হাবীবুল্লাহ মাছরুর
১৫ জুলাই, ২০২৪, সন্ধ্যায় হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করতে গিয়ে দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের বর্বর হামলা চালিয়েছে। মনে হলো, এত দিন কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসে অংশ নিয়েছি যেসব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে, আর এখন সেসব শিক্ষার্থীরাই নির্যাতিত; তাদের পাশে দাঁড়ানোই হবে সত্যিকারের অ্যাকটিভিটি।
এই উপলব্ধি থেকেই উত্তরার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সিদ্ধান্ত হয়, আশুলিয়া ও তুরাগ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ধৌউর বেড়িবাঁধ মোড়ে অবস্থান নেব। ১৬ জুলাই, ছাত্রলীগের উপস্থিতি এড়াতে আমরা রুস্তমপুর থেকে নৌকা পেরিয়ে বেড়িবাঁধ হয়ে সেখানে পৌঁছাই। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজেরসহ অনেক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
১৭ জুলাই রাতে অনলাইন মিটিংয়ে উত্তরা বিএনএস এলাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে পরিকল্পনা অনুযায়ী উত্তরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা জমজম টাওয়ারে জড়ো হয়ে বিএনএসের দিকে রওনা দেয়।
১৮ জুলাই সকাল থেকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ফোনে যোগাযোগ করে ছাত্ররা নির্ধারিত স্থানে পৌঁছায়। সড়কে পুলিশি বাধা এড়িয়ে গলিপথে মিছিল চলে, একপর্যায়ে ছাত্র-জনতা বিএনএস এরিয়া দখলে নেয়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পেছনে গুলি, সামনে কাঁদানে গ্যাস। হঠাৎ পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ছোঁড়া বুলেট এসে আমার শরীরে লাগে। কয়েকজনের সহযোগিতায় আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ৭ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকি।
১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর ফের সংঘর্ষ হয়, সরকারদলীয় বাহিনীও গুলি চালায়। আমাকে নিরাপদে সেক্টরের বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ৩০ জুলাই পর্যন্ত একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকি। ইন্টারনেট না থাকায় রেডিও ও পত্রিকার মাধ্যমে খবর পেতাম।
১ আগস্ট ইন্টারনেট সীমিতভাবে চালু হলে যোগাযোগ পুনরায় শুরু হয়।
২ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিমের সদস্যদের সঙ্গে মিটিং করি পরের দিনের আন্দোলনের প্রস্তুতির নিয়ে।
৩ আগস্ট ২০২৪, পরিকল্পনা অনুযায়ী উত্তরা এলাকায় পৌঁছানো গেলেও নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে জমায়েত সম্ভব হয়নি। তাই অধিকাংশ টিম শহীদ মিনারে গিয়ে যোগ দেয়। রাতেই বড় পরিসরের মিটিং হয়, যেখানে ১৮ জুলাইয়ের পর প্রথমবারের মতো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি একত্রিত হন।
৪ আগস্ট তুরাগ, টঙ্গী, এয়ারপোর্ট ও সেক্টরের বিভিন্ন দিক থেকে শিক্ষার্থীরা এসে জমায়েত হয় বিএনএসে। রাতে সিদ্ধান্ত হয় ঢাকামুখী লং মার্চের।
৫ আগস্ট সকাল থেকে উত্তরা হাইস্কুলের সামনে ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকে। সেনাবাহিনীর অস্ত্র তাক করে থাকা, কাঁটাতার ও গুলির মধ্যেও আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাই। শিক্ষার্থীদের তিন ভাগ করি—মেয়েরা, ছেলেরা, সাধারণ জনতা। সেনাসদস্যরা বাধা না দিয়ে সরে গেলে মিছিল শাহবাগ, গণভবন, সংসদ ভবন পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
লেখক: কেন্দ্রীয় সংগঠক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন; সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
১৫ জুলাই, ২০২৪, সন্ধ্যায় হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করতে গিয়ে দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের বর্বর হামলা চালিয়েছে। মনে হলো, এত দিন কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসে অংশ নিয়েছি যেসব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে, আর এখন সেসব শিক্ষার্থীরাই নির্যাতিত; তাদের পাশে দাঁড়ানোই হবে সত্যিকারের অ্যাকটিভিটি।
এই উপলব্ধি থেকেই উত্তরার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সিদ্ধান্ত হয়, আশুলিয়া ও তুরাগ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ধৌউর বেড়িবাঁধ মোড়ে অবস্থান নেব। ১৬ জুলাই, ছাত্রলীগের উপস্থিতি এড়াতে আমরা রুস্তমপুর থেকে নৌকা পেরিয়ে বেড়িবাঁধ হয়ে সেখানে পৌঁছাই। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজেরসহ অনেক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
১৭ জুলাই রাতে অনলাইন মিটিংয়ে উত্তরা বিএনএস এলাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে পরিকল্পনা অনুযায়ী উত্তরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা জমজম টাওয়ারে জড়ো হয়ে বিএনএসের দিকে রওনা দেয়।
১৮ জুলাই সকাল থেকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ফোনে যোগাযোগ করে ছাত্ররা নির্ধারিত স্থানে পৌঁছায়। সড়কে পুলিশি বাধা এড়িয়ে গলিপথে মিছিল চলে, একপর্যায়ে ছাত্র-জনতা বিএনএস এরিয়া দখলে নেয়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পেছনে গুলি, সামনে কাঁদানে গ্যাস। হঠাৎ পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ছোঁড়া বুলেট এসে আমার শরীরে লাগে। কয়েকজনের সহযোগিতায় আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ৭ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকি।
১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর ফের সংঘর্ষ হয়, সরকারদলীয় বাহিনীও গুলি চালায়। আমাকে নিরাপদে সেক্টরের বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ৩০ জুলাই পর্যন্ত একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকি। ইন্টারনেট না থাকায় রেডিও ও পত্রিকার মাধ্যমে খবর পেতাম।
১ আগস্ট ইন্টারনেট সীমিতভাবে চালু হলে যোগাযোগ পুনরায় শুরু হয়।
২ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিমের সদস্যদের সঙ্গে মিটিং করি পরের দিনের আন্দোলনের প্রস্তুতির নিয়ে।
৩ আগস্ট ২০২৪, পরিকল্পনা অনুযায়ী উত্তরা এলাকায় পৌঁছানো গেলেও নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে জমায়েত সম্ভব হয়নি। তাই অধিকাংশ টিম শহীদ মিনারে গিয়ে যোগ দেয়। রাতেই বড় পরিসরের মিটিং হয়, যেখানে ১৮ জুলাইয়ের পর প্রথমবারের মতো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি একত্রিত হন।
৪ আগস্ট তুরাগ, টঙ্গী, এয়ারপোর্ট ও সেক্টরের বিভিন্ন দিক থেকে শিক্ষার্থীরা এসে জমায়েত হয় বিএনএসে। রাতে সিদ্ধান্ত হয় ঢাকামুখী লং মার্চের।
৫ আগস্ট সকাল থেকে উত্তরা হাইস্কুলের সামনে ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকে। সেনাবাহিনীর অস্ত্র তাক করে থাকা, কাঁটাতার ও গুলির মধ্যেও আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাই। শিক্ষার্থীদের তিন ভাগ করি—মেয়েরা, ছেলেরা, সাধারণ জনতা। সেনাসদস্যরা বাধা না দিয়ে সরে গেলে মিছিল শাহবাগ, গণভবন, সংসদ ভবন পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
লেখক: কেন্দ্রীয় সংগঠক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন; সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
ছাত্ররাজনীতি থেকে মুক্ত হলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরাবরই রাজনীতিসচেতন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়ে ওঠে দক্ষিণবঙ্গের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু।
২৬ মিনিট আগে২০২৪ সালের জুলাইয়ের শুরুতে কোটা আন্দোলন আমাদের কাছে ছিল শুধুই টিভি স্ক্রিন আর সোশ্যাল মিডিয়ার ফিডের দৃশ্য। কিন্তু ১০ জুলাইয়ের পর রামপুরা-বাড্ডা এলাকায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল পরিবেশ; ছোট ছোট অবরোধ, স্লোগান আর পোস্টারে শহর যেন বদলে যেতে লাগল। ১৪ জুলাইয়ের পর তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের বেফাঁস মন্তব্য আগুনে
৪ ঘণ্টা আগে২০১৮ সালে বাতিল হওয়া কোটা পদ্ধতি পূর্ণরূপে পুনর্বহাল হলে সারা দেশের মতো বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ২০২৪ সালের ৫ জুন আন্দোলনে সক্রিয় হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রতিবাদ হয় ৩০ জুন। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন, ইংরেজি বিভাগের...
৯ ঘণ্টা আগেরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসে বারবার রেখেছে সাহসিকতার স্বাক্ষর। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানেও এই উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রেখেছে ব্যতিক্রমী ভূমিকা।
৯ ঘণ্টা আগে