Ajker Patrika

ভারতে গণপিটুনির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড  

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ভারতে গণপিটুনির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড। দেশটির পার্লামেন্ট লোকসভায় এ সংক্রান্ত বিল পাস হয়েছে। গতকাল বুধবার কার্যত বিরোধীশূন্য লোকসভায় তিনটি আইনের সংশোধনী পাস হয়। এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

এই সংশোধনীগুলো হলো ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩ ’, ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ২০২৩’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য ২০২৩ ’। এর ফলে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চালু হতে চলেছে। 

ভারতে কিছুদিন ধরে গণপিটুনিতে প্রচুর মানুষ মারা গেছেন। গরুপাচারকারী বা ছেলেধরা সন্দেহে অনেক জায়গায় গণপিটুনিতে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছিল, এর বিরুদ্ধে কড়া আইন করা হবে। 

সেই সংশোধনীই আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আইন যাতে কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে না পারে, তাঁর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিলগুলো মৌখিক ভোটে পাস হয়েছে। রাজ্যসভায় পাস হওয়ার পর প্রেসিডেন্টের অনুমোদন পেলেই তা আইনে পরিণত হবে। 

ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ২০টি নতুন অপরাধ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সংগঠিত অপরাধ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, আঘাত করে পলায়ন, গণপিটুনি, প্রতারণামূলক উপায়ে নারীকে যৌন নির্যাতন, ছিনতাই, ভারতের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং একতাকে বিপন্নকারী কাজ এবং মিথ্যা বা খবর প্রকাশ। 

নতুন বিলগুলো নারী ও শিশুদের সুরক্ষা, খুনিদের শাস্তি এবং রাষ্ট্রের অনিষ্টকারীদের শাস্তিকে অগ্রাধিকার দেয়। নতুন বিলে এখন ভারতের প্রতিরক্ষা লঙ্ঘনে দেশে বা বিদেশে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে, এটি ভারতের অভ্যন্তরে সরকারি বা ব্যক্তিগত সুবিধার ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। 

সরকারকে কোনো কাজ করতে বা বিরত থাকতে বাধ্য করার জন্য কোনো ব্যক্তিকে আটক বা অপহরণ করাও সন্ত্রাসী বিধানের অন্তর্ভুক্ত হবে। 

অপরাধের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে গণপিটুনির জন্য মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত সাজা দেওয়া হতে পারে। কিশোরীকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তিও মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে। 

ট্রান্সজেন্ডারকে ‘লিঙ্গের সংজ্ঞায়’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিলে পরকীয়া ও সমকামী যৌনতাকে অপরাধ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়নি। আত্মহত্যার চেষ্টাকে আর ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে না। 

এই বিলগুলো নিয়ে আলোচনার সময় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাষ্ট্রদ্রোহ নিয়ে কথা বলেন। অমিত শাহ জানান, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিল করা হবে। এই আইনে ইংরেজরা তিলক মহারাজ, মহত্মা গান্ধী, সর্দার প্যাটেলদের বন্দি করেছিল। এখন আর ভারতে এই আইনের দরকার নেই। 

তবে শাহ জানিয়েছেন, দেশের বিরুদ্ধে কেউ কাজ করলে বর্তমান আইনেই তার বিচার হবে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ শাস্তিযোগ্যই থাকবে। 

এই দেশদ্রোহ আইনের প্রয়োগ নিয়েও সাম্প্রতিককালে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। তখন এটাও বলা হয়েছিল, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারেই এর বিচার হতে পারে। এর জন্য আলাদা দেশদ্রোহ আইনের প্রয়োজন হয় না। 

ভারতে রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত বর্তমান আইনে তিন বছর পর্যন্ত জেল বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। নতুন বিধানে সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত