Ajker Patrika

১০০ গাছ রোপণের শর্তে আসামিদের মুক্তি দিলেন আদালত

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
১০০ গাছ রোপণের শর্তে আসামিদের মুক্তি দিলেন আদালত

অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর দুই আসামিকে কারাগারে না পাঠিয়ে ১০০ গাছের চারা রোপণ ও বিভিন্ন শর্তে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন আদালত। মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুহম্মদ আলী আহসানের আদালত এ রায় দেন। 

আজ সোমবার দুপুর ২টায় আদালত রায় দিয়ে উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘লঘুদণ্ডে অনেকেই কারাগারে গিয়ে আসামির সংস্পর্শে ভবিষ্যতে গুরুতর অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে। প্রবেশনের ফলে নিজেকে সংশোধন ও অপরাধ প্রবণতা থেকে বিরত থাকতে অভিযুক্তরা উৎসাহী হবে। দেশের কারাগারগুলোয় প্রায় প্রতিদিনই ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত আসামি রাখা হচ্ছে। প্রবেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লঘু শাস্তি প্রাপ্ত অপরাধীরা সমাজের মূল স্রোতোধারায় ফিরে আসবে ও কারাগারগুলো মাত্রাতিরিক্ত কয়েদি থেকে ভারমুক্ত হবে।’

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১১ মার্চ জুড়ী থানাধীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে মারামারির ঘটনা কেন্দ্র করে চন্দন কুমার দাস বাদী হয়ে কবির আহমদ, মুহিবুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা সাত থেকে আটজনকে আসামি করে মামলা করেন। সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৩২৩ ধারায় অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় প্রত্যেককে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত। অভিযুক্তদের জীবনে প্রথমবারের মতো অপরাধ বিবেচনায় ও তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গুরুতর না হওয়ায় এবং আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে প্রায় সাত বছর নিয়মিত হাজিরা দেওয়ার কারণে সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত নেন আদালত। 

আদালত তাদের কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ প্রদানকল্পে ‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অরডিন্যান্সের ১৯৬০’ অধীনে ১০০টি গাছ রোপণ, নতুন করে কোনো অপরাধে জড়িয়ে না পড়া, মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা, শান্তি রক্ষা ও সদাচরণ করা, আদালতের নির্দেশমতো হাজির হওয়া ইত্যাদি শর্তে মুক্তি দেন আদালত। এই শর্তগুলো প্রতিপালনের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রবেশন কর্মকর্তাকে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করবেন। 

প্রধান বিচারপতির নির্দেশনার আলোকে মৌলভীবাজার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে এর দৃশ্যমান প্রয়োগ শুরু হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদরুল হোসেন ইকবাল বলেন, ‘প্রথম ও লঘু অপরাধের ক্ষেত্রে প্রবেশন খুব ইতিবাচক ও প্রশংসনীয়। এর মাধ্যমে অভিযুক্ত নিজেদের সংশোধনের চমৎকার সুযোগ পাচ্ছেন।’

মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক পিপি এএসএম আজাদুর রহমান বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী কারাগারে আবদ্ধ কক্ষে নয়, মুক্ত বাতাসে পরিবার পরিজনের সান্নিধ্য পাবে, যা অভিযুক্তদের সংশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

এ ব্যাপারে পাবলিক প্রসিকিউটর রাধাপদ দেব সজল বলেন, ‘অধ্যাদেশটি অনেক পুরোনো হলেও প্রয়োগ ছিল না। এখন এর প্রয়োগের ফলে অনেক অপরাধী সংশোধনের সুযোগ পাবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত