Ajker Patrika

তিন সুপারস্টারেও ফ্লপ, ৩৪ বছর আগে যে সর্বভারতীয় ছবি প্রযোজককে দেউলিয়া বানিয়েছিল

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২১: ৪২
সুপার ফ্লপ শান্তিক্রান্তি সিনেমার অভিনেতা রজনীকান্ত, রবিচন্দ্রন, জুহি চাওলা ও নাগার্জুন। ছবি: সংগৃহীত
সুপার ফ্লপ শান্তিক্রান্তি সিনেমার অভিনেতা রজনীকান্ত, রবিচন্দ্রন, জুহি চাওলা ও নাগার্জুন। ছবি: সংগৃহীত

প্যান-ইন্ডিয়া বা সর্বভারতীয় শব্দবন্ধটি সাম্প্রতিককালে ভারতীয় সিনেমাজগতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে দেখা যাচ্ছে; বিশেষ করে মুম্বাই ও দক্ষিণের কলাকুশলী ও নির্মাতা-প্রযোজকদের সংশ্লিষ্টতা আছে এমন সিনেমার প্রচারে এটি এখন বেশ জনপ্রিয় শব্দ।

কিন্তু এ ধরনের ছবি হালের জনপ্রিয় শব্দবন্ধটির জন্মের আগেও ছিল। বহু প্যান-ইন্ডিয়া ছবি বক্স অফিসে সাফল্যও পেয়েছে। তবে এমন কিছু ছবিও রয়েছে, যেগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছিল। তেমনই একটি ছবি ১৯৯১ সালে মুক্তি পেয়েছিল। এই ছবিতে সেই সময়ের তিন বড় তারকা অভিনয় করেছিলেন। চারটি ভাষায় নির্মিত হয়েছিল ছবিটি। কিন্তু বক্স অফিসে এতটাই ব্যর্থ হয়েছিল যে নির্মাতা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন!

১৯৮৮ সালে কন্নড় অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ভি. রবিচন্দ্রন একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল এমন একটি ছবি বানাবেন, যা ভারতের সব ভাষা ও দর্শকের কাছে পৌঁছাবে। ‘শান্তিক্রান্তি’ নামের এই ছবি একই সঙ্গে কন্নড়, তামিল, তেলুগু ও হিন্দি ভাষায় নির্মিত হয়েছিল।

রবিচন্দ্রন নিজেই ছবিটির কাহিনি লিখেছেন, প্রযোজনা ও পরিচালনাও করেছেন। কন্নড় সংস্করণে তিনি নিজে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, যেখানে তেলুগু সংস্করণে নাগার্জুন মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। রজনীকান্তকে তামিল ও হিন্দি সংস্করণের প্রধান চরিত্রে নেওয়া হয়েছিল। জুহি চাওলা, খুশবু ও অনন্ত নাগ চারটি ভাষাতেই অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

ছবিটি নির্মাণে খরচ হয়েছিল ১০ কোটি রুপি। সেই সময়ের হিসাবে এটি কিন্তু বিশাল বাজেট! বাজেটে ‘আজুবা’ (৮ কোটি রুপি) ছবির রেকর্ড ভেঙে দিয়ে এটি সেই সময়ের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভারতীয় ছবির তকমা পায়।

‘শান্তিক্রান্তি’ ১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বরে কন্নড় ও তেলুগু ভাষায় মুক্তি পায়। এর দুই সপ্তাহ পর বাকি দুটি ভাষায়ও মুক্তি পায়। কিন্তু সিনেমাজগতে সেটি এক এক বড় বিপর্যয়! রজনীকান্ত, নাগার্জুন ও জুহির মতো তিনজন তারকার উপস্থিতি সত্ত্বেও ছবিটি কোনো ভাষাতেই ভালো ওপেনিং করতে পারেনি।

প্রযোজনা বাজেট এতটাই বেড়ে গিয়েছিল, বক্স অফিসের আয় দিয়ে তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব ছিল না। শেষ পর্যন্ত ‘শান্তিক্রান্তি’ চারটি সংস্করণ মিলিয়ে মোট ৮ কোটি রুপি আয় করে। অতিরিক্ত প্রচারের খরচ মিলিয়ে এটি সেই সময়ে ভারতে সবচেয়ে বড় বক্স অফিস বিপর্যয় হিসেবে পরিচিতি পায়।

রবিচন্দ্রন ‘শান্তিক্রান্তি’ নির্মাণ করতে জীবনের সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। ছবিটির ক্লাইমেক্স দৃশ্যের শুটিংয়ের জন্য তিনি ৫০ একরের একটি খালি জমি ইজারা নিয়েছিলেন। এ ছাড়া ভিএফএক্স ও বিশাল সেট তৈরিতে প্রচুর অর্থ খরচ করেছিলেন। তিনি পরে হিসাব করেছিলেন, এই প্রকল্পের কারণে ১৯৮৯-৯০ সালে তাঁর ১০ কোটি রুপি এবং মুক্তির পর আরও বেশি লোকসান হয়েছিল।

রবিচন্দ্রন পরে বলেছিলেন, এই ছবি তাঁকে এতটাই আর্থিক কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল যে তিনি দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন। ক্ষতি পোষাতে হিট তামিল ও তেলুগু ছবির রিমেক বানাতে বাধ্য হন তিনি। নব্বইয়ের দশকে এই বি-গ্রেডের রিমেকগুলোই তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত