Ajker Patrika

আফ্রিকাকে সাহায্য করতে এসেছে

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

ধুলার মেঘে ঢাকা পথ দেখতে দেখতে অজান্তেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল—এখানে এখনো কিছু বনাঞ্চল অক্ষত রয়ে গেছে। গতকাল আমি কেটে ফেলা গাছের গুঁড়ি এবং আগুনে পোড়া বনের মধ্য দিয়ে মাইলের পর মাইল গাড়ি চালিয়ে এসেছি। ১৯৫৬ সালেও আমার দেখা সবচেয়ে বিস্ময়কর বনভূমি এখানেই ছিল, যার সবই এখন ধ্বংস হয়ে গেছে। মানুষকে তো খেয়ে বাঁচতে হবে, জ্বালানির জন্য মানুষের কাঠ প্রয়োজন।

লন্ডনে শিক্ষকতা পেশায় জড়িত এক বন্ধুকে দেখতে আশির দশকের প্রথম দিকে উত্তর-পশ্চিম জিম্বাবুয়েতে এসেছিলাম। আমরা বলতাম, বন্ধুটি ‘আফ্রিকাকে সাহায্য করতে এসেছে’। তাঁর মতো ভদ্র ও আদর্শবাদী একজন মানুষ এই স্কুলে এসে যা দেখেছে, তাতে সে মানসিকভাবে এতটাই বিষাদগ্রস্ত যে সেই অবসাদ কাটিয়ে ওঠা কষ্টকর।

স্কুলটি দেখতে স্বাধীনতার পর গড়ে ওঠা অন্য সব স্কুলের মতোই। ইটের পাশাপাশি চারটি ঘর, ধুলোয় ঢাকা; আর চার ঘরের কোনার দিকের অর্ধেকটা ঘর লাইব্রেরি। শ্রেণিকক্ষগুলোতে ব্ল্যাকবোর্ড আছে। কিন্তু চক রাখলে চুরি হয়ে যেতে পারে শঙ্কা থেকে আমার বন্ধুটি পকেটে চক রাখত। স্কুলে কোনো মানচিত্র বা গ্লোব নেই, পাঠ্যবই নেই; এমনকি লাইব্রেরিতেও ছাত্রছাত্রীদের পড়ার মতো কোনো বই নেই।

তবে হ্যাঁ, আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা মানুষদের লাইব্রেরির পরিত্যক্ত বিশাল ও ভারী ভারী কিছু বই সেখানে ছিল; গোয়েন্দা গল্প কিংবা ‘উইকেন্ড ইন প্যারিস’ কিংবা ‘ফেলিসিটি ফাইন্ডস লাভ’ জাতীয় কিছু বই। স্কুল প্রাঙ্গণের বুড়ো ঘাসগুলো খেয়ে একটি ছাগল বেঁচে থাকার চেষ্টা করত। প্রধান শিক্ষক স্কুল তহবিল আত্মসাৎ করায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আমাদের সবার মনেই একটা প্রশ্ন নাড়া দিয়েছিল, সবাই বিষয়গুলো দেখছে জেনেও এই মানুষগুলো এমন আচরণ করে কী করে?

আমার বন্ধুর হাতে কখনোই টাকা থাকত না। কারণ বেতন পাওয়ামাত্র ছাত্র, জনগণ, সহকর্মীরা তাঁর কাছ থেকে টাকা ধার নিলেও কখনো সেটা ফেরত দিত না। 

ব্রিটিশ সাহিত্যিক ডরিস লেসিং ২০০৭ সালে নোবেল পুরস্কার পান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত