Ajker Patrika

দলীয় খেলা কাকে বলে দেখিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা

সাহিদ রহমান অরিন, ঢাকা
দলীয় খেলা কাকে বলে দেখিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা

এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মীমাংসা ততক্ষণে হয়ে গেছে। শ্রীলঙ্কা দল সেটা আঁচও করতে পেরেছে। তবু কী নির্লিপ্ত! ম্যাচের গভীরে দাসুন শানাকা-ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাদের পুরোপুরি ডুবে থাকাই বলে দিচ্ছিল, শেষ বল না হওয়া পর্যন্ত আনন্দ-আতিশয্যে গা ভাসাতে চান না তাঁরা।

একটু পর চামিকা করুনারত্নে টুর্নামেন্টের অন্তিম বলটা ছুড়েছেন—ফুল, স্ট্রেট অ্যান্ড ডেড। হারিস রউফের বেল-স্টাম্পে জিং লাইট জ্বলতেই পাকিস্তানিদের কপালেও লাল বাতি জ্বলে উঠেছে। এখন লঙ্কানদের থামানোর সাধ্য কার? বাঁধাভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতেছেন মাঠে থাকা ১১ জন। একাদশের বাইরে থাকা ৪ জনও ছুটে এসে শামিল হয়েছেন তাতে। কোচ ক্রিস সিলভারউডের মুষ্টিবদ্ধ উদ্‌যাপনেও দেখা গেছে সিংহ-তেজ।

এই টুকরো ছবিগুলোই জানান দিয়েছে, ক্রিকেট এখনো দলীয় খেলা। ঐক্যবদ্ধ হয়ে খেলতে পারলে বাধার পাহাড় ডিঙানোও কত সহজ। এই শ্রীলঙ্কা দলটা তো সেটারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

অথচ এশিয়া কাপ শুরুর আগে লঙ্কানদের ‘আন্ডারডগ’ ভাবা হচ্ছিল। উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে উড়ে যাওয়ার পর তো তাদের পক্ষে বাজি ধরার লোকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই দলটাই টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে আট বছর পর ফিরে পেয়েছে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের খেতাব।

গত দুই বছরে ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া দলটা নিজেদের গুছিয়ে নিতে শুরু করেছিল সিলভারউড কোচ হয়ে আসার পর। ঠিক সেই সময় রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকটে টালমাটাল হয়ে পড়েছিল তারা। এশিয়া কাপের স্বাগতিক হওয়ার সুযোগও হয়েছে হাতছাড়া। টুর্নামেন্টের ঠিক আগমুহূর্তে একাধিক অভিজ্ঞ বোলার চোটে ছিটকে পড়ায় একরকম তরুণ বোলিং আপ নিয়ে মরুর দেশে চ্যালেঞ্জ নিতে হয় তাদের। সেই চ্যালেঞ্জে শ্রীলঙ্কা দশে দশ পেয়েছে ওই একটা কারণেই—একতা।

শ্রীলঙ্কার ঘুরে দাঁড়ানোর শুরুটা হয়েছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতে। এরপর ঘরের মাঠে নিজেদের ভক্ত-সমর্থকদের সামনে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের বিপক্ষেও বড় কিছুর আভাস দিয়ে রাখে তারা। এশিয়া কাপে এসেও সেই বাংলাদেশকে দিয়েই শানাকাদের বদলে যাওয়ার শুরু। এরপর আফগানদের বিপক্ষে প্রতিশোধ, ভারত-বধ আর তিন দিনের ব্যবধানে দুইবার পাকিস্তানকে হারিয়ে শেষ হাসি। গত রাতে হাসিমাখা মুখে শিরোপা নিতে এসে অধিনায়ক শানাকাও সে কথাগুলোই বলেছেন, ‘আমাদের দলটা তরুণ হলেও সবার মধ্যে বোঝাপড়া অসাধারণ। ছেলেরা কন্ডিশন-পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে পড়তে পেরেছে। আমাদের স্বভাবটাই এমন ইতিবাচক। যারা আমাদের পাশে ছিলেন, তাদের ধন্যবাদ। আশা করি আমরা তাদের গর্বের উপলক্ষ এনে দিতে পেরেছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত