Ajker Patrika

উপকূলীয় এলাকার ৮০ শতাংশ বাঁধই দুর্যোগ মোকাবিলায় অনুপযোগী: সেমিনারে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
১০টি সংস্থার আয়োজনে ‘জলবায়ু বাজেট ও বাংলাদেশের উপকূল’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি: আজকের পত্রিকা
১০টি সংস্থার আয়োজনে ‘জলবায়ু বাজেট ও বাংলাদেশের উপকূল’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপকূলে দুর্যোগ সহনশীল কংক্রিটের টেকসই বাঁধ দেওয়ার ও গতানুগতিক বরাদ্দের বাইরে পৃথক (১০-১২ হাজার কোটি টাকা) বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা বলেছেন, প্রতিবছর দুর্যোগে বাঁশের বেড়া ও চট দিয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বাঁধরক্ষার দৃশ্য প্রমাণ করে উপকূলীয় বাঁধগুলো দুর্যোগ মোকাবিলায় কতটা অক্ষম।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ বুধবার দুপুরে ‘জলবায়ু বাজেট ও বাংলাদেশের উপকূল’ শীর্ষক সেমিনারে আলোচকেরা এসব কথা বলেন। কোস্ট ফাউন্ডেশন, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশসহ ১০টি সংস্থার আয়োজনে এই সেমিনার হয়।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ বাঁধই দুর্যোগ মোকাবিলায় অনুপযোগী। এসব বাঁধের উচ্চতা অনেক কম এবং মানসম্মত মেরামত ও ব্যবস্থাপনা নিয়মিত হয় না। যে কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস-জোয়ার ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি মোকাবিলায় মানসম্মত উচ্চতার কংক্রিটের টেকসই বাঁধের প্রয়োজন। বর্তমানে উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ ও পোল্ডারের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৭৫৪ কিলোমিটার (সরকারি হিসাব)। উপকূলে এই মুহূর্তে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার টেকসই বাঁধ প্রয়োজন। সব বাঁধ আগামী ১০ বছরের মধ্যে টেকসইভাবে নির্মাণ করতে হলে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন।

সেমিনারে দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রফিকুল আলম বলেন, বাজেটে জীবন-জীবিকাকে প্রাধান্য দিতে হবে। উপকূলের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে কৃষি, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য, পানি উন্নয়ন বোর্ড সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মানবিক উন্নয়ন ছাড়া শুধু অবকাঠামো বানালে সেটা অর্থবহ হবে না।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘আমাদের ন্যূনতম জিডিপির তিন শতাংশ বাজেট দিতে হবে। বাজেট করার ক্ষেত্রে উপকূলকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘ভবিষ্যতে একটা টার্ম জনপ্রিয় হয়ে উঠবে, সেটা হলো, ক্লাইমেট পলিটিকস। এটা সামনের দিনে তরুণদের রাজনীতির পলিসি নির্ধারণে ভূমিকা পালন করবে। হাসিনার আমলে উন্নয়নের নামে পরিবেশবিধ্বংসী বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখলাম ওই প্রকল্পগুলো এখনো চলমান আছে।’

কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক আমিনুর রসূল বাবুল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের (বিসিজেএফ) সভাপতি কাওসার রহমান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত