Ajker Patrika

ভরা শীতেও তুষার নেই কাশ্মীরে, পর্যটক কমে অর্ধেকে

ভরা শীতেও তুষার নেই কাশ্মীরে, পর্যটক কমে অর্ধেকে

ভরা শীতের মৌসুমে ভূ-স্বর্গ খ্যাত ভারতে কাশ্মীরে কোনো তুষার পড়ছে না। জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ বিদায় নেওয়ার পথে; এমন সময়ে তুষারের স্তুপে ঢাকা থাকত পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় শহর গুলমার্গ। এই সময়ে একমাসের বেশি সময় ধরে ব্যাপক তুষারপাত থাকে। গুলমার্গের পর্বত ও হিমবাহ বরফে ঢেকে যায়। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারে অন্যরকম।

সরকারি কর্তৃপক্ষের বরাতে বিবিসি বলছে, গত বছরের জানুয়ারিতে কাশ্মীরে এক লাখ পর্যটকের সমাগম ছিল। কিন্তু এবার সেই সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমেছে।

মনোরম শহর গুলমার্গে ১৭ বছর ধরে হোটেল ব্যবসা করছে মঞ্জুর আহমেদ। এই সময়ে তিনি তুষারহীন কোনো মৌসুম দেখেননি। কিন্তু সেখানকার তুষার ঢাকা পর্বতগুলো এখন অদ্ভুত রকমের বাদামি আর শুষ্ক।

এমন দৃশ্যকে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন ৫০ বছর বয়সী মঞ্জুর। তিনি বলেন, এই অবস্থায় পর্যটকরাও হোটেল বুকিং বন্ধ করে দিয়েছেন।

কাশ্মীরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর হাজারো পর্যটকের সমাগম হয়। শীতকালে স্কিইং আর দৃষ্টিনন্দন রূপে আপ্লুত হন পর্যটকরা। কিন্তু তুষারহীন মরুময় কাশ্মীর পর্যটক টানতে পারেনি।

আগামী ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মরুময় শুষ্ক পরিস্থিতি বজায় থাকবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। কাশ্মীরের সংবাদমাধ্যমে গুড মর্নিং কাশ্মীর এ তথ্য দিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন উদ্বিগ্ন পরিবেশবাদীরা ও বিশেষজ্ঞরা। শীতকালে তুষার না পড়লে কাশ্মীর উপত্যকার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে বলে তাঁদের আশঙ্কা। তাঁরা বলেছেন, কাশ্মীরের জন্য কঠিন সময়ের সাক্ষী হয়ে থাকবে এবারের তুষারহীন শীতকাল।

কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও পরিবেশবিদ ডক্টর মুহাম্মদ মুসলিম বলেন, তুষারপাত ছাড়া কাশ্মীরের শীতকাল অকল্পনীয়, এটা কেয়ামতের দৃশ্যের মতো। এর ফলে এই অঞ্চলের পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এটি নদীর প্রবাহ কমিয়ে দেবে। সুপেয় পানিসহ কৃষি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর পানির স্তর কমে যাবে।

এছাড়া শীতের মৌসুমে তুষার সঞ্চয় কম হলে গরম মৌসুমে সামগ্রিক পানির প্রাপ্যতাকে প্রভাবিত করতে পারে। ফলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রাসহ সার্বিক জীববৈচিত্র্যে এবং কৃষিতে বড় প্রভাব পড়তে পারে।

কৃষি বিজ্ঞানী ড. আমজাদ এম হুসাইনি বলেন, তুষারপাত ও বৃষ্টিপাত ছাড়া শীতকাল ভবিষ্যতের জন্য খুব খারাপ হবে। কারণ, তুষারপাত গাছপালার বিকাশ নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। আর বৃষ্টিপাত না হলে তা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তুষারপাত না হওয়ার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব খুবই গুরুতর হবে। এমনিতেই হিমবাহ কমে যাচ্ছে এবং কার্বন নিঃসরণ বাড়ছে, যা পরিবেশের বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। সঙ্গে সঙ্গে বনও উজাড় হচ্ছে। আগামী দশকের মধ্যে বনায়ন অগ্রাধিকার না পেলে পরিবেশে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এই মাসের শেষ নাগাদ কিছু তুষারপাত হতে পারে বলে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী। তবে এই মুহূর্তে পরিস্থিতি ভালো নয়। এবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো বৃষ্টিপাত নেই। এর আগে ডিসেম্বরে ৭৯ শতাংশ ও নভেম্বের ৮০ শতাংশ বৃষ্টিপাত কম হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত