মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি, পৌর নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের এই সময়ে দেশের রাজনৈতিক আলোচনার মূল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যমগুলোয় অন্তত সে ধরনের খবরাখবর প্রতিদিন স্থান পাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ঢাকার অদূরে হওয়ায় গণমাধ্যমগুলোর দৃষ্টি বিশেষভাবে পাওয়ার সুযোগ নিয়েছে। তা ছাড়া, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে নারায়ণগঞ্জ একটি আলাদা অবস্থানে রয়েছে। নানা ঘটনাই শুধু এর প্রধান কারণ নয়। অর্থনীতি, রাজনীতি, নদীবন্দর, ঢাকার সংলগ্নতা, শিল্পনগরীর ঐতিহ্য ইত্যাদি বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জ সব সময়ই দেশের রাজনীতি ও গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে বিশেষ অবস্থানে ছিল এবং আছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অতীতেও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মতোই গণমাধ্যমে যেমন বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে। এবারও করোনা সংক্রমণের একটি নাজুক পরিস্থিতিতে থাকা সত্ত্বেও বিশেষ নজর এরই মধ্যে কেড়ে নিতে পেরেছে। তা ছাড়া, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরেও এমন কিছু ঘটনা অতীতে এবং এবারও ঘটার লক্ষণ বিরাজমান, যা নিয়ে সব মহলই নির্বাচনটিকে পর্যবেক্ষণে রাখছে। প্রতিদিনই নাসিক নিয়ে নানা রকম চমকপ্রদ ঘটনা ঘটার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। নির্বাচন পর্যন্ত পরিস্থিতির নানা উত্থান-পতন ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। তারপরও ইউপি ও পৌর নির্বাচনে বিএনপির বেশ কিছু নেতা-কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিএনপি বিজয়ী প্রার্থীদের বিজয়কে স্বাগতই জানিয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করেনি। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দ্বিচারিতা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিএনপির মহাসচিব কখনো নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার পক্ষে কথা বলেছেন, আবার কখনো নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে বিএনপি এই সব নির্বাচনে অংশ নেওয়া না-নেওয়া নিয়ে দোলাচলে দুলছে। এরই মধ্যে নাসিক নির্বাচন ঘনিয়ে এলে মহাসচিব দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার পরও কেউ যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে, সেটি তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
দলের এমন অবস্থান জেনেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতেও শুরু করেছেন। তৈমূর আলম নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপির দীর্ঘদিনের নেতা। ২০১১ সালের নাসিক নির্বাচনের আগের রাতে দলীয় চেয়ারপারসনের নির্দেশে তাঁকে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিমর্ষ চেহারায় বাকরুদ্ধ কণ্ঠে জানাতে হয়েছে। চেয়ারপারসন ও দলের ওই সিদ্ধান্ত নেতা-কর্মীদের মধ্যেও হতাশা তৈরি করেছিল। তখনো হয়তো তিনি জয়লাভ করতে পারবেন না জেনেই দলের হাইকমান্ড এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে সব মহল তখন ধরে নিয়েছিল। তবে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি শেষ পর্যন্ত অবস্থান করলে বিএনপির ভোটের চিত্রটি পাওয়া যেত। কিন্তু বিএনপির হাইকমান্ড সেই সময় অন্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দ্বিমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও তৈমূর আলম খন্দকারকে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তিনিও তখন গণমাধ্যমে তাঁর বেদনার কথা জানিয়েছিলেন। এখন নাসিকে মেয়র পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কাজে মন দেওয়ার পর আকস্মিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ এবং ২৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার এই দুই সিদ্ধান্ত বেশ রহস্যাবৃত, কোথাও বলা নেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর অব্যাহতির কারণও কোথাও উল্লেখ করা নেই। তিনি দলের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করার অপরাধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে–সেটিরও উল্লেখ নেই। সুতরাং তাঁর দুই পদ থেকে অব্যাহতির উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে সৃষ্টি হয়েছে।
এটি কি দলের নতুন কোনো কৌশল, তাঁকে সাধারণ ভোটারদের কাছে নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচিত করানো, সেই পরিচয়ে বিএনপির বাইরের ভোটারদেরও ভোট টানার হিসাব-নিকাশ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কি, তেমন বাড়তি ভোট তৈমূর আলমের হাতির পেটে ঢুকবে কি? পুরো বিষয়টি নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে নানা ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। অন্যদিকে তৈমূর আলম তাঁর অব্যাহতির খবরে প্রথমে আলহামদুলিল্লাহ পড়েছেন, পরে ‘খুশি হয়েছি’ বলেছেন। আবার ‘বিএনপির অবস্থান বিএনপি ভালো জানে। বিএনপি কি নৌকার পক্ষে ভোট চায়? স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা সবাই সরকারের হাতে নির্যাতিত। তাঁরা সবাই মাঠে আছেন। এর আগেও আমাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলেছেন। সুতরাং মেয়র পদে তৈমূর আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ২০১১ সালের নাটকীয়তা, ২০১৮ সালের সংসদ সদস্যপদে প্রার্থী না পাওয়া, এবারের ঘটনাবলির নানা রূপের নানা চরিত্র নিয়ে বোঝা বড়ই জটিল হয়ে উঠেছে। রাজনীতির বিশ্লেষক মহল বিএনপি এবং তৈমূর আলমকে নিয়ে কখনো হতবাক হয়, কখনো বিস্মিত হয়, কখনোবা এর কোনো সারবত্তা খুঁজে পাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করে না। এবার মেয়র পদে তিনি শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন কি না? গেলেও তাঁর পেছনে বিএনপির স্থানীয় নেতাদের কজন থাকবেন, কর্মীদেরও কজনকে দেখা যাবে–সেটি আগামী দিনগুলোই কেবল বলে দিতে পারে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০১১ সালেও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে মেয়র হয়েছিলেন।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর তিনি বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে পরাজিত করে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন। বিএনপি তখন সাখাওয়াত হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়ার পেছনে কারণ সাত খুনের হত্যা মামলায় সাখাওয়াত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রধান আইনজীবী ছিলেন। বিএনপি ধারণা করেছিল, এই মামলায় নারায়ণগঞ্জবাসী সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির পক্ষে সাখাওয়াতকে ভোটে বিজয়ী করবে। কিন্তু সেই মামলা নিয়ে সরকারের কোনো পক্ষপাতিত্বের আচরণ ভোটারদের কাছে দৃশ্যমান হয়নি। সুতরাং নারায়ণগঞ্জের ভোটাররা আইভীকে উন্নয়নে পরীক্ষিত একজন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। মেয়র পদে সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রার্থিতা দলের একজন সাংসদ আগাগোড়াই বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সাংসদের বিশেষ কিছু সমর্থক থাকলেও নারায়ণগঞ্জবাসী সেলিনা হায়াৎকে শুধু আওয়ামী লীগের দলীয় নেতার গুণেই যোগ্য মনে করছে না। তাঁর ব্যক্তিগত আচরণ, সততা এবং জনগণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বিশেষভাবে বিবেচিত হয়েছে। সে কারণেই তিনি পরপর দুবার সুষ্ঠু, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করেছিলেন। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন লাভ করেছেন। গণমাধ্যমে তাঁর প্রতীককে বিশেষ ওই সাংসদ এবং তাঁর কিছু অনুগত সমর্থক ব্যতীত আর কারও কোনো বিরোধিতার কথা আলোচিত হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে নারায়ণগঞ্জে কাজ করছেন বলে জানা যাচ্ছে। বিশেষ ওই সাংসদ ও তাঁর সমর্থকেরা প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না বলেও প্রচার রয়েছে। এই অংশের সমর্থন নির্বাচন পর্যন্ত নৌকার দিকে গড়াবে কি না, সেটি নিয়েও কেউ কেউ সন্দেহ করছেন। ১৬ তারিখের পর ফলাফল ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই নারায়ণগঞ্জের ভবিষ্যৎ দলীয় রাজনীতির সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নেবে, সেটি সবাই অনুমান করছে। বিষয়টি স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বোঝেন না, সেটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তা ছাড়া, আওয়ামী লীগের একজন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে তা সেলিনা হায়াৎ বিরোধীদের বিপক্ষে এবং তাঁর পক্ষেই ভোটারদের সমর্থন বাড়ানোর মতো ঘটনা ঘটেছে। তারপরও সেলিনা হায়াতের ১০ বছরের মেয়র পদের কাজের মূল্যায়ন ভোটাররা করবেন–এতে কোনো সন্দেহ নেই।
নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে কার প্রয়োজনীয়তা নারায়ণগঞ্জের জন্য বেশি, সেটি সম্পর্কেও যথেষ্ট ধারণা রাখেন। ৭ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আলোচনায় আছেন কেবল আইভী ও তৈমূরই। আইভী মেয়র পদে পরীক্ষিত, তৈমূর আলম সেই পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগই দলের কারণে পাননি। দল তাঁকে কেন এত হেলাফেলা করে, সেটি বোধগম্য নয়। নারায়ণগঞ্জের মেয়রকে অনেক দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হয়। এখানে কাজে নানা প্রতিবন্ধকতা, জটিলতা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সে কারণেই নারায়ণগঞ্জের সাধারণ ভোটাররা আবেগের বশবর্তী হয়ে নয়; বরং নারায়ণগঞ্জের জটিল বাস্তবতার অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখে মেয়র পদে তাঁকেই বসাবেন, যিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা, নানা ধরনের সমস্যা দূরীকরণে যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারবেন।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি, পৌর নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের এই সময়ে দেশের রাজনৈতিক আলোচনার মূল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যমগুলোয় অন্তত সে ধরনের খবরাখবর প্রতিদিন স্থান পাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ঢাকার অদূরে হওয়ায় গণমাধ্যমগুলোর দৃষ্টি বিশেষভাবে পাওয়ার সুযোগ নিয়েছে। তা ছাড়া, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে নারায়ণগঞ্জ একটি আলাদা অবস্থানে রয়েছে। নানা ঘটনাই শুধু এর প্রধান কারণ নয়। অর্থনীতি, রাজনীতি, নদীবন্দর, ঢাকার সংলগ্নতা, শিল্পনগরীর ঐতিহ্য ইত্যাদি বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জ সব সময়ই দেশের রাজনীতি ও গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে বিশেষ অবস্থানে ছিল এবং আছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অতীতেও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মতোই গণমাধ্যমে যেমন বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে। এবারও করোনা সংক্রমণের একটি নাজুক পরিস্থিতিতে থাকা সত্ত্বেও বিশেষ নজর এরই মধ্যে কেড়ে নিতে পেরেছে। তা ছাড়া, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরেও এমন কিছু ঘটনা অতীতে এবং এবারও ঘটার লক্ষণ বিরাজমান, যা নিয়ে সব মহলই নির্বাচনটিকে পর্যবেক্ষণে রাখছে। প্রতিদিনই নাসিক নিয়ে নানা রকম চমকপ্রদ ঘটনা ঘটার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। নির্বাচন পর্যন্ত পরিস্থিতির নানা উত্থান-পতন ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। তারপরও ইউপি ও পৌর নির্বাচনে বিএনপির বেশ কিছু নেতা-কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিএনপি বিজয়ী প্রার্থীদের বিজয়কে স্বাগতই জানিয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করেনি। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দ্বিচারিতা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিএনপির মহাসচিব কখনো নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার পক্ষে কথা বলেছেন, আবার কখনো নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে বিএনপি এই সব নির্বাচনে অংশ নেওয়া না-নেওয়া নিয়ে দোলাচলে দুলছে। এরই মধ্যে নাসিক নির্বাচন ঘনিয়ে এলে মহাসচিব দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার পরও কেউ যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে, সেটি তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
দলের এমন অবস্থান জেনেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতেও শুরু করেছেন। তৈমূর আলম নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপির দীর্ঘদিনের নেতা। ২০১১ সালের নাসিক নির্বাচনের আগের রাতে দলীয় চেয়ারপারসনের নির্দেশে তাঁকে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিমর্ষ চেহারায় বাকরুদ্ধ কণ্ঠে জানাতে হয়েছে। চেয়ারপারসন ও দলের ওই সিদ্ধান্ত নেতা-কর্মীদের মধ্যেও হতাশা তৈরি করেছিল। তখনো হয়তো তিনি জয়লাভ করতে পারবেন না জেনেই দলের হাইকমান্ড এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে সব মহল তখন ধরে নিয়েছিল। তবে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি শেষ পর্যন্ত অবস্থান করলে বিএনপির ভোটের চিত্রটি পাওয়া যেত। কিন্তু বিএনপির হাইকমান্ড সেই সময় অন্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দ্বিমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও তৈমূর আলম খন্দকারকে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তিনিও তখন গণমাধ্যমে তাঁর বেদনার কথা জানিয়েছিলেন। এখন নাসিকে মেয়র পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কাজে মন দেওয়ার পর আকস্মিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ এবং ২৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার এই দুই সিদ্ধান্ত বেশ রহস্যাবৃত, কোথাও বলা নেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর অব্যাহতির কারণও কোথাও উল্লেখ করা নেই। তিনি দলের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করার অপরাধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে–সেটিরও উল্লেখ নেই। সুতরাং তাঁর দুই পদ থেকে অব্যাহতির উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে সৃষ্টি হয়েছে।
এটি কি দলের নতুন কোনো কৌশল, তাঁকে সাধারণ ভোটারদের কাছে নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচিত করানো, সেই পরিচয়ে বিএনপির বাইরের ভোটারদেরও ভোট টানার হিসাব-নিকাশ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কি, তেমন বাড়তি ভোট তৈমূর আলমের হাতির পেটে ঢুকবে কি? পুরো বিষয়টি নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে নানা ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। অন্যদিকে তৈমূর আলম তাঁর অব্যাহতির খবরে প্রথমে আলহামদুলিল্লাহ পড়েছেন, পরে ‘খুশি হয়েছি’ বলেছেন। আবার ‘বিএনপির অবস্থান বিএনপি ভালো জানে। বিএনপি কি নৌকার পক্ষে ভোট চায়? স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা সবাই সরকারের হাতে নির্যাতিত। তাঁরা সবাই মাঠে আছেন। এর আগেও আমাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলেছেন। সুতরাং মেয়র পদে তৈমূর আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ২০১১ সালের নাটকীয়তা, ২০১৮ সালের সংসদ সদস্যপদে প্রার্থী না পাওয়া, এবারের ঘটনাবলির নানা রূপের নানা চরিত্র নিয়ে বোঝা বড়ই জটিল হয়ে উঠেছে। রাজনীতির বিশ্লেষক মহল বিএনপি এবং তৈমূর আলমকে নিয়ে কখনো হতবাক হয়, কখনো বিস্মিত হয়, কখনোবা এর কোনো সারবত্তা খুঁজে পাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করে না। এবার মেয়র পদে তিনি শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন কি না? গেলেও তাঁর পেছনে বিএনপির স্থানীয় নেতাদের কজন থাকবেন, কর্মীদেরও কজনকে দেখা যাবে–সেটি আগামী দিনগুলোই কেবল বলে দিতে পারে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০১১ সালেও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে মেয়র হয়েছিলেন।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর তিনি বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে পরাজিত করে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন। বিএনপি তখন সাখাওয়াত হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়ার পেছনে কারণ সাত খুনের হত্যা মামলায় সাখাওয়াত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রধান আইনজীবী ছিলেন। বিএনপি ধারণা করেছিল, এই মামলায় নারায়ণগঞ্জবাসী সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির পক্ষে সাখাওয়াতকে ভোটে বিজয়ী করবে। কিন্তু সেই মামলা নিয়ে সরকারের কোনো পক্ষপাতিত্বের আচরণ ভোটারদের কাছে দৃশ্যমান হয়নি। সুতরাং নারায়ণগঞ্জের ভোটাররা আইভীকে উন্নয়নে পরীক্ষিত একজন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। মেয়র পদে সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রার্থিতা দলের একজন সাংসদ আগাগোড়াই বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সাংসদের বিশেষ কিছু সমর্থক থাকলেও নারায়ণগঞ্জবাসী সেলিনা হায়াৎকে শুধু আওয়ামী লীগের দলীয় নেতার গুণেই যোগ্য মনে করছে না। তাঁর ব্যক্তিগত আচরণ, সততা এবং জনগণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বিশেষভাবে বিবেচিত হয়েছে। সে কারণেই তিনি পরপর দুবার সুষ্ঠু, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করেছিলেন। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন লাভ করেছেন। গণমাধ্যমে তাঁর প্রতীককে বিশেষ ওই সাংসদ এবং তাঁর কিছু অনুগত সমর্থক ব্যতীত আর কারও কোনো বিরোধিতার কথা আলোচিত হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে নারায়ণগঞ্জে কাজ করছেন বলে জানা যাচ্ছে। বিশেষ ওই সাংসদ ও তাঁর সমর্থকেরা প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না বলেও প্রচার রয়েছে। এই অংশের সমর্থন নির্বাচন পর্যন্ত নৌকার দিকে গড়াবে কি না, সেটি নিয়েও কেউ কেউ সন্দেহ করছেন। ১৬ তারিখের পর ফলাফল ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই নারায়ণগঞ্জের ভবিষ্যৎ দলীয় রাজনীতির সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নেবে, সেটি সবাই অনুমান করছে। বিষয়টি স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বোঝেন না, সেটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তা ছাড়া, আওয়ামী লীগের একজন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে তা সেলিনা হায়াৎ বিরোধীদের বিপক্ষে এবং তাঁর পক্ষেই ভোটারদের সমর্থন বাড়ানোর মতো ঘটনা ঘটেছে। তারপরও সেলিনা হায়াতের ১০ বছরের মেয়র পদের কাজের মূল্যায়ন ভোটাররা করবেন–এতে কোনো সন্দেহ নেই।
নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে কার প্রয়োজনীয়তা নারায়ণগঞ্জের জন্য বেশি, সেটি সম্পর্কেও যথেষ্ট ধারণা রাখেন। ৭ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আলোচনায় আছেন কেবল আইভী ও তৈমূরই। আইভী মেয়র পদে পরীক্ষিত, তৈমূর আলম সেই পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগই দলের কারণে পাননি। দল তাঁকে কেন এত হেলাফেলা করে, সেটি বোধগম্য নয়। নারায়ণগঞ্জের মেয়রকে অনেক দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হয়। এখানে কাজে নানা প্রতিবন্ধকতা, জটিলতা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সে কারণেই নারায়ণগঞ্জের সাধারণ ভোটাররা আবেগের বশবর্তী হয়ে নয়; বরং নারায়ণগঞ্জের জটিল বাস্তবতার অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখে মেয়র পদে তাঁকেই বসাবেন, যিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা, নানা ধরনের সমস্যা দূরীকরণে যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারবেন।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি, পৌর নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের এই সময়ে দেশের রাজনৈতিক আলোচনার মূল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যমগুলোয় অন্তত সে ধরনের খবরাখবর প্রতিদিন স্থান পাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ঢাকার অদূরে হওয়ায় গণমাধ্যমগুলোর দৃষ্টি বিশেষভাবে পাওয়ার সুযোগ নিয়েছে। তা ছাড়া, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে নারায়ণগঞ্জ একটি আলাদা অবস্থানে রয়েছে। নানা ঘটনাই শুধু এর প্রধান কারণ নয়। অর্থনীতি, রাজনীতি, নদীবন্দর, ঢাকার সংলগ্নতা, শিল্পনগরীর ঐতিহ্য ইত্যাদি বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জ সব সময়ই দেশের রাজনীতি ও গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে বিশেষ অবস্থানে ছিল এবং আছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অতীতেও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মতোই গণমাধ্যমে যেমন বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে। এবারও করোনা সংক্রমণের একটি নাজুক পরিস্থিতিতে থাকা সত্ত্বেও বিশেষ নজর এরই মধ্যে কেড়ে নিতে পেরেছে। তা ছাড়া, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরেও এমন কিছু ঘটনা অতীতে এবং এবারও ঘটার লক্ষণ বিরাজমান, যা নিয়ে সব মহলই নির্বাচনটিকে পর্যবেক্ষণে রাখছে। প্রতিদিনই নাসিক নিয়ে নানা রকম চমকপ্রদ ঘটনা ঘটার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। নির্বাচন পর্যন্ত পরিস্থিতির নানা উত্থান-পতন ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। তারপরও ইউপি ও পৌর নির্বাচনে বিএনপির বেশ কিছু নেতা-কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিএনপি বিজয়ী প্রার্থীদের বিজয়কে স্বাগতই জানিয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করেনি। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দ্বিচারিতা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিএনপির মহাসচিব কখনো নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার পক্ষে কথা বলেছেন, আবার কখনো নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে বিএনপি এই সব নির্বাচনে অংশ নেওয়া না-নেওয়া নিয়ে দোলাচলে দুলছে। এরই মধ্যে নাসিক নির্বাচন ঘনিয়ে এলে মহাসচিব দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার পরও কেউ যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে, সেটি তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
দলের এমন অবস্থান জেনেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতেও শুরু করেছেন। তৈমূর আলম নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপির দীর্ঘদিনের নেতা। ২০১১ সালের নাসিক নির্বাচনের আগের রাতে দলীয় চেয়ারপারসনের নির্দেশে তাঁকে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিমর্ষ চেহারায় বাকরুদ্ধ কণ্ঠে জানাতে হয়েছে। চেয়ারপারসন ও দলের ওই সিদ্ধান্ত নেতা-কর্মীদের মধ্যেও হতাশা তৈরি করেছিল। তখনো হয়তো তিনি জয়লাভ করতে পারবেন না জেনেই দলের হাইকমান্ড এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে সব মহল তখন ধরে নিয়েছিল। তবে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি শেষ পর্যন্ত অবস্থান করলে বিএনপির ভোটের চিত্রটি পাওয়া যেত। কিন্তু বিএনপির হাইকমান্ড সেই সময় অন্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দ্বিমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও তৈমূর আলম খন্দকারকে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তিনিও তখন গণমাধ্যমে তাঁর বেদনার কথা জানিয়েছিলেন। এখন নাসিকে মেয়র পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কাজে মন দেওয়ার পর আকস্মিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ এবং ২৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার এই দুই সিদ্ধান্ত বেশ রহস্যাবৃত, কোথাও বলা নেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর অব্যাহতির কারণও কোথাও উল্লেখ করা নেই। তিনি দলের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করার অপরাধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে–সেটিরও উল্লেখ নেই। সুতরাং তাঁর দুই পদ থেকে অব্যাহতির উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে সৃষ্টি হয়েছে।
এটি কি দলের নতুন কোনো কৌশল, তাঁকে সাধারণ ভোটারদের কাছে নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচিত করানো, সেই পরিচয়ে বিএনপির বাইরের ভোটারদেরও ভোট টানার হিসাব-নিকাশ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কি, তেমন বাড়তি ভোট তৈমূর আলমের হাতির পেটে ঢুকবে কি? পুরো বিষয়টি নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে নানা ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। অন্যদিকে তৈমূর আলম তাঁর অব্যাহতির খবরে প্রথমে আলহামদুলিল্লাহ পড়েছেন, পরে ‘খুশি হয়েছি’ বলেছেন। আবার ‘বিএনপির অবস্থান বিএনপি ভালো জানে। বিএনপি কি নৌকার পক্ষে ভোট চায়? স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা সবাই সরকারের হাতে নির্যাতিত। তাঁরা সবাই মাঠে আছেন। এর আগেও আমাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলেছেন। সুতরাং মেয়র পদে তৈমূর আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ২০১১ সালের নাটকীয়তা, ২০১৮ সালের সংসদ সদস্যপদে প্রার্থী না পাওয়া, এবারের ঘটনাবলির নানা রূপের নানা চরিত্র নিয়ে বোঝা বড়ই জটিল হয়ে উঠেছে। রাজনীতির বিশ্লেষক মহল বিএনপি এবং তৈমূর আলমকে নিয়ে কখনো হতবাক হয়, কখনো বিস্মিত হয়, কখনোবা এর কোনো সারবত্তা খুঁজে পাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করে না। এবার মেয়র পদে তিনি শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন কি না? গেলেও তাঁর পেছনে বিএনপির স্থানীয় নেতাদের কজন থাকবেন, কর্মীদেরও কজনকে দেখা যাবে–সেটি আগামী দিনগুলোই কেবল বলে দিতে পারে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০১১ সালেও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে মেয়র হয়েছিলেন।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর তিনি বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে পরাজিত করে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন। বিএনপি তখন সাখাওয়াত হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়ার পেছনে কারণ সাত খুনের হত্যা মামলায় সাখাওয়াত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রধান আইনজীবী ছিলেন। বিএনপি ধারণা করেছিল, এই মামলায় নারায়ণগঞ্জবাসী সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির পক্ষে সাখাওয়াতকে ভোটে বিজয়ী করবে। কিন্তু সেই মামলা নিয়ে সরকারের কোনো পক্ষপাতিত্বের আচরণ ভোটারদের কাছে দৃশ্যমান হয়নি। সুতরাং নারায়ণগঞ্জের ভোটাররা আইভীকে উন্নয়নে পরীক্ষিত একজন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। মেয়র পদে সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রার্থিতা দলের একজন সাংসদ আগাগোড়াই বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সাংসদের বিশেষ কিছু সমর্থক থাকলেও নারায়ণগঞ্জবাসী সেলিনা হায়াৎকে শুধু আওয়ামী লীগের দলীয় নেতার গুণেই যোগ্য মনে করছে না। তাঁর ব্যক্তিগত আচরণ, সততা এবং জনগণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বিশেষভাবে বিবেচিত হয়েছে। সে কারণেই তিনি পরপর দুবার সুষ্ঠু, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করেছিলেন। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন লাভ করেছেন। গণমাধ্যমে তাঁর প্রতীককে বিশেষ ওই সাংসদ এবং তাঁর কিছু অনুগত সমর্থক ব্যতীত আর কারও কোনো বিরোধিতার কথা আলোচিত হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে নারায়ণগঞ্জে কাজ করছেন বলে জানা যাচ্ছে। বিশেষ ওই সাংসদ ও তাঁর সমর্থকেরা প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না বলেও প্রচার রয়েছে। এই অংশের সমর্থন নির্বাচন পর্যন্ত নৌকার দিকে গড়াবে কি না, সেটি নিয়েও কেউ কেউ সন্দেহ করছেন। ১৬ তারিখের পর ফলাফল ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই নারায়ণগঞ্জের ভবিষ্যৎ দলীয় রাজনীতির সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নেবে, সেটি সবাই অনুমান করছে। বিষয়টি স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বোঝেন না, সেটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তা ছাড়া, আওয়ামী লীগের একজন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে তা সেলিনা হায়াৎ বিরোধীদের বিপক্ষে এবং তাঁর পক্ষেই ভোটারদের সমর্থন বাড়ানোর মতো ঘটনা ঘটেছে। তারপরও সেলিনা হায়াতের ১০ বছরের মেয়র পদের কাজের মূল্যায়ন ভোটাররা করবেন–এতে কোনো সন্দেহ নেই।
নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে কার প্রয়োজনীয়তা নারায়ণগঞ্জের জন্য বেশি, সেটি সম্পর্কেও যথেষ্ট ধারণা রাখেন। ৭ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আলোচনায় আছেন কেবল আইভী ও তৈমূরই। আইভী মেয়র পদে পরীক্ষিত, তৈমূর আলম সেই পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগই দলের কারণে পাননি। দল তাঁকে কেন এত হেলাফেলা করে, সেটি বোধগম্য নয়। নারায়ণগঞ্জের মেয়রকে অনেক দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হয়। এখানে কাজে নানা প্রতিবন্ধকতা, জটিলতা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সে কারণেই নারায়ণগঞ্জের সাধারণ ভোটাররা আবেগের বশবর্তী হয়ে নয়; বরং নারায়ণগঞ্জের জটিল বাস্তবতার অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখে মেয়র পদে তাঁকেই বসাবেন, যিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা, নানা ধরনের সমস্যা দূরীকরণে যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারবেন।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি, পৌর নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের এই সময়ে দেশের রাজনৈতিক আলোচনার মূল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যমগুলোয় অন্তত সে ধরনের খবরাখবর প্রতিদিন স্থান পাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ঢাকার অদূরে হওয়ায় গণমাধ্যমগুলোর দৃষ্টি বিশেষভাবে পাওয়ার সুযোগ নিয়েছে। তা ছাড়া, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে নারায়ণগঞ্জ একটি আলাদা অবস্থানে রয়েছে। নানা ঘটনাই শুধু এর প্রধান কারণ নয়। অর্থনীতি, রাজনীতি, নদীবন্দর, ঢাকার সংলগ্নতা, শিল্পনগরীর ঐতিহ্য ইত্যাদি বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জ সব সময়ই দেশের রাজনীতি ও গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে বিশেষ অবস্থানে ছিল এবং আছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অতীতেও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মতোই গণমাধ্যমে যেমন বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে। এবারও করোনা সংক্রমণের একটি নাজুক পরিস্থিতিতে থাকা সত্ত্বেও বিশেষ নজর এরই মধ্যে কেড়ে নিতে পেরেছে। তা ছাড়া, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরেও এমন কিছু ঘটনা অতীতে এবং এবারও ঘটার লক্ষণ বিরাজমান, যা নিয়ে সব মহলই নির্বাচনটিকে পর্যবেক্ষণে রাখছে। প্রতিদিনই নাসিক নিয়ে নানা রকম চমকপ্রদ ঘটনা ঘটার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। নির্বাচন পর্যন্ত পরিস্থিতির নানা উত্থান-পতন ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। তারপরও ইউপি ও পৌর নির্বাচনে বিএনপির বেশ কিছু নেতা-কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিএনপি বিজয়ী প্রার্থীদের বিজয়কে স্বাগতই জানিয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করেনি। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দ্বিচারিতা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিএনপির মহাসচিব কখনো নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার পক্ষে কথা বলেছেন, আবার কখনো নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে বিএনপি এই সব নির্বাচনে অংশ নেওয়া না-নেওয়া নিয়ে দোলাচলে দুলছে। এরই মধ্যে নাসিক নির্বাচন ঘনিয়ে এলে মহাসচিব দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার পরও কেউ যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে, সেটি তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
দলের এমন অবস্থান জেনেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতেও শুরু করেছেন। তৈমূর আলম নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপির দীর্ঘদিনের নেতা। ২০১১ সালের নাসিক নির্বাচনের আগের রাতে দলীয় চেয়ারপারসনের নির্দেশে তাঁকে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিমর্ষ চেহারায় বাকরুদ্ধ কণ্ঠে জানাতে হয়েছে। চেয়ারপারসন ও দলের ওই সিদ্ধান্ত নেতা-কর্মীদের মধ্যেও হতাশা তৈরি করেছিল। তখনো হয়তো তিনি জয়লাভ করতে পারবেন না জেনেই দলের হাইকমান্ড এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে সব মহল তখন ধরে নিয়েছিল। তবে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি শেষ পর্যন্ত অবস্থান করলে বিএনপির ভোটের চিত্রটি পাওয়া যেত। কিন্তু বিএনপির হাইকমান্ড সেই সময় অন্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দ্বিমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও তৈমূর আলম খন্দকারকে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তিনিও তখন গণমাধ্যমে তাঁর বেদনার কথা জানিয়েছিলেন। এখন নাসিকে মেয়র পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কাজে মন দেওয়ার পর আকস্মিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ এবং ২৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার এই দুই সিদ্ধান্ত বেশ রহস্যাবৃত, কোথাও বলা নেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর অব্যাহতির কারণও কোথাও উল্লেখ করা নেই। তিনি দলের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করার অপরাধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে–সেটিরও উল্লেখ নেই। সুতরাং তাঁর দুই পদ থেকে অব্যাহতির উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে সৃষ্টি হয়েছে।
এটি কি দলের নতুন কোনো কৌশল, তাঁকে সাধারণ ভোটারদের কাছে নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচিত করানো, সেই পরিচয়ে বিএনপির বাইরের ভোটারদেরও ভোট টানার হিসাব-নিকাশ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কি, তেমন বাড়তি ভোট তৈমূর আলমের হাতির পেটে ঢুকবে কি? পুরো বিষয়টি নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে নানা ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। অন্যদিকে তৈমূর আলম তাঁর অব্যাহতির খবরে প্রথমে আলহামদুলিল্লাহ পড়েছেন, পরে ‘খুশি হয়েছি’ বলেছেন। আবার ‘বিএনপির অবস্থান বিএনপি ভালো জানে। বিএনপি কি নৌকার পক্ষে ভোট চায়? স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা সবাই সরকারের হাতে নির্যাতিত। তাঁরা সবাই মাঠে আছেন। এর আগেও আমাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলেছেন। সুতরাং মেয়র পদে তৈমূর আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ২০১১ সালের নাটকীয়তা, ২০১৮ সালের সংসদ সদস্যপদে প্রার্থী না পাওয়া, এবারের ঘটনাবলির নানা রূপের নানা চরিত্র নিয়ে বোঝা বড়ই জটিল হয়ে উঠেছে। রাজনীতির বিশ্লেষক মহল বিএনপি এবং তৈমূর আলমকে নিয়ে কখনো হতবাক হয়, কখনো বিস্মিত হয়, কখনোবা এর কোনো সারবত্তা খুঁজে পাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করে না। এবার মেয়র পদে তিনি শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন কি না? গেলেও তাঁর পেছনে বিএনপির স্থানীয় নেতাদের কজন থাকবেন, কর্মীদেরও কজনকে দেখা যাবে–সেটি আগামী দিনগুলোই কেবল বলে দিতে পারে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০১১ সালেও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে মেয়র হয়েছিলেন।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর তিনি বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে পরাজিত করে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন। বিএনপি তখন সাখাওয়াত হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়ার পেছনে কারণ সাত খুনের হত্যা মামলায় সাখাওয়াত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রধান আইনজীবী ছিলেন। বিএনপি ধারণা করেছিল, এই মামলায় নারায়ণগঞ্জবাসী সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির পক্ষে সাখাওয়াতকে ভোটে বিজয়ী করবে। কিন্তু সেই মামলা নিয়ে সরকারের কোনো পক্ষপাতিত্বের আচরণ ভোটারদের কাছে দৃশ্যমান হয়নি। সুতরাং নারায়ণগঞ্জের ভোটাররা আইভীকে উন্নয়নে পরীক্ষিত একজন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। মেয়র পদে সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রার্থিতা দলের একজন সাংসদ আগাগোড়াই বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সাংসদের বিশেষ কিছু সমর্থক থাকলেও নারায়ণগঞ্জবাসী সেলিনা হায়াৎকে শুধু আওয়ামী লীগের দলীয় নেতার গুণেই যোগ্য মনে করছে না। তাঁর ব্যক্তিগত আচরণ, সততা এবং জনগণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বিশেষভাবে বিবেচিত হয়েছে। সে কারণেই তিনি পরপর দুবার সুষ্ঠু, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করেছিলেন। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন লাভ করেছেন। গণমাধ্যমে তাঁর প্রতীককে বিশেষ ওই সাংসদ এবং তাঁর কিছু অনুগত সমর্থক ব্যতীত আর কারও কোনো বিরোধিতার কথা আলোচিত হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে নারায়ণগঞ্জে কাজ করছেন বলে জানা যাচ্ছে। বিশেষ ওই সাংসদ ও তাঁর সমর্থকেরা প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না বলেও প্রচার রয়েছে। এই অংশের সমর্থন নির্বাচন পর্যন্ত নৌকার দিকে গড়াবে কি না, সেটি নিয়েও কেউ কেউ সন্দেহ করছেন। ১৬ তারিখের পর ফলাফল ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই নারায়ণগঞ্জের ভবিষ্যৎ দলীয় রাজনীতির সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নেবে, সেটি সবাই অনুমান করছে। বিষয়টি স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বোঝেন না, সেটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তা ছাড়া, আওয়ামী লীগের একজন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে তা সেলিনা হায়াৎ বিরোধীদের বিপক্ষে এবং তাঁর পক্ষেই ভোটারদের সমর্থন বাড়ানোর মতো ঘটনা ঘটেছে। তারপরও সেলিনা হায়াতের ১০ বছরের মেয়র পদের কাজের মূল্যায়ন ভোটাররা করবেন–এতে কোনো সন্দেহ নেই।
নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে কার প্রয়োজনীয়তা নারায়ণগঞ্জের জন্য বেশি, সেটি সম্পর্কেও যথেষ্ট ধারণা রাখেন। ৭ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আলোচনায় আছেন কেবল আইভী ও তৈমূরই। আইভী মেয়র পদে পরীক্ষিত, তৈমূর আলম সেই পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগই দলের কারণে পাননি। দল তাঁকে কেন এত হেলাফেলা করে, সেটি বোধগম্য নয়। নারায়ণগঞ্জের মেয়রকে অনেক দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হয়। এখানে কাজে নানা প্রতিবন্ধকতা, জটিলতা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সে কারণেই নারায়ণগঞ্জের সাধারণ ভোটাররা আবেগের বশবর্তী হয়ে নয়; বরং নারায়ণগঞ্জের জটিল বাস্তবতার অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখে মেয়র পদে তাঁকেই বসাবেন, যিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা, নানা ধরনের সমস্যা দূরীকরণে যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারবেন।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি, পৌর নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের
০৭ জানুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি, পৌর নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের
০৭ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি, পৌর নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের
০৭ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইউপি, পৌর নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের
০৭ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫