Ajker Patrika

দুই বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে আওয়ামী লীগ

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
Thumbnail image

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীকে নানা প্রচেষ্টা চালিয়েও নির্বাচন থেকে সরাতে পারেনি আওয়ামী লীগ। এক বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে ভোটারের কাছে টাকা বিলি ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তুলেছেন দলের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী। শুধু তা-ই নয়, বিদ্রোহী প্রার্থী শাহীনুল হক মার্শালের বিরুদ্ধে দু-এক দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

এ অবস্থায় দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিয়ে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ। দুই বিদ্রোহী প্রার্থী শেষ মুহূর্তেও জোর প্রচারে উত্তাপ বাড়ছে। জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দলীয় প্রার্থী মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর পক্ষে মাঠে নামলেও দলের একটি অংশ ভেতরে-ভেতরে বিদ্রোহী প্রার্থী শাহীনুল হক মার্শালের পক্ষে রয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে প্রার্থী হওয়ায় শাহীনুল হক মার্শাল ও নুরুল আবছারকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরের একটি অভিজাত হোটেলে কর্মিসভা ডাকা হয়। সভায় দলের জনপ্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে। এতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক উপস্থিত ছিলেন।

বিদ্রোহী প্রার্থী শাহীনুল হক মার্শাল জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হকের ছেলে। তাঁর অন্য তিন ভাই মাশেদুল হক রাশেদ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, শহীদুল হক সোহেল জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছোট ভাই কায়সারুল হক জুয়েল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। মার্শালের পক্ষে তিন ভাই নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে দলীয় সূত্র জানায়।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য রয়েছে এই  পরিবারের। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানও মার্শালের চাচাতো ভাই। তবে মেয়র মুজিব দলীয় প্রার্থী মোস্তাক আহমদ চৌধুরীকে জেতাতে মাঠে সরব রয়েছেন বলে দলীয় নেতারা জানান।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী বিদ্রোহী প্রার্থী শাহীনুল হক মার্শাল ও তাঁর তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরবার চিঠি দিয়েছেন। গত ৬ অক্টোবর মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা পৃথক চিঠি পাঠান। চিঠিতে মোস্তাক আহমদ চৌধুরী লেখেন, ‘জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মোজাম্মেল পরিবারের নোংরামি ও বিরোধিতার কারণে দলীয় প্রার্থীর যদি পরাজয় ঘটে, তাহলে শেখ হাসিনাকেই অসম্মান করা হবে। তাঁর সারা জীবনের অর্জনও নষ্ট হয়ে যাবে।’ এ অবস্থায় তাঁকে জয়ী করে আনতে মার্শালের তিন ভাইকে থামানো এবং তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

মোস্তাক আহমদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মার্শাল ও তাঁর তিন ভাই ভোটারের কাছে কালো টাকা বিলি করছেন এবং অস্ত্র নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। তাঁদের টাকার উৎস খতিয়ে দেখা দরকার।’ তিনি বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে দু-এক দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শাহীনুল হক মার্শাল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন প্রার্থীর জন্য খরচের যে সীমা বেঁধে দিয়েছে, তার মধ্যেই খরচ করছি। এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে দলীয় মার্কা নেই। তাই দলগত কোনো সমস্যাও নেই।’

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীদের ইতিমধ্যে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত