Ajker Patrika

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২১, ১১: ৪৩
Thumbnail image

করোনায় দীর্ঘ ১৬ মাস ধরে বন্ধ আছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসএসসি-এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষাগুলোও আটকে আছে। সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে বলা হলেও দেশে বর্তমানে টিকার সংকট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলেও অনেক শিক্ষার্থী পরিচয়পত্র না থাকা, সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন জটিলতা ইত্যাদি কারণে টিকা নিতে পারছেন না। আবার অনেক শিক্ষার্থী টিকার জন্য আবেদনই করেননি।

গতকাল সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘের দুই সংস্থা ইউনিসেফ ও ইউনেসকো যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়, বিশ্বের ১৯টি দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধের ফলে ১৫ কোটি ৬০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; যা আর চলতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হলেও বার ও রেস্তোরাঁ ঠিকই খোলা ছিল ও আছে।

ইউনিসেফ ও ইউনেসকো এ কথা বললেও এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো বাস্তবতা দেশে নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলে ভাবা যেতে পারে।

যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, টিকা দিয়ে স্কুল খুলে দেওয়ার বিষয়ে বলা হয়, স্কুলগুলো পুনরায় খোলার ক্ষেত্রে সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যায় না। স্কুলে ঢোকার আগে টিকাদান বাধ্যতামূলক না করাসহ সব স্কুলের উচিত যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা। করোনার সংক্রমণ শূন্যের কোঠায় নেমে আসার অপেক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি ঝুলে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছে দুই সংস্থা।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে যে এত দীর্ঘ সময় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে—এর কোনো গ্রহণযোগ্য ভিত্তি নেই। যখন আমাদের দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছিল. এমনকি সংক্রমণের হার যখন ৫ শতাংশে চলে এসেছিল, তখনই আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারতাম। কেন খুলে দেওয়া হয়নি, সে উত্তর কর্তৃপক্ষ জানে। আমি মনে করি সংক্রমণ যখন ৭ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল, তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত ছিল। আবার এখনকার মতো পরিস্থিতি এলে বন্ধ রাখা যেত। কিন্তু একনাগাড়ে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার যুক্তি নেই।’

তবে বাংলাদেশে এখন যে অবস্থা, সে অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত হবে না; বরং সারা দেশকে বিধিনিষেধের আওতায় এনে সংক্রমণ যখন ৭-৮ শতাংশে চলে আসবে, তখনই খোলার কথা ভাবা উচিত বলে ডা. লেনিন জানান।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন জানান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় আছে। যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন বোর্ডের অধীনে, সুতরাং এক জায়গায় সংক্রমণ কমে গেলে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে অন্য জায়গায় বন্ধ থাকলে বৈষম্য বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এখনো ঠিকমতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেনি। তারা অনলাইনে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে করোনার এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ঠিক হবে না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত