রাতুল সাহা
পেইন্টিং বললেই চোখে ভেসে ওঠে রংতুলি আর ক্যানভাসের দৃশ্য। তবে রঙিন কাঠের ছোট ছোট ব্লক দিয়েও সৃষ্টি করা যায় চমৎকার সব শিল্পকর্ম। ব্লকগুলো কাজ করে ডিজিটাল পিক্সেলের মতো—যেকোনো অবয়ব কিংবা দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা যায় এগুলোর মাধ্যমে। এমনই এক নতুন ধারার শিল্পচর্চায় যুক্ত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই ভাই, যাঁরা গড়ে তুলেছেন ‘পিক্সেল স্টুডিও’ নামের একটি ব্যতিক্রম প্ল্যাটফর্ম। তাঁরা হলেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মেহরাজ হোসেন শাওন এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মন হোসেন রাতুল। তাঁদের গল্প তুলে ধরা হলো।
শুরু যেভাবে
ছোটবেলা থেকেই শাওনের নতুন কিছু বানানোর ঝোঁক ছিল। ঘুড়ি, প্লেন, পাথর, মাটি দিয়ে নানা জিনিস বানিয়ে সময় কাটাতেন। উচ্চমাধ্যমিকের পর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার আগ্রহ থাকলেও সেই সুযোগ পাননি। তবে ‘হাতে কিছু করা যায়’—এমন ভাবনা থেকেই ভর্তি হন স্থাপত্য বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে থাকাকালে শাওন কাঠের ব্লক দিয়ে একবার রবীন্দ্রনাথের একটি পোর্ট্রেট তৈরি করেন। সে সময় দেশে চলছিল করোনা লকডাউন। তাঁর বাবার ব্যবসায়ে বড় ধরনের ক্ষতি হয়, এরপর বাবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হন। একপর্যায়ে পরিবার পড়ে যায় অর্থনৈতিক সংকটে। তখন শাওনের বড় বোন তাঁকে সেই পোর্ট্রেট বিক্রির পরামর্শ দেন। কারণ, প্রচলিত চিত্রকলা যেমন সাধারণ, তেমনি বিক্রিও কঠিন—কিন্তু ব্লকে তৈরি এই শিল্পকর্ম ছিল নতুন ও ব্যতিক্রমধর্মী।
অন্যদিকে, তাঁর ছোট ভাই রাতুলেরও ছোটবেলা থেকে আঁকাআঁকির ব্যাপক ঝোঁক ছিল। আয়রনম্যান, স্পাইডার-ম্যানের মতো ফ্যান্টাসি চরিত্র আঁকা আর কাগজ দিয়ে কিছু বানিয়ে কাটত তার দিন। ভাইয়ের প্রেরণায় এবং পরিবারের সবার পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছায় রাতুলও যুক্ত হন এই উদ্যোগে।
স্বপ্ন থেকে ব্যবসা
২০২১ সালের জুন মাসে মাত্র ১০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে দুই ভাই শুরু করেন কাজ। প্রথমে একটিমাত্র ডিজাইন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ধীরে ধীরে অর্ডার আসতে থাকে, সেখান থেকে অর্জিত অর্থ আবার ব্যবসায় পুনর্বিনিয়োগ করেন। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বাড়ে; কিন্তু পড়াশোনার চাপ থাকায় কাজ বন্ধ রাখতে হতো পরীক্ষার সময়। এতে অনেক সময় গ্রাহকেরা হতাশ হতেন।
প্রথমে নিজেদের বেডরুমেই কাজ করতেন দুই ভাই। পরে বুঝতে পারেন, ব্যবসা বাড়াতে হলে কর্মী নিতে হবে। শুরু হয় একটি ছোট কারখানায় যাত্রা। সেখানে কয়েকজন নারী কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। শুরুর দিকে তাঁরা কাজ বুঝতে না পারায় কিছু সমস্যা হলেও কয়েক মাসের মধ্যে তাঁরা দক্ষ হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তাঁদের তৈরি শিল্পকর্ম জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ মিলিটারি মিউজিয়াম, ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট, ব্রুভানা গ্রুপসহ দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানে।
ব্যবসার ধরন
সায়মন হোসেন রাতুল বলেন, ‘আমাদের ব্যবসাটি মূলত একটি আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফটভিত্তিক উদ্যোগ। আমরা প্রথমে থ্রিডি মডেল তৈরি করি, তারপর করাতকল থেকে কাঠের অতিরিক্ত টুকরাগুলো কেটে আনি। এরপর সেগুলো রং করে প্লাইউডের ওপর বিভিন্ন আকৃতি বসাই। এগুলো দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা যায়; যা দেখতে অনেকটা থ্রিডি পেইন্টিংয়ের মতো।’ তাঁরা বলেন, ‘পিক্সেল স্টুডিও’ নামটি এসেছে এ ধারণা থেকে—ছোট ছোট ব্লক দিয়ে যেকোনো দৃশ্য উপস্থাপন, ঠিক যেমন ডিজিটাল পিক্সেল করে। এ ছাড়া তাঁদের ‘সাউন্ড ডিফিউজার’ নামে আরও একটি সেক্টর রয়েছে,
যা সাউন্ড ইকো রোধে কার্যকর। ইউরোপে এই শিল্পধারা জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে একমাত্র তাঁরাই এটি তৈরি করছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
দুই ভাইয়ের ভাষ্য, ‘আমরা পিক্সেল স্টুডিওকে আরও বিস্তৃত করতে চাই। চাই আমাদের তৈরি শিল্পকর্ম বাংলাদেশের প্রত্যেক শিল্পপ্রেমীর ঘরের দেয়ালে শোভা পাক।’ তাঁরা চান বাসা কিংবা অফিস—সবখানে এই শিল্পের উপস্থিতি ঘটুক। পরিকল্পনা রয়েছে নতুন কর্মী নিয়োগ, প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদনপ্রক্রিয়ার উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির। সেই সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ তৈরিরও উদ্যোগ নিচ্ছেন তাঁরা।
পেইন্টিং বললেই চোখে ভেসে ওঠে রংতুলি আর ক্যানভাসের দৃশ্য। তবে রঙিন কাঠের ছোট ছোট ব্লক দিয়েও সৃষ্টি করা যায় চমৎকার সব শিল্পকর্ম। ব্লকগুলো কাজ করে ডিজিটাল পিক্সেলের মতো—যেকোনো অবয়ব কিংবা দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা যায় এগুলোর মাধ্যমে। এমনই এক নতুন ধারার শিল্পচর্চায় যুক্ত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই ভাই, যাঁরা গড়ে তুলেছেন ‘পিক্সেল স্টুডিও’ নামের একটি ব্যতিক্রম প্ল্যাটফর্ম। তাঁরা হলেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মেহরাজ হোসেন শাওন এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মন হোসেন রাতুল। তাঁদের গল্প তুলে ধরা হলো।
শুরু যেভাবে
ছোটবেলা থেকেই শাওনের নতুন কিছু বানানোর ঝোঁক ছিল। ঘুড়ি, প্লেন, পাথর, মাটি দিয়ে নানা জিনিস বানিয়ে সময় কাটাতেন। উচ্চমাধ্যমিকের পর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার আগ্রহ থাকলেও সেই সুযোগ পাননি। তবে ‘হাতে কিছু করা যায়’—এমন ভাবনা থেকেই ভর্তি হন স্থাপত্য বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে থাকাকালে শাওন কাঠের ব্লক দিয়ে একবার রবীন্দ্রনাথের একটি পোর্ট্রেট তৈরি করেন। সে সময় দেশে চলছিল করোনা লকডাউন। তাঁর বাবার ব্যবসায়ে বড় ধরনের ক্ষতি হয়, এরপর বাবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হন। একপর্যায়ে পরিবার পড়ে যায় অর্থনৈতিক সংকটে। তখন শাওনের বড় বোন তাঁকে সেই পোর্ট্রেট বিক্রির পরামর্শ দেন। কারণ, প্রচলিত চিত্রকলা যেমন সাধারণ, তেমনি বিক্রিও কঠিন—কিন্তু ব্লকে তৈরি এই শিল্পকর্ম ছিল নতুন ও ব্যতিক্রমধর্মী।
অন্যদিকে, তাঁর ছোট ভাই রাতুলেরও ছোটবেলা থেকে আঁকাআঁকির ব্যাপক ঝোঁক ছিল। আয়রনম্যান, স্পাইডার-ম্যানের মতো ফ্যান্টাসি চরিত্র আঁকা আর কাগজ দিয়ে কিছু বানিয়ে কাটত তার দিন। ভাইয়ের প্রেরণায় এবং পরিবারের সবার পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছায় রাতুলও যুক্ত হন এই উদ্যোগে।
স্বপ্ন থেকে ব্যবসা
২০২১ সালের জুন মাসে মাত্র ১০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে দুই ভাই শুরু করেন কাজ। প্রথমে একটিমাত্র ডিজাইন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ধীরে ধীরে অর্ডার আসতে থাকে, সেখান থেকে অর্জিত অর্থ আবার ব্যবসায় পুনর্বিনিয়োগ করেন। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বাড়ে; কিন্তু পড়াশোনার চাপ থাকায় কাজ বন্ধ রাখতে হতো পরীক্ষার সময়। এতে অনেক সময় গ্রাহকেরা হতাশ হতেন।
প্রথমে নিজেদের বেডরুমেই কাজ করতেন দুই ভাই। পরে বুঝতে পারেন, ব্যবসা বাড়াতে হলে কর্মী নিতে হবে। শুরু হয় একটি ছোট কারখানায় যাত্রা। সেখানে কয়েকজন নারী কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। শুরুর দিকে তাঁরা কাজ বুঝতে না পারায় কিছু সমস্যা হলেও কয়েক মাসের মধ্যে তাঁরা দক্ষ হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তাঁদের তৈরি শিল্পকর্ম জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ মিলিটারি মিউজিয়াম, ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট, ব্রুভানা গ্রুপসহ দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানে।
ব্যবসার ধরন
সায়মন হোসেন রাতুল বলেন, ‘আমাদের ব্যবসাটি মূলত একটি আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফটভিত্তিক উদ্যোগ। আমরা প্রথমে থ্রিডি মডেল তৈরি করি, তারপর করাতকল থেকে কাঠের অতিরিক্ত টুকরাগুলো কেটে আনি। এরপর সেগুলো রং করে প্লাইউডের ওপর বিভিন্ন আকৃতি বসাই। এগুলো দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা যায়; যা দেখতে অনেকটা থ্রিডি পেইন্টিংয়ের মতো।’ তাঁরা বলেন, ‘পিক্সেল স্টুডিও’ নামটি এসেছে এ ধারণা থেকে—ছোট ছোট ব্লক দিয়ে যেকোনো দৃশ্য উপস্থাপন, ঠিক যেমন ডিজিটাল পিক্সেল করে। এ ছাড়া তাঁদের ‘সাউন্ড ডিফিউজার’ নামে আরও একটি সেক্টর রয়েছে,
যা সাউন্ড ইকো রোধে কার্যকর। ইউরোপে এই শিল্পধারা জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে একমাত্র তাঁরাই এটি তৈরি করছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
দুই ভাইয়ের ভাষ্য, ‘আমরা পিক্সেল স্টুডিওকে আরও বিস্তৃত করতে চাই। চাই আমাদের তৈরি শিল্পকর্ম বাংলাদেশের প্রত্যেক শিল্পপ্রেমীর ঘরের দেয়ালে শোভা পাক।’ তাঁরা চান বাসা কিংবা অফিস—সবখানে এই শিল্পের উপস্থিতি ঘটুক। পরিকল্পনা রয়েছে নতুন কর্মী নিয়োগ, প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদনপ্রক্রিয়ার উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির। সেই সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ তৈরিরও উদ্যোগ নিচ্ছেন তাঁরা।
বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর কাছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা এক দূরাহত স্বপ্ন, বিশেষ করে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে। তবে সৌদি সরকার সম্প্রতি যে ৭০০টি পূর্ণ অর্থায়িত আন্তর্জাতিক বৃত্তির ঘোষণা দিয়েছে, তা বদলে দিতে পারে অনেকের ভবিষ্যৎ।
১২ ঘণ্টা আগে২০২৫ সাল যেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) জন্য এক অনন্য অর্জনের বছর। বছরের শুরু থেকে একের পর এক আন্তর্জাতিক মঞ্চে জয়রথ ছুটিয়ে চলেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
১৩ ঘণ্টা আগেছোটবেলায় ঘরের দেয়াল ছিল তাঁর ক্যানভাস, রংতুলি ছিল ভাব প্রকাশের মাধ্যম। আজ সেই শিল্পীর অপেক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সব বৃত্তি মিলিয়ে তিনি প্রস্তাব পেয়েছেন প্রায় ৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার বৃত্তির প্রস্তাব—বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৬ কোটি টাকা।
১৩ ঘণ্টা আগেশুধু সনদ বা শ্রেণিকক্ষেই সীমাবদ্ধ নয়; জ্ঞানচর্চার পরিধি ছড়িয়ে পড়েছে গবেষণার ক্ষেত্রেও। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিএটি) আয়োজন করা হয়েছে গবেষণা উৎকর্ষ সম্মাননা অনুষ্ঠান ২০২৫।
১৩ ঘণ্টা আগে