Ajker Patrika

নির্মাণ শেষের ১০ দিনের মাথায় ফসল রক্ষা বাঁধে ধস

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ১০: ২৬
নির্মাণ শেষের ১০ দিনের মাথায় ফসল রক্ষা বাঁধে ধস

নির্মাণকাজ শেষ করার ১০ দিনের মাথায় ধসে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফসল রক্ষা বাঁধ। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নে খাসিয়ামারা নদীর তীরবর্তী এ বাঁধটি ধসে যায়। তবে গতকাল শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হয়েছে।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে খাসিয়ামারা নদীর ডানতীরে ৩০৩ মিটার ফসলরক্ষা বাঁধের মেরামত শুরু করে পাউবো। বাঁধটি ২৮ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) অন্তর্ভুক্ত। এর ব্যয় ধরা হয় ১৯ দশমিক ৪৯ লাখ টাকা। গত ২০ মার্চ বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়।

গত বৃহস্পতিবার বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, রাবার ড্যামের পশ্চিম পাশ থেকে হয়ে বাঁধটির কাজ শেষ হয়েছে টিলাগাঁও গ্রাম পর্যন্ত। টিলাগাঁওয়ের অংশে প্রায় ১৮ মিটার ফসলরক্ষা বাঁধ খাসিয়ামারা নদীতে ধসে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকেরা জানান, খাসিয়ামারা নদীর ডানতীরের ২৮ নম্বর পিআইসির কাজ হচ্ছে সুরমা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের টিলাগাঁও গ্রামে। অথচ এই পিআইসি সভাপতি, সদস্যসচিব ও সদস্যদের সবাই বহিরাগত। স্থানীয় একজন কৃষককেও রাখা হয়নি। যাঁদের রাখা হয়েছে, তাঁরা অন্য ওয়ার্ডের শান্তিপুর, গিরিশনগর, আজবপুর, খৈয়াজুরি গ্রামের বাসিন্দা।

এই ফসলরক্ষা বাঁধের আওতায় ২৮ নম্বর পিআইসির কারোরই জমি নেই। ফলে দায়সারাভাবে মাটি ফেলে বাঁধের কাজ করা হয়েছে।

২৮ নম্বর পিআইসির সভাপতি মো. মোশারফ হোসেন ফরাজী বলেন, ‘স্থানীয় কৃষকদের নিয়েই বাঁধের কাজ করা হয়েছে। বাঁধের কাজ শেষে ঘাস লাগানো হয়েছে। বাঁধটি নদীর পার্শ্ববর্তী হওয়ায় স্রোতে ও বৃষ্টির পানিতে সামান্য অংশ দেবে গেছে। দেবে যাওয়া অংশের মেরামত করা হচ্ছে।’

সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, দায়সারা কাজের কারণে এখন পুরো বাঁধ ধসের মুখে। বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সুরমা ইউনিয়ন কমিটির আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যেকটি পিআইসির বাঁধের বেহাল অবস্থা। দায়সারাভাবে যে কাজ করেছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। এবার কৃষকের ফসলহানি ঘটলে দুর্নীতিবাজ পাউবো, প্রশাসন ও তাদের স্থানীয় সিন্ডিকেট কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’

দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব ও বাপাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী আবু সায়েম শাফিউল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘যাঁদের পিআইসিতে রাখা হয়েছে, সবার জমি আছে হাওরে। গণশুনানির মাধ্যমেই তাঁদের পিআইসিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাঁধের সামান্য অংশ দেবে যাওয়ার খবর পেয়ে ওই অংশ মেরামতের নির্দেশ দিয়েছি।’

এ বিষয়ে ইউএনও দেবাংশু কুমার সিংহ জানান, শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত