Ajker Patrika

হাঙ্গেরিতে বৃত্তিসহ উচ্চশিক্ষার হাতছানি পর্ব-২

সৈয়দ আকিব হোসেন
হাঙ্গেরিতে বৃত্তিসহ উচ্চশিক্ষার হাতছানি পর্ব-২

হাঙ্গেরিতে যাঁরা উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের জন্য সহায়িকার দুই পর্বের আয়োজনে পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন সৈয়দ আকিব হোসেন, মলিকুলার বায়োলজি এমএসসি, ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিন, ইউনিভার্সিটি অব ডেবরেসেন, হাঙ্গেরি। 

আবেদনের প্রক্রিয়া
স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়ায় অনেকগুলো ধাপ আছে। Tempus Public Foundation ছাড়াও প্রতিটি দেশ থেকে একটা অফিশিয়াল সেন্ডিং পার্টনার আছে এই স্কলারশিপের জন্য। বাংলাদেশ থেকে সেন্ডিং পার্টনার হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। তাই এই স্কলারশিপের সফল আবেদনের জন্য আলাদাভাবে আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং দুটো অথোরিটিরই আবেদনের যোগ্যতা পূর্ণ করতে হবে।  

সর্বোচ্চ দুটি প্রোগ্রাম 
প্রথমে স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে সর্বোচ্চ দুটি প্রোগ্রামে আবেদন করতে হবে। শুধু ব্যাচেলর অথবা মাস্টার্স অথবা পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করা যাবে। আবেদনের লিংক https://apply.stipendiumhungaricum.hu তারপর বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনলাইন আবেদনের পাশাপাশি যাবতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মার্কশিট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাগজপত্রের হার্ড কপিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সার্কুলারের জন্য http://www.shed.gov.bd/site/view/scholarship/Scholarship-Notification ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে এবং আবেদনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। 
সর্বশেষ অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করার পর আবেদনের কপিসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত ঠিকানায় জমা দিতে হবে। 

বাছাই-প্রক্রিয়া 
এই স্কলারশিপের বাছাই-প্রক্রিয়া কয়েকটা ধাপে হয়ে থাকে। প্রথম ধাপে অ্যাপ্লিকেশনের টেকনিক্যাল চেক করা হয় এবং সেন্ডিং পার্টনার কর্তৃক প্রথম বাছাই-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে বাছাই-প্রক্রিয়ায় নাম এলে দ্বিতীয় ধাপে ইউনিভার্সিটি থেকে বাছাই পরীক্ষা অথবা ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপেও সফলভাবে উত্তীর্ণ হলে তৃতীয় ধাপে সর্বশেষ এবং ফাইনাল সিলেকশন করা হয় টেম্পাস পাবলিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক এবং এ ধাপে উত্তীর্ণ হলে একজন সফল স্কলারশিপধারী হিসেবে গণ্য করা হয়। 

আবেদনের জন্য যা যা লাগবে: 
১। পাসপোর্ট
২। সব ধরনের একাডেমিক সার্টিফিকেট এবং নম্বরপত্র
৩। জন্মনিবন্ধন অথবা এনআইডি
৪। রিকমেন্ডেশন লেটার
৫। মোটিভেশন লেটার
৬। সিভি
৭। মেডিকেল সার্টিফিকেট
৮। এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
৯। আইইএলটিএস স্কোর (ভার্সিটির রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী) 
১০। পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট (শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আবেদনপত্রে এটা বাধ্যতামূলক)।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ
বিদেশে উচ্চশিক্ষার আবেদন আর ভর্তির প্রক্রিয়াটি অনেক সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য, কিন্তু প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এগিয়ে গেলে আর লেগে থাকলেই সফলতা অর্জন করাটা শুধু সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়ায়। নিজেকে বিশ্বের দরবারে আরও দক্ষ করে তোলার স্বপ্ন এবং প্রবল ইচ্ছাই একজন জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থীকে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় সফলতা অর্জন করার সুযোগ করে দেয়।

প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নিয়ে রাখতে হবে 
যাঁরা ভবিষ্যতে বিদেশে উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণা করতে চান তাঁদের শিক্ষাজীবনের চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যেই নিজেদের আবেদনের জন্য যোগ্য করে তুলতে হবে এবং আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে রাখতে হবে; যা তাঁদের আবেদন-প্রক্রিয়া এবং ভর্তি হওয়ার সময়কালটাকে সহজ করে দেবে। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, বৃত্তি ও ফান্ডিং পাওয়ার সম্ভাবনাগুলো সম্পর্কে খুব সহজেই জানা যায় এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করে ফেলা যায়। এই সুযোগ কাজে লাগানোর মধ্যেই সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে। পরিশেষে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় স্বপ্নদ্রষ্টাদের জন্য রইল আমার শুভকামনা।

অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত