Ajker Patrika

মোবাইল ফোনে দেওয়া হচ্ছে টোপ, ফাঁসছেন কৃষকেরা 

এইচ এম শাহনেওয়াজ, পুঠিয়া
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ৩১
মোবাইল ফোনে দেওয়া হচ্ছে টোপ, ফাঁসছেন কৃষকেরা 

রাজশাহীর পুঠিয়ায় সরকারি বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে মোবাইল ফোনে। আর সেই তালিকায় নাম তুলতে দাবি করা হচ্ছে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা। স্থানীয় চাষিদের টার্গেট করে এমনই প্রলোভন দিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। এতে অনেক চাষি বিষয়টি যাচাই না করেই প্রতারকদের দাবি পূরণ করছেন।

জানা গেছে, সরকার কৃষি খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় চাষিদের মধ্যে বিভিন্ন কৃষি উপকরণে ভর্তুকি দিচ্ছে। এর মধ্যে কম্বাইন্ড হারভেস্টর, রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার, ধান কাটা, ভুট্টা ও গম মাড়াইয়ের যন্ত্র রয়েছে। চাষিদের চাহিদা মোতাবেক তালিকা পাঠানো হয়। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন সাপেক্ষে বরাদ্দ দেওয়া  হয়। বরাদ্দকৃত কৃষি যন্ত্রপাতিগুলো তালিকাভুক্ত চাষিদের অর্ধেক দামে সরবরাহ করা হয়। 

কামাল উদ্দীন নামের একজন ভুক্তভোগী বলেন, `সরকারিভাবে ফ্রিতে আমার নামে জমি চাষ করার একটি পাওয়ার টিলার বরাদ্দ দেওয়া  হয়েছে এমন একটি ফোনকল আসে গত মাসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয় তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মচারী। যন্ত্রটি নিতে চাইলে এক ঘণ্টার মধ্যে ওই নম্বরে কল করতে বলা হয়। এক ঘণ্টা পর ওই পাওয়ার টিলার নিতে চাইলে তিনি অফিসের সবাইকে মিষ্টি খাওয়ানো বাবদ পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। ওই নম্বরে বিকাশে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া  হয়। এরপর থেকে ওই নম্বর বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিষয়টি কৃষি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমি প্রতারণার শিকার।'

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, পরিষদের একজন নারীসহ মোট পাঁচ জন সদস্য প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তারা ফ্রিতে কৃষি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পাওয়ার আশায় ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতারক চক্রের বিকাশ নম্বরে দিয়েছেন। এ রকম অনেক চাষিও প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বলেন, কিছু লোকজন আছেন যারা লোভে পড়ে প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিচ্ছেন। এমন অভিযোগ মাঝে মধ্যে অফিসে আসে। কৃষি বিভাগ তালিকা অনুযায়ী সরকারিভাবে বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি অর্ধেক মূল্যে সরবরাহ করে। তবে তার আগে ওই চাষিরা অফিসে এসে তাদের চাহিদার বিষয়টি জানান বা আবেদন করেন। এরপর সে তালিকা অনুমোদন সাপেক্ষে কৃষি যন্ত্রপাতি বরাদ্দ আসে। এ ক্ষেত্রে অফিস কারও নিকট থেকে কোনো অর্থ নেয় না।

তিনি আরও বলেন, চাষিদের কোনো যন্ত্রের প্রয়োজন হলে প্রতারক বা ঠকবাজের কথায় কর্ণপাত না করে সরাসরি যেন অফিসে যোগাযোগ করেন। এ সকল বিষয়ে সকলে যেন সতর্ক থাকেন তাই আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত