Ajker Patrika

ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধে বিজয় মেলা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৫১
ভেজা মাটির সোঁদা  গন্ধে বিজয় মেলা

মৌলভীবাজার জেলার বালিগাঁও ছায়া-সুনিবিড় এক পল্লিগ্রাম। প্রতিবছর বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে এখানে বিজয় মেলা ও লোকজ উৎসবের আয়োজন করা হয়। দেড় যুগ ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গ্রামীণ খেলাধুলা ও মেলাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এ উৎসবে। দুই দিনব্যাপী এ ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে রোববার মধ্যরাতে।

আয়োজকেরা জানান, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কথা, কবিতা, গান-নাচ, মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র প্রদর্শনী করা হয় এ অনুষ্ঠানে। গ্রামীণ উপকরণে গ্রামীণ মেলা এবং মেঠোপথে সুসজ্জিত শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রত্যন্ত গ্রাম বালিগাঁওয়ের দুদিনের বিজয় মেলা ও লোকজ উৎসব। ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানটি শুরু হয়ে ১৯ ডিসেম্বর শেষ হয়। তবে সার্বিক আয়োজনে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ হয়। এই টাকা গ্রামের ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী এবং প্রবাসীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিয়ে থাকেন।

স্বেচ্ছাসেবক ফাল্গুনী বৃষ্টি বলেন, ‘গ্রামের সবার সহযোগিতায় প্রতিবছর এ উৎসব করে থাকি। গ্রামের সবাই টাকাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করেন। উৎসবের প্রতিটা ধাপ আমরা স্বেচ্ছাসেবকেরা ভাগ করে নিয়ে সমন্বয় করে থাকি।’

খেলাধুলা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তাহেন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৩০টি খেলাধুলায় উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকে অংশ নেন। যে খেলাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, আমরা সেগুলো উৎসবের মধ্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি।’

স্বেচ্ছাসেবক ইমরান খান বলেন, সুসজ্জিত বিজয় শোভাযাত্রা, গ্রামীণ বিলুপ্তপ্রায় খেলাসহ ৩০টি খেলাধুলা, মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পথনাটক, মুক্তিযুদ্ধের ডকুমেন্টারি-সিনেমা প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শেষ হয় ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধের এ উৎসব।

শহীদ দানু মিয়ার সন্তান আতাউর রহমান মধু জানান, একাত্তর সালে আমার বাবা বালিগাঁওয়ের সন্তান দানু মিয়াকে পাকিস্তানি বাহিনী হত্যা করে। গ্রামের তরুণেরা শহীদ দানু মিয়ার নামে একটি পাঠাগার গড়ে তুলেছেন। আমার বাবা দানু মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে দেড় যুগ ধরে এ উৎসব পালন করে আসছে তাঁরা। আমরা সবসময় তাঁদের সহযোগিতা দিয়ে আসছি।

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও রাজনগর উপজেলার দুজন মুক্তিযোদ্ধা শীতেশ দেব এবং দিজেন্দ্র কুমার দেবকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

বিজয় উৎসবের আয়োজক আব্দুল হান্নান জানান, বিজয়ের ৫০ বছরটি আমরা ব্যতিক্রমীভাবে পালনের চেষ্টা করেছি। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ‘শহীদ দানু মিয়া স্মৃতি পাঠাগার’ কর্তৃক বিজয় উৎসবের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও গ্রামীণ খেলাধুলার সঙ্গে নতুন প্রজন্ম সম্পৃক্ত থাকবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আগামীর বাংলাদেশ গড়তে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে, এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। আমাদের এ উৎসব আয়োজন অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত