Ajker Patrika

নেত্রকোনায় হালট ভেঙে পুকুরে, চলাচল ব্যাহত

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
Thumbnail image

বহু বছরের পুরোনো হালট ভাঙতে ভাঙতে চলে গেছে পুকুরের পেটে। সামান্য যেটুকু অবশিষ্ট আছে, সেখানে উপড়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েকটি ফলদ গাছ। অথচ একসময় এই হালটই ছিল শিমুলজানি গ্রামের উত্তরপাড়া ও পূর্বের কাজিপাড়া গ্রামের মানুষের নেত্রকোনা জেলা সদরে যাওয়ার প্রধান রাস্তা। কয়েক বছর আগেই রাস্তাটি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এ কারণে গ্রামবাসীকে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

পুকুরটি নেত্রকোনা সদর উপজেলার শিমুলজানি গ্রামের উত্তরপাড়ায়। উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মোছা. রোকেয়া বলেন, তিনি ছোটবেলা দেখেছেন পুকুরটির উত্তর দিকে বড় গোপাট ছিল। দক্ষিণপাড়ে ঝোপঝাড় ছিল। পশ্চিমপাড়ও বেশ চওড়া ছিল। এখন উত্তর দিকে ভাঙতে ভাঙতে পুকুর এসে তাঁদের বাড়িতে ঢুকছে। পাড় কেউ বাঁধে না। এতে তাঁদের চলাচলে খুবই অসুবিধা হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে পশ্চিম দিকে যেতেই পারেন না।

প্রতিবেশী মুশফিকুর রহমান বলেন, উত্তরের পাড়টি তো পুকুরে গেছেই। এ কারণে মানুষের চলাচল বন্ধ। কেউ অসুস্থ হলেও একটা রিকশা পর্যন্ত এই দিকে চলাচল করতে পারে না। এর একটা স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় প্রশাসনের মাধ্যমে ২১ নম্বর দাগের হালটটি উদ্ধার করা।

গ্রামের বাসিন্দা সোহরাফ হোসেন ও সোহাগ মিয়া বলেন, এমনিতে এই গ্রামের কাঁচা রাস্তা। বর্ষাকালে কাদার কারণে মানুষের চলাচলে দুর্গতির সীমা থাকে না। তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে পাকা রাস্তার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এদিকে উত্তরপাড়ায় এসে রাস্তা নাই হয়ে যায়।

এই পুকুরে এখন মাছ চাষ করেন হরিনাথের নাতি স্বপন কুমার দাস ফুলু। তিনি বলেন, পুকুরটি তাঁর দাদু হরিনাথ দাস ও রামনাথ দাসের দিক থেকে পাওয়া। ঠাকুররাই তাঁদের লিখে দিয়ে গেছেন।

পুকুরটির আয়তন ৮১ শতাংশ। পুকুরের পাড় ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বপন কুমার দাস ফুলু বলেন, পুকুর তো ভাঙবেই। তিনি তো আর ইচ্ছা করে ভাঙেন না। আর গোপাট তো ছিলই। সেটি সরকার এসে উদ্ধার করুক। তাতে তো তাঁর কোনো আপত্তি নেই।

এদিকে ২১ নম্বর দাগটি উদ্ধারে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে সম্প্রতি সদর ভূমি অফিসে আবেদন করা হয়। তখন সার্ভেয়ার গিয়েছিলেন। কিন্তু হালটটি উদ্ধার হয়নি।

ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া বলেন, ‘পাশের বাড়িঘর, জমি ভেঙে পুকুরে পড়ে গেছে। সরকারি হালট দিয়ে চলাচল করত মানুষ, এটিও পুকুরে বিলীন হয়েছে। কয়েক দিন আগে ওই রাস্তা উদ্ধারে এলাকার লোকজন নিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু পুকুরের মালিক স্বপন কুমার দাস রাস্তা উদ্ধারে বাধা দিয়েছে।’

ইউপি চেয়ারম্যান আলী আহসান সুমন বলেন, ‘রাস্তা ভেঙে পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকার মানুষ চলাচল করতে পারছে না। জনগণের স্বার্থে এবার আমি ওই রাস্তা যে করেই হোক উদ্ধার করবই। কারও বাধা শুনব না।’

বিষয়টি অবহিত করলে নেত্রকোনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘যেহেতু ভুক্তভোগীরা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত