Ajker Patrika

কয়রায় বেড়িবাঁধে ধস বেড়েছে পানির উচ্চতা

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
কয়রায় বেড়িবাঁধে ধস বেড়েছে পানির উচ্চতা

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে খুলনার কয়রায় বেড়িবাঁধ ধসে পড়েছে। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার হরিণখোলা এলাকায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ২০০ হাত জায়গা ধসে যায়। এ ছাড়া সকাল থেকেই হচ্ছে বৃষ্টি, সেই সঙ্গে বেড়েছে বাতাসের গতিবেগও।

স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীর পানি কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় বেড়িবাঁধের ১২ কিলোমিটার জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই বাঁধে ভাঙন দেখে বাড়িঘর ও আবাদি জমির ফসল হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৫৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে এবং ১২ কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়লে এসব বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে অনেক এলাকা।

বেড়িবাঁধের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো হচ্ছে দশহালিয়া, লোকা, গোবিন্দপুর, মঠবাড়ী ও পবনা, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, হরিণখোলা, ঘাটাখালী, কয়রা, সাতানী, দক্ষিণ ভাগবা ও হড্ডা ফুলতলা, কাঠকাটা, কাটমারচর, হাজতখালী, হরিহরপুর ও গাতীরঘেরী, চরামুখা, গোলখালী, বীনাপানি, জোড়শিং ও আংটিহারা।

উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধসের পর বেড়িবাঁধ রক্ষায় গ্রামবাসীকে এগিয়ে আসার জন্য ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর গ্রামবাসী হাতে হাত ও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুরু করে ভাঙা বাঁধ মেরামতের কাজ। দুপুরে নদীতে জোয়ার আসার আগ পর্যন্ত টানা মাটি কেটে, বাঁধ উঁচু করার চেষ্টা করে তাঁরা। ওই এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালাম শেখ বলেন, সাধারণ মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করে দুপুর পর্যন্ত জোয়ারের আগেই কপোতাক্ষের পানি আটকাতে সক্ষম হয়েছে।

সুন্দরবন-সংলগ্ন দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সকাল থেকে কয়রায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। সিত্রাংয়ের কারণে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে আমাদের।’

এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রোকুনুজ্জামান বলেন, হরিণখোলা এলাকার বেড়িবাঁধ সংস্কারে কাজ করছে স্থানীয় মানুষ। সিত্রাংয়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। উপজেলা প্রশাসন, সিপিপিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকেরা সতর্কতামূলক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ১২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। উপজেলার ১১৬টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন বিদ্যালয় ভবন, পাকা ও নিরাপদ স্থাপনা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ইউএনও বলেন, ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানা-পুলিশ নিয়ে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। নিরাপদ পানি ও খাদ্য মজুত করা হয়েছে। দুর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

কয়রার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইমরুল কায়েস বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া৷ কিন্তু ভিটেবাড়ি রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চায় না মানুষ। এ জন্য উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করে যাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত