Ajker Patrika

ভাই হত্যায় শিশুর স্বীকারোক্তি আদায় : সাবেক ও বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ২৯ জুন ২০২১, ১৫: ৪৯
ভাই হত্যায় শিশুর স্বীকারোক্তি আদায় : সাবেক ও বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব

ঢাকা: বারো বছরের এক শিশুর কাছ থেকে ছোট ভাইকে হত্যার স্বীকারোক্তি আদায়ের ঘটনায় ওই মামলার সাবেক ও বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩ আগস্ট মামলার নথিসহ তাঁদের সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের ভার্চুয়াচুল বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়।

‘পুলিশের ভুলে ১২ বছরের শিশুর ঘাড়ে ছোট ভাই হত্যার দায়’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে কয়েক দিন আগে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ সংযুক্ত করে হাইকোর্টে প্রতিকার চেয়ে ও ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ ২১ জুন ‘ভাইকে দিয়ে ভাই হত্যার স্বীকারোক্তি আদায়ের ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক’ বলে উল্লেখ করে। পরে আদালত ২৯ জুন পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। 

আজ অধিকতর শুনানি শেষে আদালত স্বীকারোক্তি আদায় করা বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার তৎকালীন এসআই নয়ন কুমার (বর্তমানে পুলিশ পরিদর্শক, সিআইডি, নাটোর) এবং বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনসুর আলী (পিবিআই, বগুড়া) তলব করেন। সেই মামলার তখনকার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নয়নকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করার বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আর বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে মামলার নথিসহ আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। 

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ছোট ভাইকে হত্যার দায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে ১২ বছর বয়সী বড় ভাইকে। সে বছর ২৫ আগস্ট বগুড়ার কাটাখালী গ্রামের একটি পাটখেত থেকে উদ্ধার করা হয় মহিদুল ইসলামের ছেলে সোহাগের মরদেহ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় বড় ভাইকে। জোর করে হত্যার স্বীকারোক্তিও আদায় করা হয়। এ মামলায় এখন বাড়িছাড়া পুরো পরিবার। এদিকে সন্তান হত্যা এবং আরেক সন্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতে কোথাও সহায়তা না পেয়ে দিশেহারা পরিবারটি। 

আরও জানা গেছে, মহিদুল ইসলাম তাঁর শিশুসন্তানের লাশ উদ্ধারের পর বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে দায়ের করা ওই মামলা তদন্ত করেন এসআই নয়ন। তিনি মহিদুল ইসলামের বড় ছেলে সৌরভকে (১২) বাড়ির সামনে থেকে ধরে নিয়ে যান। রাতে তাকে মারধর করে আদায় করা হয় স্বীকারোক্তি। সৌরভকে দিয়ে বলানো হয়, সে নিজেই তার ভাইকে খুন করে পাটখেতে ফেলে রেখেছে। শিশু সৌরভকে পরে কারাগারে পাঠানো হয়। একসময় তার জামিন হয়। সে সবকিছু খুলে বলে। মামলা একসময় তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা তদন্ত করে জানতে পারে, স্থানীয় বিরোধের জের ধরে একই গ্রামের তৌহিদুল ইসলাম ও বিল্লাল হোসেন শিশু সোহাগকে হত্যা করে পাটখেতে মৃতদেহ ফেলে রাখেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত