Ajker Patrika

খুলনায় নষ্ট স্লুইসগেটে জলাবদ্ধতা

শামিমুজ্জামান, খুলনা
খুলনায় নষ্ট স্লুইসগেটে জলাবদ্ধতা

রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে অকার্যকর হয়ে পড়েছে খুলনার দুই শতাধিক স্লুইসগেট। এতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ধানসহ অন্য ফসলের আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্থানীয়রা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলেন, ‘কিছু গেট সংস্কার এবং নতুন করে কিছু স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’

নোনাপানি রোধে ষাটের দশকে খুলনা অঞ্চলে নির্মাণ করা হয় বেড়িবাঁধ, আর খালের পানি নিয়ন্ত্রণে নির্মাণ করা হয় স্লুইসগেট। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় কোনোটির গেট নেই, যেগুলোয় আছে তাও নষ্ট। আবার নদী-খালের নাব্যতা হ্রাস, গেটের মুখে পলি জমে যাওয়াসহ নানা কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি ভরাট হয়ে গেছে পানিনিষ্কাশনের খালও।

পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, জেলার ৫৯৮টির মধ্যে একেবারেই অকার্যকর ১১৬টি। শতাধিক কখনো কাজ করে, কখনো করছে না। ফলে এসব স্লুইসগেট দিয়ে পানিনিষ্কাশন ও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এ কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ধানসহ অন্য ফসলের আবাদ নিয়ে শঙ্কিত কৃষকেরা।

এ ব্যাপারে দাকোপের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘তাঁর এলাকায় স্লুইসগেট অকেজো দীর্ঘদিন ধরে। এ কারণে পানিপ্রবাহ ঠিকমতো হয় না। বর্ষা মৌসুমে পানি উঠলে, তা আর নামে না। এতে খেতের ফসল তলিয়ে যায়।’

পলি জমে জেলার দাকোপের তেঁতুলতলা এবং গনাইবাড়ি স্লুইসগেটে পানিনিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা ছবি।এদিকে বটিয়াঘাটার জলমা ইউনিয়নের বাসিন্দা হরেন্দ্র নাথ সেন বলেন, তাঁদের এলাকায় স্লুইসগেট অকেজো। এটি দিয়ে কোনো কাজ হয় না। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। অপরদিকে শুষ্ক মৌসুমে খালের পানি আটকে রাখার উপায় নেই। তখন পানির অভাবে জমিতে সেচ দেওয়া যায় না। আবার বর্ষা মৌসুমে নদীর পানিতে যাতে ফসল তলিয়ে না যায়, সেই বাধাও দেওয়া যায় না। গেট সচল থাকলে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যেত। তাতে এলাকার মানুষ উপকৃত হতো। বটিয়াঘাটা উপজেলার ভদ্রা নদীর সংযোগ খালের স্লুইসগেটের কপাট নষ্ট হওয়ায় জোয়ারের সময় পানি প্রবেশ করে সুরখালী বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে ওই এলাকার বাসিন্দা মারুফ জমাদ্দার বলেন, গেটের কপাট নষ্ট। কপাট ভালো থাকলে জোয়ারের সময় বন্ধ করে দিলে পানি প্রবেশ করতে পারত না। তাহলে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে জমিতে ফসল চাষ করা যাচ্ছে না। 
আলম সরদার বলেন, নষ্ট স্লুইসগেট দিয়ে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নদীতে পানির চাপ বেশি। বিলে পানি প্রবেশ করলে নামছে না। তিনি এটি মেরামতের দাবি জানান।

জানতে চাইলে খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. মোসাদ্দেক হোসনে বলেন, ‘বছরের পর বছর সংস্কার না করায় জেলার স্লুইসগেটগুলো অকেজো হচ্ছে আরও। খুলনার স্লুইসগেট অকেজো থাকায় জেলার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, কয়রা, পাইকগাছা, তেরখাদা উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

খুলনা পাউবোর নির্বাহী পরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, ‘নতুন করে স্লুইসগেট নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

চট্টগ্রামে হামলায় ‘নিরাপত্তাহীন’ পুলিশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত