Ajker Patrika

পৌরসভা প্রথম শ্রেণির দুর্ভোগে ক্ষোভ বাসিন্দাদের

আনোয়ার হোসেন রায়হান, পঞ্চগড়
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ৫৪
পৌরসভা প্রথম শ্রেণির দুর্ভোগে ক্ষোভ বাসিন্দাদের

পঞ্চগড় পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩৫ হাজার ৯ জন। ২০০৫ সালে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলেও নাগরিকসেবার মান সেভাবে বাড়েনি। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, জরাজীর্ণ রাস্তাঘাটসহ সার্বিক অব্যবস্থাপনায় নাগরিকদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।

পৌর মেয়র বলছেন, ইতিমধ্যে পৌর এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কারসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দেড় শ কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু করা হবে।

নাগরিক সমাজের অভিযোগ, প্রতিবছরের উন্নয়ন বাজেট নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে সংশ্লিষ্টরা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন।

তবে সাবেক মেয়র তৌহিদুল ইসলাম বলছেন, দীর্ঘ ২৫ বছর পৌরসভায় মেয়র হিসেবে কাজ করেছি। নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও নাগরিকদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা হয়েছে। বাকিটুকু চলমান রয়েছে।

বর্তমান মেয়র জাকিয়া খাতুন জানালেন, বিগত সময়ে বিএনপির মেয়র নগরবাসীর জন্য কিছুই করেননি, করেছেন নিজের ভাগ্যের উন্নয়ন। এবার মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। সব সমস্যার সমাধান করে পঞ্চগড় পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভায় রূপান্তর করার কথা জানান তিনি।

মেয়র আরও জানান, বর্তমানে দুটি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। শহরে স্যানিটারি ল্যান্ড ফিল্ড ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের পথে। পৌর ভবনের সামনে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে পাঁচতলাবিশিষ্ট মার্কেট। এ ছাড়াও এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় শহরের রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, বিগত সময়ে পৌরসভার নিজস্ব আয় ও যে পরিমাণ উন্নয়ন বাজেট এসেছে, তা থেকে দৃশ্যমান তেমন কোনো পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়নি। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন, বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা নিরসন হবে এমন আশা তাঁদের।

পঞ্চগড় জেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এরশাদ হোসেন বলেন, একটি আধুনিক পৌরসভা হিসেবে যেসব নাগরিকসুবিধা পাওয়া দরকার, তার কোনোটিই এখানে নেই। অব্যবস্থাপনার কারণে নগরবাসী সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

সমাজকর্মী ও সাংবাদিক মো. শাহজালাল বলেন, বার্ষিক উন্নয়নের জন্য যে বরাদ্দ আসে, তা দিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে দৃশ্যমান কোনো কিছু চোখে পড়ে না। বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতির কারণে নাগরিকসুবিধা থেকে পৌরবাসী বঞ্চিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শহরের চিনিকল এলাকায় প্রায় দুই যুগ আগে নির্মাণ করা হয়েছে ট্রাক টার্মিনাল। ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কের পাশে নির্মিত এই টার্মিনালটি নিজের জায়গা ছেড়ে দখল করে আছে মহাসড়ক। এতে মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। পৌরসভার সামনেই মহাসড়ক ঘেঁষে বসানো হয়েছে রেডিমেড ফার্নিচারের হাট। শহরের জালাশি এলাকায় সড়কের ওপর দুই যুগ ধরে ফেলা হচ্ছে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা।

এই পথ দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে হাজারো পথচারী। বিকট দুর্গন্ধে দুর্ভোগে পড়তে হয়। শহরের মধ্যে নেই কোনো গণশৌচাগার, অধিকাংশ রাস্তাঘাট বেহাল, নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করায় মশা-মাছি উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। এ রকম নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে পৌরসভার নাগরিকসুবিধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত