Ajker Patrika

শিক্ষকদের মৌলিক প্রশিক্ষণে চালু হচ্ছে ডিপিএড, জানুয়ারি থেকে ১২ পিটিআইতে পাইলটিং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শিক্ষকদের মৌলিক প্রশিক্ষণে চালু হচ্ছে ডিপিএড, জানুয়ারি থেকে ১২ পিটিআইতে পাইলটিং

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) পরিচালনায় শিক্ষকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম হিসেবে চালু হচ্ছে ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)। ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে দেশের ১২টি প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-পিটিআইতে এই কোর্সের পাইলটিং শুরু হবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেপের মহাপরিচালক ফরিদ আহ্‌মদ নতুন এ কোর্সের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, যশোর, কুমিল্লা, জয়দেবপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া পিটিআইতে জানুয়ারি মাস থেকে ডিপিএড প্রোগ্রাম পাইলটিং ভিত্তিতে চালু হবে বলে তুলে ধরে নেপের মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রোগ্রামটির মেয়াদ হবে ১০ মাস। প্রোগ্রামটি অনাবাসিক এবং বৈকালিক।’

বাংলাদেশের যেকোনো স্থায়ী নাগরিক এই প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদন করার সুযোগ পাবেন।

ফরিদ আহ্‌মদ বলেন, কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএসহ (৪ স্কেলে ন্যূনতম ২.২৫ এবং ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২.৮) স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারবেন; তবে শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য নয়। নির্ধারিত ফি পরিশোধ সাপেক্ষে আগ্রহী প্রার্থীরা কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

তিনি আরও জানান, আবেদনকারীকে নেপের ডিপিএড বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত আসনে ভর্তির জন্য বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে ৫০ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্নের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। সময় হবে ৫০ মিনিট। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ভর্তির শর্ত পূরণ করে পিটিআইভিত্তিক মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভর্তি হবেন।

ডিপিএড প্রোগ্রামটিতে মোট ১২০০ নম্বরের মূল্যায়ন হবে বলে তুলে ধরে নেপের ডিজি বলেন, প্রোগ্রামটির মোট ক্রেডিট ৩৫ এবং ২টি সেমিস্টারে ১০ মাসের কার্যক্রমটি পরিচালিত হবে। এই প্রোগ্রামে তাত্ত্বিক বিষয় হিসেবে শিক্ষা পরিচিতি ও শিক্ষাদর্শন, শিশুর বিকাশ ও শিখন, শিক্ষণ পদ্ধতি-কৌশল ও শ্রেণি ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাক্রম ও শিখন সামগ্রী, শিখন মূল্যায়ন ও ফলাবর্তন, ভাষা দক্ষতা উন্নয়ন—বাংলা ও ইংরেজি, গাণিতিক ও বৈজ্ঞানিক দক্ষতা উন্নয়ন, শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সামাজিক দক্ষতা উন্নয়ন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ গঠন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা ও শিল্পকলা কোর্সসমূহ এবং হাতে-কলমে অনুশীলনের জন্য সিমুলেশন, বিদ্যালয়ভিত্তিক অনুশীলন ও প্রতিফলনমূলক চর্চার ব্যবস্থা থাকবে।

নেপের ডিজি আরও বলেন, এই প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের বহুমাত্রিকভাবে সমৃদ্ধ করবে। শিক্ষাদর্শন, শিখন কৌশল ও মূল্যায়ন কাঠামো শেখার মাধ্যমে তারা আধুনিক শিক্ষক হিসেবে দক্ষ হয়ে উঠবেন। শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা উন্নত হবে, যা ভবিষ্যৎ পেশাগত জীবনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। প্রোগ্রামটি শেষে শিক্ষার্থীরা আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্বশীল শিক্ষক হিসেবে গড়ে উঠবে, যা তাদের ক্যারিয়ার উন্নয়ন ও সমাজে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তারে সহায়ক হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানাসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আপাতত কোনো বাড়তি সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই বলে তুলে ধরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নেপের মহাপরিচালক ফরিদ আহ্‌মদ বলেন, এই কোর্স করলে তিনি ইন্টারন্যাশনালি কম্পিট করতে পারবেন। এই কোর্স হবে দুই সেমিস্টারে। ফি হবে প্রতি সেমিস্টারে ৬ হাজার করে ১২ হাজার টাকা। প্রতি সেমিস্টারেই প্রশিক্ষণার্থীরা ইন্টার্ন হিসেবে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ