Ajker Patrika

গাছ ও বাঁশে বিদ্যুতের খুঁটি

সাইফুল ইসলাম সানি, সখীপুর
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ৫০
গাছ ও বাঁশে বিদ্যুতের খুঁটি

সখীপুরে খোদ পৌর এলাকাতেই তাজা গাছ ও নড়বড়ে বাঁশের খুঁটি দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব খুঁটি ভেঙে বৈদ্যুতিক তার সড়কের পাশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ঝুলছে। আবার কোথাও কোথাও লতাপাতা জড়িয়ে আছে তারে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচাবাজারসংলগ্ন এলাকার মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এসব খুঁটি প্রতিস্থাপনের দাবি জানিয়ে এলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে শনিবার বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে হজরত শাহ কামাল (রহ.) সড়কের পাশে বসানো হয়েছে ১১ হাজার কেভি ভোল্টেজের ট্রান্সফরমার। ওই ট্রান্সফরমার থেকেই বৈদ্যুতিক খুঁটি না বসিয়ে শুধু বাঁশ দিয়ে তার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে ২৩০-২৫০ ভোল্টেজের এলটি লাইন (লো-টেনশন লাইন)। ওই লাইনের বেশির ভাগ জায়গায় তারের ভারে বাঁশগুলো হেলে পড়েছে।

কোথাও কোথাও ওই হেলে পড়া বাঁশকে অন্য বাঁশের ঠেকনা দিয়ে রাখা হয়েছে। রাস্তার পাশে নালা ও পুকুরের পানি ছুঁইছুঁই করছে এসব তার। কোথাও লতাপাতা জড়িয়ে আছে তারগুলোতে। প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে বাঁশের খুঁটিকে ভরসা করেই দেওয়া হয়েছে কয়েক শ বাসাবাড়ির বিদ্যুৎ-সংযোগ। লাইনের মধ্যবর্তী একটি জায়গায় গিয়ে দেখা যায় আরও ভয়ংকর চিত্র। সেখানে একটি তাজা আকাশমণি গাছকেই খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম হান্নান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুতের খুঁটির জন্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু খুঁটির ব্যবস্থা না করে কর্তৃপক্ষ বাঁশ বসিয়ে সংযোগ দিয়েছে। পাঁচ-ছয় বছর ধরে দেখছি এভাবেই চলছে। যতবারই খুঁটির কথা বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ শুধু অপেক্ষা করতে বলেছে। দ্রুতই খুঁটি স্থাপন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু আজও হয়নি।

সরেজমিনে গেলে ওই এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মনিরা বেগম বলেন, ‘আমার ছোট্ট দুটি সন্তানসহ স্থানীয় শিশুরা বেশির ভাগ সময় এখানেই খেলাধুলা করে। অথচ বিদ্যুতের তারগুলো শিশুদের হাতের নাগালে। তাই সবসময় চিন্তায় থাকি, এই বিপজ্জনক তারে কখন যেন কী হয়ে যায়!’

গৃহবধূ লাকি ও পপি আক্তার বলেন, ‘পৌরশহরের আবাসিক এলাকায় জীবিত গাছকেও খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এটি অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। এটি বিদ্যুৎ বিভাগের চরম গাফিলতি বলতে হবে। দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এই গাছ-বাঁশের খুঁটিগুলো পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে মনে করি।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সখীপুরের (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে খুঁটি বসানোর যাবতীয় কাজ প্রজেক্টের মাধ্যমে করা হয়। ইতিমধ্যে ওই সরবরাহ লাইনে খুঁটি স্থাপনের জন্য একটি প্রজেক্টের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে দেরি করছে। তবে ওই লাইনের ড্রয়িং সম্পন্ন হয়েছে। লাইনটি ঝুঁকিমুক্ত করতে দ্রুত খুঁটি বসানোর পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত