Ajker Patrika

দালালের খপ্পরে দুবাইয়ে গিয়ে আটক তরুণ

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১৪: ০৫
দালালের খপ্পরে দুবাইয়ে গিয়ে আটক তরুণ

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মো. শিশির (১৯) নামে এক তরুণকে দুবাইয়ে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। লোভনীয় বেতনের চাকরির কথা বলে তাঁকে সেখানে নিয়ে যায় একটি দালাল চক্র। এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

এ ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের চর ঘোষেরপাড়া এলাকার দুবাইপ্রবাসী মো. ফজলুল হকের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের চর ঘোষেরপাড়া গ্রামের মো. ফজলুল হক দীর্ঘদিন ধরে দুবাইয়ে থাকেন। এই সুবাদে লোভনীয় বেতনের চাকরির কথা বলে দুবাইয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করেন একই ইউনিয়নের পশ্চিম ঘোষেরপাড়া এলাকার মো. আব্দুর রফিকের ছেলে মো. শিশিরকে। পরে দুবাইয়ে ভালো বেতনের চাকরি দেবেন বলে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকায টাকা নেন ফজলুল হক ও তাঁর পরিবারের লোকজন।

সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে পাঁচ মাস আগে দুবাই যান শিশির। দুবাইয়ে পৌঁছানোর পর শিশিরকে কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও তাঁকে কোনো কাজ দেননি। এদিকে শিশিরের কাছ থেকে কৌশলে পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নেন মো. ফজলুল হক। তার পরই ফজলুল হক শিশিরকে একটি রুমে রেখে বাংলাদেশে চলে এসেছেন। এরপর থেকেই শিশিরের সঙ্গে তাঁর পরিবারের লোকজনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে।

দুবাইয়ে আটকে পড়া শিশিরের মা শিউলি বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের সাথে আর কথা হয় না। কেমন আছে কিছুই বলতে পারছি না। মাসখানেক আগে ফোন দিয়ে বলেছিল, খুব কষ্টে আছে, দুই দিন পরপর একটু খাবার খায়। রুমের মধ্যে আটকে রেখেছে। তাঁর কাছ থেকে পাসপোর্ট ও কাগজপত্র নিয়ে গেছে ফজলুল। এখন আমি আর কিছুই চাই না, আমার ছেলেটারে আমি ফেরত চাই।’

স্থানীয় আইয়ুব নবী নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে শিশিরকে দুবাইয়ে নিয়ে গেছেন ফজলুল। তাঁকে কোনো কাজকর্ম না দিয়ে তাঁর কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে রুমের মধ্যে আটকে রেখেছেন।

চর ঘোষেরপাড়া এলাকার লোকজন জানান, মো. ফজলুল হক দীর্ঘদিন ধরে দুবাইয়ে থাকতেন। এক মাস ধরে দুবাই থেকে দেশে এসেছেন। তিনি হচ্ছেন দালাল, ঘোষেরপাড়া এলাকা থেকেই দুজনকে দুবাইয়ে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছেন। তা ছাড়া দেশের আরও বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন দুবাইয়ে নিয়ে গেছেন তিনি। সবার কাছে থেকেই কাগজপত্র নিয়ে রুমের মধ্যে আটকে রেখেছেন। তাঁর সঙ্গে আরও দালাল চক্র রয়েছে। এলাকায় বিভিন্ন জেলার লোকজন ফজলুল হকের বিরুদ্ধে প্রতিদিন বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ আসছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফজলুল হক সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য বাড়িতে যাওয়া হলে তিনি কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

এ নিয়ে ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা একটি মিটিং করেছিলাম। পরে আরও একটি মিটিং করা হবে। শুধু শিশির না, তার সাথে আরও কয়েকজন আটকা পড়ে রয়েছে। তাদের কীভাবে উদ্ধার করা হবে তা নিয়ে মিটিং করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ময়নুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগ হওয়ার পর পুলিশ গিয়েছিল। তাঁরা তো বৈধভাবেই গিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত