Ajker Patrika

দ্য সাইকোলজি অব মানির ৬ শিক্ষা

এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮: ৪৯
দ্য সাইকোলজি অব মানির ৬ শিক্ষা

বিশিষ্ট লেখক মর্গ্যান হাউসেলের লেখা ‘দ্য সাইকোলজি অব মানি’ বইটি বিশ্বের ৫০টির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। টাকা মানুষের জীবন ও জগৎকে কীভাবে পাল্টে দিতে পারে, এ বইয়ে লেখক সে বিষয়ে নানা মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। বইটি পড়ে শিক্ষাগুলো লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

ভাগ্য বনাম ঝুঁকি
ভাগ্য এবং ঝুঁকি হলো পরস্পর ভাই-বোনের মতো। বলা হয়ে থাকে, ভাগ্য হলো আজব কারিগর। কাজের সঙ্গে ভাগ্যেও বিশ্বাস করতে হবে। আর্থিক উন্নতির জন্য দক্ষতা ও কঠোর পরিশ্রম জরুরি। এ জন্য ঝুঁকি নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এর সঙ্গে ভাগ্য যে বড় ভূমিকা রাখে, সে ব্যাপারে বিশ্বাস রাখতে হবে। আমাদের সব কাজের ফল আসবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। সফল হলে আমরা আমাদের দক্ষতাকে কৃতিত্ব দিই এবং ব্যর্থ হলে দুর্ভাগ্যকে দায়ী করি। বাস্তবতা হলো, ব্যক্তিগতভাবে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্যদের তুলনায় বেশি ভাগ্যবান।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
অনেক মানুষের স্বপ্নের চেয়ে বেশি সম্পদ থাকা সত্ত্বেও তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। আরও সম্পদ না থাকায় হা-হুতাশ করে। আমরা যদি পর্যাপ্ত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও আরও চাই, আরও চাই করতে থাকি; তাহলে আমাদের কখনো যথেষ্ট সম্পদ হবে না। বেশি পাওয়া আমাদের সন্তুষ্ট করবে না, বরং বেশি পাওয়ার লোভ সবকিছু হারানোর ফাঁদে ফেলে দিতে পারে। আপনার যা আছে বা যা আপনার নেই, তার জন্য নিরর্থক ঝুঁকি নেওয়ার কোনো কারণ নেই।

কোনো কিছুই বিনা মূল্যে নয়
পৃথিবীর সবকিছুর মূল্য আছে। তবে সবকিছুর মূল্য গায়ে লেখা থাকে না। মূল্য একটা আর্থিক সংখ্যা হলেও সেটির বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন না করার আগপর্যন্ত আমরা তার প্রকৃত মূল্য বুঝতে পারি না। পৃথিবীর কোনো কিছু বিনা মূল্যের নয়। এই বাস্তব সত্য মনে থাকলে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে। কথায় আছে—লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। লোভ আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং অত্যধিক ঝুঁকির দিকে পরিচালিত করতে পারে। তাই ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বস্তুর চেয়ে নিজেকে দামি করুন
শুনলে অবাক হবেন, আপনাকে আসলে কেউ কেয়ার করে না। আপনার একটা দামি ও সুন্দর গাড়ি থাকলে সবাই আপনার গাড়ির দিকে তাকাবে, গাড়ির প্রশংসা করবে; কিন্তু কেউ মনে করবে না আপনি গাড়ির মতো দামি ও সুন্দর। এটা বস্তুগত সব জিনিসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাই কাউকে দেখানোর জন্য, মানুষকে ইমপ্রেস করার জন্য বস্তুগত জিনিস দামি করার চেয়ে নিজেকে দামি হিসেবে তৈরি করা বেশি জরুরি।

টাকা কাজে লাগান
টাকা শুধু সঞ্চয় করলেই আর্থিকভাবে সফল হওয়া যাবে না, বরং বিনিয়োগ করে টাকা বাড়াতে হবে। যত তাড়াতাড়ি এবং অল্প বয়সে বিনিয়োগ করতে পারবেন, ততই আপনি সম্পদশালী হবেন। টাকা সঞ্চয় করে ফেলে রাখলে সম্পদশালী হতে পারবেন না, বরং মুদ্রাস্ফীতির কারণে টাকার মান কমে যাবে। তাই পরিকল্পনা অনুযায়ী এমন সেক্টরে বিনিয়োগ করতে হবে, যাতে টাকা বৃদ্ধি পায়।

স্বাধীন হোন
আপনার সময় নিয়ন্ত্রণ করাই হলো সর্বোচ্চ লভ্যাংশ প্রদানকারী অর্থ। সম্পদের সর্বোচ্চ পর্যায় হলো জেগে ওঠা এবং বলার ক্ষমতা যে ‘আমি আজ যা চাই তা-ই করতে পারি’। মানুষ সুখ বাড়ানোর জন্য ধনী হতে চায়। সুখ একটি জটিল বিষয়। কারণ, আমরা সবাই আলাদা। তাই সুখের জন্য সর্বজনীন অবদান হলো সময় নিয়ন্ত্রণ। স্বাধীনভাবে পছন্দের কাজটি করতে পারাই হলো সফলতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইইউবিতে ১০ম সিজেন কনফারেন্স ২০২৫ অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন (এমএমসি) বিভাগ আয়োজিত ‘১০ম কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম এডুকেটরস নেটওয়ার্ক (সিজেন) কনফারেন্স ২০২৫’ ২৪ ও ২৫ অক্টোবর এআইইউবি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিডব্লিউ একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যম পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘মিডিয়া ট্রান্সফর্মড: বাংলাদেশ অ্যাট এ ক্রসরোড’।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. হাসানুল এ. হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিডব্লিউ একাডেমির প্রজেক্ট ম্যানেজার মিস জিমি আমির। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এআইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড. কারমেন জিটা লামাগনা, এআইইউবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম, প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আব্দুর রহমান, ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের (এফএএসএস) ডিন প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম, এমএমসি বিভাগের উপদেষ্টা ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গণমাধ্যম পেশাজীবীরা।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন এমএমসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মিস রানি এলেন ভি রামোস। দুই দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন, প্যানেল আলোচনা এবং একাডেমিক পেপার সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে ২৪ অক্টোবর কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৫-এর ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর গড় পাসের হার ৬২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাবিবুল্যাহ মাহামুদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষ মিলিয়ে মোট ৩৮ হাজার ৩৪২ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৩১ হাজার ৪২১ জন শিক্ষার্থী। আর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন ১৬ হাজার ৭৮৩ জন, যার মধ্যে ১০ হাজার ৪৬৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ হাজার ৬৪০ জন ছাত্র ও ৪ হাজার ৮২৩ জন ছাত্রী। পরীক্ষার ফল বাউবির ওয়েবসাইট (result.bou.ac.bd) থেকে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বের ৫০ তরুণের একজন আমিমুল

আব্দুর রাজ্জাক খান
বিশ্বের ৫০ তরুণের একজন আমিমুল

বিশ্বের নানা প্রান্তের তরুণেরা যখন পরিবর্তনের স্বপ্নে ভবিষ্যৎ গড়ছেন, তখন সেই স্বপ্নবাজদের সারিতে বাংলাদেশের তরুণ আমিমুল এহসান খান যোগ করেছেন এক অনন্য অধ্যায়। সম্প্রতি তিনি নির্বাচিত হয়েছেন ‘গ্লোবাল চেঞ্জমেকার ২০২৫’ হিসেবে। বিশ্বের ৫০ জন তরুণের মধ্য থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন করেছেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট ২০২৫-এ অংশ নেন আমিমুল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৫০ তরুণ নেতাকে নিয়ে আয়োজিত এই সামিটে আলোচনা হয় নেতৃত্ব, টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক পরিবর্তন ও বৈশ্বিক সহযোগিতা নিয়ে। এই সম্মেলন ছিল ফুল ফান্ডেড। সামিটে অংশগ্রহণ করা তরুণদের সব ব্যয় বহন করেছে আয়োজক সংস্থা।

টোকিও থেকে বিশ্বমঞ্চে

আমিমুলের উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে জাপানের টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পেয়েছেন ৮০ শতাংশ স্কলারশিপ, পাশাপাশি জাপান সরকারের এক বছরের বৃত্তিও পেয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ নামের একটি বৈশ্বিক তরুণ নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট লিড হিসেবে। পাশাপাশি জাপানের এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্কে তিনি মার্কেটিং ম্যানেজার পদেও কর্মরত।

পরিবর্তনের পথে নেতৃত্ব

নিজের যাত্রা নিয়ে আমিমুল বলেন, ‘আমি এই সুযোগ পেয়েছি যুব ক্ষমতায়নমূলক কাজের জন্য, যা আমি অ্যাওয়ারনেস ৩৬০-এর সঙ্গে করে আসছি। আমি একা পৃথিবী বদলাতে পারব না জানি, তাই আমি অন্যদের অনুপ্রাণিত করছি, যাতে তারাও পরিবর্তনের পথে এগিয়ে আসে।’

39f00df0-২

তাঁর নেতৃত্বে প্রতিবছর আয়োজিত হয় অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ ফেলোশিপ প্রোগ্রাম। যেখানে তরুণদের শেখানো হয় নেতৃত্ব, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ও সামাজিক প্রভাব তৈরির দক্ষতা। পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছর এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন বিশ্বের ৭০টির বেশি দেশের প্রায় ৫০০ তরুণ।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি

যুবসমাজের জন্য নিরলস পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২২ সালে আমিমুল পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘দ্য ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড’। এটি ছিল তরুণ নেতৃত্ব এবং সামাজিক প্রভাব তৈরির অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।

অনুপ্রেরণার বার্তা

দক্ষিণ আফ্রিকার সামিটে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও দৃঢ় করেছে। তিনি বলেন, ‘এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে বুঝেছি, পৃথিবীর প্রত্যেক তরুণই পরিবর্তনের বাহক হতে পারে। আমাদের চিন্তা, কাজ আর সহযোগিতার মাধ্যমে গড়ে উঠতে পারে এক সুন্দর, টেকসই ভবিষ্যৎ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাইবার সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশে আরাফাত চৌধুরী

নওসাদ আল সাইম
আরাফাত চৌধুরী।
আরাফাত চৌধুরী।

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে সাইবার অপরাধের ঝুঁকি। ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, ভুয়া আইডি থেকে অপপ্রচার, অনলাইন প্রতারণা কিংবা ডিপফেক ভিডিও—সবকিছু মিলিয়ে এখন সাইবার অপরাধ এক বড় সামাজিক সংকটে পরিণত হয়েছে।

সাইবার এইড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ডিপফেক ও এআইনির্ভর অপরাধের হার এখন ২৩ শতাংশের বেশি। সোশ্যাল মিডিয়া হ্যাকিং ২১ শতাংশ, ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে অপপ্রচার ১৫ শতাংশ, ই-কমার্স প্রতারণা ১৫ শতাংশ এবং অনলাইন হুমকি ১১ শতাংশ। ভুক্তভোগীদের প্রায় ৭৯ শতাংশের বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে, তাঁদের ৫৯ শতাংশই নারী।

অধিকাংশ ভুক্তভোগী জানেন না, কোথায় অভিযোগ করতে হবে। জরিপে দেখা গেছে, ৪২ শতাংশ অভিযোগ দাখিলের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অজ্ঞ এবং যাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের মাত্র ১২ শতাংশ আইনি প্রতিকার পান। ফলে সচেতনতার অভাব ও আইনি কাঠামোর সীমাবদ্ধতায় সাইবার নিরাপত্তা এখন দেশের বড় এক চ্যালেঞ্জ।

এই বাস্তবতায় এগিয়ে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী। ২০২২ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘সাইবার এইড বাংলাদেশ’, যা সাইবার অপরাধের শিকার মানুষের আইনি সহায়তা এবং মানসিক সাপোর্ট দেয়। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে সংগঠনটি দেশে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে।

আরাফাত বলেন, ‘সাইবার অপরাধ শুধু মানসিক যন্ত্রণা নয়, সামাজিক মর্যাদাহানির কারণও। কিন্তু বেশির ভাগ ভুক্তভোগী ভয় বা লজ্জায় মুখ খুলতে চান না।’ সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ১ হাজার ৭৬১ জন এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রায়

৪ হাজার মানুষ সাইবার এইডের সহায়তা পেয়েছেন। সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে ৭৬ শতাংশই নারী। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে ব্ল্যাকমেল ও ই-কমার্স প্রতারণা-সংক্রান্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সুমনা বলেন, ‘একজন আমার ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেল করতে থাকে। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। তখন সাইবার এইডে যোগাযোগ করি। শুধু আইনি সহায়তাই নয়; মানসিকভাবেও তারা পাশে দাঁড়ায়।’

অন্যদিকে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘অনলাইনে একটি পেজ থেকে আইফোন কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছিলাম। সাইবার এইডের সহায়তায় পুলিশে অভিযোগ করতে পারি। এখন অন্তত জানি, প্রতারণার শিকার হলে চুপ করে না থেকে লড়াই করা যায়।’

শুধু আইনি সহায়তা নয়, সচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ করছে সংগঠনটি। এ পর্যন্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইবার সচেতনতা ক্যাম্পেইন এবং বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৫৬টির বেশি সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে তারা। অনলাইনে ‘বেসিক সাইবার লিটারেসি’, ‘সাইবার স্পেস সিকিউরিটি’ ও ‘ডিজিটাল ফরেনসিক’ কোর্স চালু করেছে। ভবিষ্যতে চালু হবে একটি মোবাইল অ্যাপ, যেখানে থাকবে লাইভ চ্যাট সাপোর্ট, এআইনির্ভর নিরাপত্তা নির্দেশনা এবং দ্রুত অভিযোগ দাখিলের সুবিধা।

ভুক্তভোগীরা হটলাইন, ফেসবুক পেজ বা গ্রুপের মাধ্যমে অভিযোগ করলে সাইবার এইড বাংলাদেশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন ও সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।

সাইবার অপরাধ বাড়ার পেছনে আরাফাত দুটি বড় কারণ দেখছেন। সেগুলো হলো সচেতনতার অভাব এবং আইনগত সীমাবদ্ধতা। তাঁর মতে, বেশির ভাগ সাইবার অপরাধ জামিনযোগ্য হওয়ায় অপরাধীদের ভয় কম। আবার ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতায়ও ঘাটতি রয়েছে।

আরাফাতের বিশ্বাস, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সাইবার ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই প্রয়োজন আগাম প্রস্তুতি ও সচেতনতা। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা চাই তরুণেরা শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী নয়, বরং প্রযুক্তির নিরাপত্তা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুক।’

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল বলেন, সাইবার এইড বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে সাইবার ক্রাইম ভিকটিমদের আইনি সহযোগিতা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি সাইবার‌ ক্রাইম প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। সাইবার ক্রাইম ভুক্তভোগীদের আইনি সহযোগিতা প্রদানে এটি অনন্য ও কার্যকরী উদ্যোগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত