Ajker Patrika

আলু নিয়ে কৃষকের কান্না

বরগুনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৪৬
আলু নিয়ে কৃষকের কান্না

হিমাগার ও ক্রেতার অভাবে বরগুনায় খেতেই নষ্ট হয়ে যেতে শুরু করেছে আলু। লাভের আশায় থাকা বরগুনার আলুচাষিরা এখন লোকসানের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, পাইকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামার বাড়ি) তথ্যমতে, এ বছর বরগুনা জেলায় মোট এক হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে আলু আবাদ হয় এক হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে।

জেলার সবচেয়ে বেশি আলু আবাদ হয় পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের রূপদোন ও কামারহাট এবং আশপাশের এলাকায়। কৃষি বিভাগের সহায়তা ও পরামর্শে এ বছর আলুর আশানুরূপ ফলন হয়েছে। মার্চ মাসের শেষে খেত থেকে আলু তোলা শুরু করেছেন চাষিরা।

গতকাল সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খেত থেকে আলু তুলে স্তূপ করে রেখেছেন চাষিরা। কয়েকজন আলু চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর গতবারের চেয়ে বেশি জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। প্রতিবছর দূর দুরান্ত থেকে পাইকার আসেন, কিনে নিয়ে যান আলু। কিন্তু এ বছর পাইকারদের তেমন সাড়া নেই। সময়মতো বিক্রি ও সংরক্ষণ করতে না পারায় স্তূপ করা আলুতে পচন ধরা শুরু হয়েছে। কোথাও আবার আলুর স্তূপে দেখা দিয়েছে ছত্রাকের আক্রমণ। এর ফলে ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

রুপদোন এলাকার আলু চাষি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এখানের অধিকাংশ আলু চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে মৌসুমি কৃষি ঋণ নিয়ে আলু চাষা করে। আমরা লাভের আশায় আলু চাষ করে এখন লোকসানের মুখে পড়েছি। এই আলু যদি বিক্রি করতে না পারি তবে কয়েক লাখ টাকার ঋণ শোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।’

পর চাষি জহির খান বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে এক মণ আলু এখন সাড়ে চার শ থেকে পাঁচ শ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। অথচ এর চেয়ে বেশি টাকা উৎপাদনে খরচ হয়েছে। এসব আলু সংরক্ষণের জন্য সরকারি বা বেসরকারি কোনো হিমাগার নেই। হিমাগার থাকলেও লোকসানের ভয় থাকত না। আমরা আমাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেলে পথে বসতে হবে।’

কামারহাট এলাকার আলু চাষি শুশীল চন্দ্র বলেন, ‘আমরা রাজধানীসহ খুলনা যশোর এলাকার পাইকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাড়া পাচ্ছি না। কৃষি বিভাগ আমাদের আলু বিক্রিতে সহায়তা না করলে লোকসানে পড়ে পথে বসতে হবে চাষিদের।’

একই অবস্থা জেলার আমতলী, বরগুনা সদর ও বামনা উপজেলার আলু চাষিদের। বামনা আলু চাষি আবদুল হামিদ বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে আলুর চাহিদা কম থাকায় দাম কম। এই দামে বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হবে। আমরা সরকারি ব্যবস্থাপনায় হিমাগার চাই। তাহলেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়েদুল আলম বলেন, ‘আলুচাষিদের উৎপাদিত আলু বিক্রির ক্ষেত্রে আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পাইকার আরতদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। ন্যায্যমূল্যে যাতে কৃষক আলু বিক্রি করতে পারেন সে ব্যাপারে আমরা সহায়তা করব। এ ছাড়াও স্থানীয় বাজারে আলু বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত