Ajker Patrika

আবাদি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়, ‘রাস্তার ভাড়া’ তুলছেন ইউপি সদস্যরা

ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ১০: ০৯
Thumbnail image

যশোরের ঝিকরগাছা থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী শার্শা উপজেলার ইটভাটায়। মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের বিকট শব্দ আর ধুলাবালুতে রাস্তার পাশে বসবাসকারীদের টেকাই দায় হয়ে পড়েছে! এতে বাধা দেওয়া তো দূরের কথা, এলাকার কয়েকজন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মাটি বহনকারী ট্রাক্টর থেকে ‘রাস্তার ভাড়া’ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 
 
উপজেলার নির্বাসখোলা ও খরুসা মাঠের বিভিন্ন খেত থেকে মাটি কেটে ট্রাক্টর ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী শার্শার ইটভাটায়। এতে করে রাস্তায় স্বাভাবিক চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়েছে। 

গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার খরুসা গ্রামের মাঠ থেকে মাটি কেটে বল্লা-উলাশী সড়ক দিয়ে ট্রাক্টর ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ৮-১০টি ট্রলিতে করে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত মাটি বহন করা হচ্ছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মাটি কাটায় জড়িত থাকায় কেউ মুখ খুলতে পারছে না। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাটি বহনকারী একটি ট্রাক্টরের চালক বলেন, ‘রাজারডুমুরিয়া গ্রামের ফারুক হোসেন ওরফে কারেন্ট ফারুক, নির্বাসখোলার সোহেল হাসান ও খরুসা গ্রামের ইউনুস আলীর নেতৃত্বে মাটি কাটা হচ্ছে। এসব মাটি শার্শা উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়।’ 

নির্বাসখোলা গ্রামের সাহাবুল হোসেন বলেন, ‘১৫ দিন ধরে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের জন্য রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না। রাস্তার পাশে বাড়িঘরে বসত করাও দায় হয়ে পড়েছে। খরুসা গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, নির্বাসখোলা ও খরুসা গ্রামের বিভিন্ন জমি থেকে ১৫ দিন ধরে মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের ধুলাবালুতে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাটি কাটা বন্ধ না হলে একদিকে আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের জন্য রাস্তায় হাঁটাও কষ্ট।’ 

খরুসা গ্রামের ইউনুস আলী বলেন, ‘যেসব জমি উঁচু, সেখান থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। আর এই মাটি রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এলাকার মেম্বারদের (ইউপি সদস্য) টাকা দেওয়া হচ্ছে।’ রাজার ডুমুরিয়া গ্রামের ফারুক হোসেন বলেন, ‘সবাইকে ম্যানেজ করে মাটি কাটা হচ্ছে। এ নিয়ে লেখালেখির দরকার নেই।’ 

টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাসখোল ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আরমান আলী বলেন, ‘জনসভায় যাওয়া জন্য কিছু টাকা নিয়েছি।’ তবে ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু তাহের টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘মাটি কাটা বন্ধের জন্য চেষ্টা করছি। যাঁরা মাটি কাটছেন, তাঁদের সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত।’ 
 
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হক বলেন, ‘এভাবে মাটি কেটে স্থানান্তরের সুযোগ নেই। আর জনভোগান্তি হয় এমন কাজ করতে দেওয়া হবে না। এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত