Ajker Patrika

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

শেখ সাদী
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ৫৯
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর সদর উপজেলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) যাত্রা শুরু হয়। সে হিসাবে এ বছর দেড় যুগে পদার্পণ করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এই স্বল্প সময়ে শিক্ষা-গবেষণা, ক্রীড়া, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে অন্যান্য স্থান দখল করে নিয়েছে এই বিদ্যাপীঠ। এত কিছুর পরও ডাইনিং সমস্যা, হলে নিম্নমানের খাবার, ক্যাফেটেরিয়ার অব্যবস্থাপনা, পরিবহন সংকট, ২৪ ঘণ্টা জরুরি চিকিৎসাসেবা, ছোট আয়তনের ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন সংকট রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির। দেড় যুগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। গ্রন্থনা করেছেন শেখ সাদী

শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী শক্তিকে প্রাধান্য দিতে হবে
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বসয় কম হলেও গবেষণা, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন মানদণ্ডে এগিয়ে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে দেশসেরাও হয়েছে—এই প্রাপ্তি গর্বের। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করি, শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে। এখানে সিজিপিএ বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়, ফলে শিক্ষার্থীরা সিজিপিএর পেছনে ছুটে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ মেধায় বিকশিত হওয়ার সুযোগ কম পায়। সুতরাং প্রত্যাশা থাকবে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা যেন স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পায়, সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা যেন সব সময় শিক্ষার্থীবান্ধব ও গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে শিক্ষার্থীদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করে এবং শিক্ষার্থীরাও যেন পড়াশোনার পাশাপাশি স্বাধীনভাবে মুক্তচিন্তারা মাধ্যমে সব অন্যায়-অনিয়মে আপসহীন থেকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে।
মেহেদী হাসান, শিক্ষার্থী, ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

রাশেদ খান, শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ।শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষকদের পাঠ মূল্যায়ন সময়ের দাবি
স্নাতক শেষে শিক্ষার্থীদের চাকরি পাওয়া, উচ্চশিক্ষার জন্য উন্নত দেশে গমন কিংবা গবেষণার হার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈর্ষণীয়ভাবে বেশি। তবে এত প্রাপ্তির মধ্যেও কিছু হতাশা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলেও উচ্চ ফি, ডাইনিং সমস্যা, ক্যাফেটেরিয়ার অব্যবস্থাপনা, পরিবহন সংকট, ২৪/৭ ইমার্জেন্সি চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার মতো কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় রাজনীতির প্রভাব কমিয়ে ক্যাম্পাসকে শিক্ষার্থীবান্ধব করতে বর্তমান উপাচার্য সফল হয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কোনো শিক্ষার্থীর জীবন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি বলে মনে করছি। যবিপ্রবির দেড় যুগ পূর্তিতেও একটি অ্যালামনাই গঠিত না হওয়াটা অপ্রত্যাশিত। যবিপ্রবির দেড় যুগের এই নিরন্তর পথচলায় অপ্রাপ্তির চেয়ে প্রাপ্তির পাল্লাটি অনেক বেশি ভারী বলেই মনে হয়।
রাশেদ খান, শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ।

নাইম জামান, শিক্ষার্থী, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগশিক্ষার্থীদের গবেষণায় উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রত্যাশা শিক্ষা, গবেষণা ও পরিবেশের দিক থেকে আরও এগিয়ে যাক দুর্বার গতিতে। ক্যাম্পাসের সীমানা বাড়ানো, ভেতরে সুন্দর কিছু বসার জায়গা, শিক্ষার্থী আর শিক্ষকদের মধ্যে সুসম্পর্ক, গবেষণা খাতে আরও অনুদান বাড়ানো, শিক্ষার্থীদের গবেষণা করার আরও সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা, ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন, হলগুলোর সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদি সুবিধা সামনের দিনে শিক্ষার্থীরা পাবে বলে আমার প্রত্যাশা। বর্তমান উপাচার্য নিজ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষার মান ও গবেষণায় ব্যাপক উন্নতি ঘটিয়েছেন। তবে পুরোদমে টিএসসি চালু হলে তা শিক্ষার্থীদের মনোজাগতিক বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। একজন গর্বিত যবিপ্রবিয়ান হিসেবে আমার একটিই আশা, আগামীর বিশ্ব বাংলাদেশের হোক, আগামীর বাংলাদেশ যবিপ্রবির হোক।
নাইম জামান, শিক্ষার্থী, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

রাকিব হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসবকিছুর সুস্থ চর্চা হোক
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও সংস্কৃতিচর্চায়ও অনেক এগিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে গবেষণামূলক লেখাপড়া তো রয়েছেই। তার পরও কিছু সময় তার ব্যত্যয় ঘটে, আবার রাজনৈতিক চর্চায় নেতাদের শিক্ষার্থীবান্ধব, সহনশীল আচরণ যেন আরও ভালোভাবে পরিলক্ষিত হয় এই ক্যাম্পাসে। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা জাতির মনন বিকাশে সাহায্য করে, ক্যাম্পাসের এই সংস্কৃতিচর্চা যেন কখনোই অশ্লীলতাকে প্রসার না করে তার সুস্থ চর্চা হোক। শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা দ্রুত নিরসন হোক, খাবারের কোয়ালিটি নিয়ে জিরো টলারেন্স নীতি চালু হোক। সবার মাঝে এক ভ্রাতৃত্ববোধ থাকুক, যবিপ্রবি আমাদের একটা পরিচয় দিয়েছে, আমরা যেন সেই পরিচয়ের মূল্য দিতে পারি। দেড় যুগে যবিপ্রবির কাছে একটাই চাওয়া, সবকিছুর সুস্থ চর্চা হোক।
রাকিব হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

সুহরাত তাহসিন, শিক্ষার্থী, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।খাবারের মান উন্নত চাই
স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে একটা বৃহত্তর জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করি। বিশ্ববিদ্যালয় শব্দের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে এর সুন্দর অর্থ। তা হলো: এখানকার শিক্ষার্থীরা হবে বিশ্বমানের, তারা আগামীর ভবিষ্যৎ এবং জাতির চালিকাশক্তি হিসেবে নিয়োজিত হবে। যবিপ্রবির বয়স দেড় যুগ হলেও এখানকার ক্যাফেটেরিয়া এখনো উন্নতমানের পরিবেশব্যবস্থা এবং খাবারের মানের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তার শিক্ষামানের পাশাপাশি ক্যাফেটেরিয়া ও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় বহন করে। কাজেই আমার মনে হয় আমাদের ক্যাফেটেরিয়াকে আরও সুন্দর ও শিক্ষার্থীবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে, পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দ্বারা এর সুষ্ঠু পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
সুহরাত তাহসিন, শিক্ষার্থী, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত