Ajker Patrika

পরোটা হয়েছে ছোট কমেছে ডাল-সবজি

আব্দুর রব, মৌলভীবাজার
আপডেট : ০৮ জুন ২০২২, ১৩: ১১
পরোটা হয়েছে ছোট কমেছে ডাল-সবজি

মৌলভীবাজারে বেড়েছে রুটি-পরোটা, সবজি, শিঙাড়া, সমুচাসহ বিভিন্ন খাদ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও দিনমজুরেরা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় হোটেলে খাদ্যের দাম বেড়েছে।

পৌরশহর ও শহরসংলগ্ন কয়েকটি হাটবাজারে বিভিন্ন হোটেল ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে পরোটা ছিল ৬ টাকা এখন ১০ টাকা। ১০ টাকার রুটি এখন ১৫ টাকা। ডাল-সবজি ছিল ১০ টাকা এখন ১৫ থেকে ২০ টাকা। শিঙাড়া-সমুচা বেড়ে হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা ও ভাজা ডিম ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শহরের চাঁদনীঘাট এলাকায় নাশতা করতে আসা আব্দুল হক বলেন, ‘পরোটার আকার ছোট হয়ে গেছে। কয়েক দিন আগেও দুটি পরোটায় নাশতা করতে পারতাম, এখন সেখানে তিনটি প্রয়োজন হয়।

জেলা হোটেলসংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, তেল ছাড়াও আটা, ময়দা, চিনি, ডিমসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় হোটেল ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। রোজার আগে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে একবার খাবারের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এখন প্রতিদিনই বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। খাবারের দাম বাড়ানো ছাড়া ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।

রিকশাচালক জমির আলি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে ছোট একটি হোটেলে নাশতা করে রিকশা নিয়ে বের হই। এখন নাশতা করতে বেশি টাকা লাগে। আমাদের আয় বাড়ছে না, কিন্তু সবকিছুর দাম হু-হু করে বাড়ছে। সংসার নিয়ে আমরা বাঁচব কী করে?’

খাদ্যেপণ্যের দাম বাড়ায় পরোটার আকার ছোট হয়েছে। আবার ভোক্তা হারানোর শঙ্কায় ছোট হোটেলগুলো নিয়েছে ভিন্ন পদ্ধতি।

প্রায় সব ধরনের ছোট চায়ের দোকানগুলোতে গ্রাহককে দেওয়া খাবারের পরিমাণ কমিয়ে চলছে টিকে থাকার চেষ্টা। দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই ভালো মানের বিলাসবহুল রেস্তোরাঁগুলো। সেখানে খাবারের দাম বেড়েছে।

জেলা শহরের সৈয়ারপুর এলাকার দিনমজুর মইন আলি বলেন, ‘আগে ২২ থেকে ২৫ টাকায় সকালের নাশতা করতাম। একই নাশতা এখন ৩৫ টাকায়ও হয় না।’

নিম্ন আয়ের মানুষ প্রায়ই দুটি পরোটা আর ১০ টাকার সবজি দিয়েই সেরে নিতেন সকালের নাশতা। যেখানে ২০ টাকায় পেট ভরে যেত, সেখানে বর্তমানে প্রায় ৩৫ টাকার প্রয়োজন হয়। খেটে খাওয়া মানুষগুলোর জন্য পরোটা সবজিও হয়ে উঠছে দুষ্প্রাপ্য।

ছোট হোটেলগুলোতে আগে পাঁচ থেকে সাত টাকা করে বিক্রি হয় একেকটি পরোটা। এখন দাম অপরিবর্তিত থাকলেও ছোট হয়ে গেছে পরোটার আকার।

কোর্ট রোডের হোটেল মালিক মো. মনির মিয়া বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। পরোটা ছোট আর সবজি কম দিয়েও তো টিকতে পারছি না। আমার হোটেলে গরিব দিনমজুর মানুষ বেশি আসে। পরোটা-সবজির দাম বাড়িয়েছি এখনো শিঙাড়া-সমুচার বাড়াইনি। চেষ্টা করি যতটুকু সম্ভব কম রাখতে।’

খাবার হোটেলের ব্যবস্থাপক জসিম মিয়া বলেন, ‘দাম বাড়ার কারণে কয়েক দিন ধরেই লোকসান হচ্ছে। দামও বাড়াতে পারছি না। খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে চলছে টিকে থাকার চেষ্টা।’

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে দাম বৃদ্ধির সত্যতা পেয়েছি। তাদের বুঝিয়ে বলেছি দাম সহনীয় রাখতে। ন্যায্যমূল্য ঠিক রাখতে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত