Ajker Patrika

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ২ ইউনিয়ন

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৩: ১৪
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ২ ইউনিয়ন

বিরামহীন ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে সরাইল-অরুয়াইল সড়কের একাংশ। ফলে উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দুই ইউনিয়নের।

এ ছাড়া নিচু এলাকার সকল বসতবাড়িতে প্রবেশ করেছে পানি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উপজেলার ৪ শতাধিক পরিবার। তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, উপজেলার ৩০০ পানিবন্দী পরিবারের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অর্থ ও চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রয়োজনে সেই বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের নিচু এলাকার বসতবাড়িগুলো পানিতে ভাসছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রবল বর্ষণ ও উজানের পানির কারণে ৩ থেকে ৪ দিন আগে সরাইলের তিতাস ও মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর, কাকরিয়া, রাণিদিয়া, ধামাউড়া, দুবাজাইল, পাকশিমুল ইউনিয়নের জয়ধরকান্দি, তেলিকান্দি, হরিপুর, ষাটবাড়িয়া, বরইছাড়া, ফতেহপুর, পরমানন্দপুর, শাহজাদাপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর, ধাউরিয়া, চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া, নতুনহাটি তারাখোলা দেওবাড়িয়া, বড়বুল্লা ও নরসিংহপুর, শাহবাজপুর ইউনিয়নের ক্ষমতাপুর ও পানিশ্বর এলাকার বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করে।

সরাইল-অরুয়াইল সড়কটি তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সরাইল উপজেলার সঙ্গে সড়কপথে পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নের যোগাযোগ। বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দুর্ভোগে পড়েছে ২ লক্ষাধিক মানুষ। না বাড়লেও এখনো পানি কমেনি। খুবই কষ্ট করে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করছে শিক্ষার্থীরা। কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে কালিকচ্ছ উত্তর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ক্ষমতাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধাউরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অরুয়াইলের ষোলাকান্দি মহিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুবাজাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকশিমুলের কালিশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেলিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভূঁইশ্বর পাতারহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুন্টার লোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আজবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘাগরাজোড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুন্টা পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসুলপুর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পানিশ্বরের টিঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কালিকচ্ছ উত্তর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজীজ বলেন, ‘মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় অপারগ হয়ে আপাতত ১৪টি স্কুল বন্ধ দিয়েছি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান বলেন, এখনো কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ দেয়নি। তবে যেকোনো সময় বন্ধ দিতে হতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৭০ থেকে ৮০ ভাগ কমে গেছে।

এ নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, উপজেলার ৩০০ পানিবন্দী পরিবারের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অর্থ ও চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রয়োজনে সেই বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত