Ajker Patrika

চারঘাট তহসিলদার অফিসে ‘ঘুষ লেনদেন’, ভিডিও ভাইরাল

চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২২, ১৯: ২৫
Thumbnail image

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তার (তহসিলদার) কার্যালয়ে খাজনাসহ সেবা দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক ভিডিও ছড়িয়েছে। কার্যালয়ের ভেতরের ও বাইরের সেই সব ভিডিওতে একই ব্যক্তিকে ঘুষের টাকা নিয়ে দরকষাকষি ও টাকা নিয়ে পকেটে ঢোকাতে দেখা যায়। স্থানীয়রা তাকে তহসিলদার আব্দুস সাত্তার হিসেবে শনাক্ত করেছেন।

তহসিলদার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করলেও এর মধ্যেই হাতে পাওয়া সেই সব ভিডিও যাচাই-বাছাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। 

আব্দুস সাত্তার চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরীর কোর্ট স্টেশন এলাকায়।বদলি হয়ে এক মাস হলো তিনি এসেছেন।

প্রকাশ পাওয়া তিনটি ভিডিওর একটিতে দেখা যায়, টেবিলের সামনে টাকা হাতে নিয়ে বসে থাকা সেবাগ্রহীতাকে তিনি বলছেন—৯০০ টাকা দিলে হবে! না না হবে না, এভাবে। আশ্চর্য তো। গরিব মানুষও দিছে। আর আপনি তো মার্চেন্ট মানুষ। ৯০০ টাকা গুনে দিছেন, এটা কেমন কথা হলো! 

এ সময় কমিশনার অফিসের তদবিরে আসা আরেকটি কাজ প্রসঙ্গে তিনি আরেকজনকে বলছেন, কমিশনার অফিস থেকে ফোন কেন? এই অফিসে লোক নাই। তাহলে তো সাত দিন আটকাতে হয়। তাহলেগা বুঝবে। 

দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, তার টেবিলের সামনে বসে থাকা অপর সেবাগ্রহীতাকে ৪ হাজার টাকার সঙ্গে আরও অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দিতে বলছেন তিনি। তা না হলে তিনি খাজনার চেক না কাটার হুমকি দেন। 

তৃতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, তহসিলদার আব্দুস সাত্তার একজন সেবাগ্রহীতাকে অফিসের বাইরে নিয়ে গিয়ে একটি গাছতলায় দাঁড়িয়ে কথা বলার ফাঁকে আড়াল করে কয়েক দফায় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রাখছেন।

ওই ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দুজন পিয়ন ও একজন তহসিলদার। নিজ সিটে বসে তহসিলদার প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেন করেন। অফিসের এক পিয়ন তাতে মধ্যস্থতা করে থাকেন। মাত্র কয়েক দিন আগে যোগদান করেই অফিসকে ঘুষের আতুরঘরে পরিণত করেছেন আব্দুস সাত্তার। তিনি টাকা ছাড়া কোনো কাজই করছেন না। তার চাহিদার কানাকড়ি কম হলেও তিনি সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। ১০ টাকার খাজনাও তিনি ১০০ টাকা আদায় করেন। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তহসিলদার আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমি সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এক মাস হলো যোগদান করেছি। আমি এখানে কাউকেই সেভাবে চিনি না। আমি কারও কাছ থেকে ঘুষ নিইনি।’ 

এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ভিডিওগুলো ইতিমধ্যে পেয়েছি এবং দেখেছি। প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি তিনি আব্দুস সাত্তার। ভিডিওর সত্যতা যাচাই করে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত