাতে বেশি অসুবিধা হয়। মাঝেমধ্যে উল্টে যায় রিকশা। 
আরেক বাসিন্দা মো. আব্দুল হালিম বলেন, ‘তিন-চার বছরেও সড়কের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এতে আমাদের চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। এই এলাকার রোগীদের হাসপাতালে নিতে খুব কষ্ট হয়। ভাঙা রাস্তায় রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়।’

কোয়ারিরোড এলাকার আব্দুল করিম বলেন, এ সড়ক দিয়ে অনেক বড় গাড়ি চলাচল করে, তারপরও এমন ভাঙাচোরা অবস্থায় চার বছর ধরে পড়ে আছে। গাড়ি চলাচলে খুব অসুবিধা হয়। 
একই কথা জানান মো. জলিল মিয়া, মো. আনোয়ার হোসেন, আব্দুস সাত্তারসহ অনেকে। দ্রুত কাজ শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।

এ বিষয়ে শেরপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, জামালপুর-শেরপুর-বনগাঁও সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ। আগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে কাজ শেষ করতে না পারায় তাঁদের ওয়ার্কঅর্ডার বাতিল করাসহ জরিমানা করা হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। খুব শিগগির ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি হবে। আশা করছি আগামী দু-এক মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে ৩৮ কোটি টাকার মতো ব্যয় হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত